রংপুর: পৌষে মাসের কনকনে হাড়কাঁপানো শীতে উত্তরাঞ্চলের মানুষ বিপাকে পড়েছে। দু’দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই, আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা, সেইসঙ্গে তীব্র হাওয়ার দাপটে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী পরিবারগুলোর জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত, খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চলছে। নগরবাসী বলছে, এই অসহনীয় ঠান্ডা মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রংপুরের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল থেকে শহরের অলিগলি পর্যন্ত শীতের কাহিল হয়ে পড়েছে সব বয়সী মানুষ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে দৃষ্টিসীমা কমে যায় তখন সড়কের যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছে না, চলাচল সীমিত হয়ে পড়েছে। দোকানপাট এবং হাটবাজার দেরিতে খুলছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে প্রভাবিত করছে। শ্রমজীবী মানুষজন, যারা দিনমজুর বা কৃষিকাজ করে সংসার চালায়, তারা পড়েছে সবচেয়ে বেশি বিপাকে। খড়কুটো বা কাঠ জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করলেও, তীব্র হাওয়ার দাপটে তা যেন সামান্য সান্ত্বনা মাত্র।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান. সকাল ৯টা পর্যন্ত রেকর্ড করা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রংপুরে ১২.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) ১১.৬, সৈয়দপুর ১২.০, রাজারহাট ১১.৫, দিনাজপুর ১১.৫, ডিমলা (নীলফামারী) ১২.৪, ঠাকুরগাঁও ১১.৫, লালমনিরহাট ১২.০ এবং গাইবান্ধা ১১.৮ ডিগ্রি।
তিনি বলেন, রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে, যা আগামী দিনগুলোতে আরও তীব্র হতে পারে।
সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুসারে, রংপুর বিভাগে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চলছে এবং টানা ১৪ দিন পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চরাঞ্চলের বাসিন্দারা, যেমন কুড়িগ্রামের সদর, উলিপুর এবং নাগেশ্বরী উপজেলায়, আরও তীব্রভাবে অনুভব করছেন এই শীতের দাপট। ব্রহ্মপুত্র নদীর চরে বসবাসকারীদের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে ঘন কুয়াশার কারণে।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যানুসারে, এই শীতে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে। আরও ২-৩টি তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরাঞ্চলে এই শীতের ফলে কৃষি উৎপাদনও প্রভাবিত হচ্ছে, এর ফলে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
এদিকে শীতের এই প্রকোপে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। ঠান্ডাজনিত রোগ যেমন নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। শিশু এবং বয়স্করা বেশি অসুস্থ হচ্ছে। মাত্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তথ্যানুসারে, গত সপ্তাহে এমন রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও রোগীর ভীড়ভিড়