চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের ইতিহাসচর্চায় ড. সুনীতিভূষণ কানুনগো ছিলেন এক নীরব সাধক। ইতিহাসকে আবেগ দিয়ে নয়, কঠোর গবেষণা ও প্রামাণ্য দলিলের আলোকে উপস্থাপন করে তিনি আগামী প্রজন্মকে ঋণী করে গেছেন। ইতিহাসকে বুঝতে হলে তাকে পড়তে হবে।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত ইতিহাসবিদ প্রফেসর ড. সুনীতিভূষণ কানুনগোর স্মরণসভায় এসব কথা বলেন বক্তরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আবুল কাসেম বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাদুঘরে বহু প্রাচীন হস্তলিপি ও পাণ্ডুলিপি সংরক্ষিত থাকলেও শিক্ষার্থীরা সেগুলো পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না। এসব পাণ্ডুলিপি স্ক্যান করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা গেলে চট্টগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে বহু নতুন তথ্য মানুষের সামনে আসবে। অন্যথায় অযত্নে এসব মূল্যবান পান্ডুলিপি ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
‘সুনীতিভূষণ কানুনগোর গবেষণা গ্রন্থগুলো দেশের ইতিহাসচর্চার গুরুত্বপূর্ণ পর্বকে সমৃদ্ধ করেছে। বিশেষ করে হিস্ট্রি অব চিটাগাং গ্রন্থটি ইতিহাসের এক অমূল্য সম্পদ। তিনি চট্টগ্রাম সম্পর্কে বিপুল পরিমাণ প্রামাণ্য নথি পর্যালোচনা করে যে গবেষণা করেছেন, তা যে কোনো একজন গবেষকের পক্ষে এককভাবে সম্পন্ন করা অত্যন্ত কঠিন।’
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা ইতিহাস গবেষক ও শিক্ষা সংগঠনের লেখক মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ড. সুনীতিভূষণ কানুনগোর গবেষণা নতুন প্রজন্মের ইতিহাসচর্চায় দিকনির্দেশনা হিসেবে কাজ করবে।’
বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বিষয়ে পাঠ ও গবেষণার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা চট্টলতত্ত্ব বিভাগ থাকা জরুরি। বাংলা সাহিত্যে চট্টগ্রামের অবদান বাংলাদেশের অন্য যেকোনো জেলার তুলনায় বেশি। বাংলা একাডেমির চরিতাভিধানে অন্তর্ভুক্ত ৩৩ জন সাহিত্যিকের মধ্যে ১৫ জনই চট্টগ্রামের। একসময় চট্টগ্রাম ছিল বাংলা সাহিত্যের রাজধানী।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অর্পিতা ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য দেন ড. সুনীতিভূষণ কানুনগো স্মৃতি পরিষদের সদস্য সচিব মুস্তফা শামীম আল জুবাইর। সভাপতিত্ব করেন সুদর্শ চক্রবর্তী, যিনি অনুষ্ঠানে একটি কবিতা পাঠ করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সহকারী অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা, ড. রাতুল কুমার শীল, কালের কণ্ঠের ব্যুরো প্রধান মুস্তফা নঈম, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, অধ্যাপক নীলা রায়, আমির হোসেন খান, তুষার কান্তি দত্ত, তাপস কুমার ঘোষ, বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, ছন্দা দত্ত ও শিবাশীষ সেন গুপ্ত প্রমুখ।