শেষ হলো রকমারি বেস্ট সেলার অ্যাওয়ার্ড ২০২৪
২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:২৩
বাংলাদেশে অনলাইন বই বিপণনের সবচে বড় প্রতিষ্ঠান রকমারি ডট কমের উদ্যোগে আয়োজিত ‘রকমারি বইমেলা বেস্টসেলার অ্যাওয়ার্ড-২০২৪’ অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত রকমারি থেকে সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের লেখক এবং প্রকাশকদের দেওয়া হয় এ পুরস্কার।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খামার বাড়ি রোডে অবস্থিত কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ফিকশন, নন ফিকশন, ধর্মীয় এবং ক্যারিয়ার ও একাডেমিকে চার শাখায় রকমারিতে সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া বইয়ের চারজন লেখক ও ৪টি বইয়ের প্রকাশনীকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এ চার ক্যাটাগরিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকরা হলেন যথাক্রমে ইলমা বেহরোজ, মুহাম্মদ ইলিয়াস কাঞ্চন, শায়খ আহমাদুল্লাহ ও কিউএনএ পাবলিকেশন্স লেখক পরিষদ এবং ৪টি প্রকাশনী হলো যথাক্রমে, অন্যধারা, হিয়া প্রকাশনা, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এবং কিউএনএ পাবলিকেশন। এ ছাড়া একইসঙ্গে ২১টি ক্যাটাগরির ২১ জন লেখক ও ২১টি বইকেও সম্মাননা জানানো হয় এ অনুষ্ঠানে।
এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন, একুশে পদক প্রাপ্ত সাদা মনের মানুষ, বইবন্ধু জিয়াউল হক। এছাড়া আরও ছিলেন, রকমারি ডট কমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জুবায়ের বিন আমিন, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক এহতেশামস রাকিব এবং রকমারি ডট কমের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল আনাম রনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জের বটতলা গ্রামের বইবন্ধু ও সমাজসেবক জিয়াউল হক বলেন, ‘১৯৫৫ সালে আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তাম। টাকার অভাবে আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায়। পড়ালেখা ছেড়ে বাবার দইয়ের ব্যবসা শুরু করলাম। পরে এই টাকা থেকে বই কিনলাম পড়ালেখা থেকে ঝরে যাওয়া ছেলেদের জন্য। আমি ১২ হাজার ছেলেকে শিক্ষিত করেছি। কেউ হয়েছে ডাক্তার-পুলিশ, আবার কেউ হয়েছে আনসার-শিক্ষক।’
তিনি বলেন, ‘আমার গোলায় নেই ধান। ব্যাংকে নেই টাকা। তবু পড়ালেখা করিয়ে যেতে চাই। তৈরি করতে চাই নান্দনিক জিয়াউল হক পাঠাগার।’
সমাপনী বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানে রকমারি ডট কমের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘৫৬ হাজার বর্গমাইল (সারাদেশ) বইয়ে বইয়ে সয়লাব করব। মানুষের কাছে বই পৌঁছে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলছি না বই বিক্রি করে টাকা উৎপাদন করার কথা। অন্য কিছু বিক্রি করে আরও বেশি টাকা কামানো যেতে পারে। আমি বলতে চাচ্ছি বই বিক্রির গুরুত্বের বিষয়। বই বিক্রি ছড়িয়ে দিতে চাইলে টাকার একটি বিষয় চলে আসে।’
মাহমুদুল হাসান সোহাগ আরও বলেন, ‘আমরা বইয়ের সঙ্গে টুলস (অন্য কিছু) বিক্রি করি। বইটাকে সেন্টারে রেখে এই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা চালাতে চাই। একটা সমাজ যদি জ্ঞানভিত্তিক হয়, সেই সমাজের কাছে সুন্দর কিছু আশা করতে পারি। বাংলাদেশ যে ট্রানজিশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমরা যদি আমাদের না জানি বা আমাদের উপলব্ধি বা চিন্তায় মননশীলতা না থাকে, তাহলে বিশ্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টা থমকে থাকবে। আমাদেরকে প্রত্যেকটা ডাইমেনশনে যোগ্য হতে হবে। আশা করছি আমরা সবাই মিলে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবো।’
এই অনুষ্ঠানের আয়োজন সহযোগী হিসেবে ছিলেন, ইফাদ, সেভেন ডেজ নোটস, ক্রিসপি, ফিনিস, জিও, বিজ্ঞানবক্স।
সারাবাংলা/এমপি