রংপুর: রংপুর বিআরটিএ অফিসে মেইন লাইনের বৈদ্যুতিক তার চুরি হওয়ায় টানা তিন দিন ধরে অফিস সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। ফলে লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস সার্টিফিকেটসহ সব ধরনের দাফতরিক সেবা অচল হয়ে পড়েছে। শহরসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা গ্রাহকদের ভোগান্তি তীব্র আকার ধারণ করেছে।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) পর্যন্ত পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন হয়নি।
সূত্র জানায়, গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) গভীর রাতে অফিসের প্রধান লাইন থেকে বৈদ্যুতিক তারের একটি বড় অংশ চুরি হয়ে যায়। রবিবার সকালে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে এসে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার বিষয়টি বুঝতে পারেন। জরুরি প্রয়োজনে ল্যাপটপ বাইরে চার্জ করে আনা হলেও গ্রাহকসেবা পুরোপুরি বন্ধ। পুরো অফিস ভবন অন্ধকারে নিমজ্জিত রয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, পীরগঞ্জ, বদরগঞ্জ, মিঠাপুকুরসহ দূর-দূরান্ত থেকে আসা বহু মানুষ লাইসেন্স, রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস সংক্রান্ত কাজে অফিসের সামনে অপেক্ষা করছেন।
পীরগঞ্জ থেকে আসা সাহাবুল ইসলাম বলেন, “৬০ কিলোমিটার দূর থেকে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন করতে এসেছি। কিন্তু এখানে এসে জানালেন, বিদ্যুৎ না থাকায় ২-৩ দিন পর আসতে হবে। এতে প্রচণ্ড ভোগান্তিতে পড়েছি।”
বদরগঞ্জের কাওছার আলী জানান, ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের অগ্রগতি জানতে এসেছিলাম। কিন্তু অফিস অন্ধকার, ফাইলও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এখন আবার কবে আসতে হবে কে জানে!
নগরীর ধাপ এলাকার মাইক্রোবাস মালিক আফজাল হোসেনের অভিযোগ, ‘ফিটনেসের টাকা জমা দিয়ে এসেছি। কিন্তু কাজ বন্ধ, বলছে বিদ্যুৎ এলে হবে। এতে আমাদের সময় আর অর্থ—দুইটাই নষ্ট হচ্ছে।’
বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক মাহবুবার রহমান জানান, শনিবার রাতে অফিস পর্যন্ত মেইন লাইনের সব তার চুরি হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎকে জানিয়েছি। তারা কাজ করছে, কিন্তু দুই দিন ধরে অফিস পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে।
রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্র জানায়, তার চুরির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মেরামতের কাজ দ্রুত করার চেষ্টা চলছে। তবে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো আপডেট না পাওয়ায় গ্রাহক ভোগান্তি কমছে না।
এদিকে, সাম্প্রতিক সময়ে রংপুর নগরীতে বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে। বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও অফিসে অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে, যা পুলিশের তদন্তেও উঠে এসেছে।
বিআরটিএ কর্মকর্তারা আশা করছেন, যদি মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ পুনরায় সচল করা যায়, তবে সেদিন থেকেই দাফতরিক সেবা ধীরে ধীরে পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে।