Sunday 29 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এই শীতে ঘুরতে যাই চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল… (শেষ পর্ব)


২ জানুয়ারি ২০১৮ ১২:৩৭ | আপডেট: ২ জানুয়ারি ২০১৮ ১৭:০৪

চা কন্যার ভাস্কর্য

হৃদয় দেবনাথ

শ্রী আর মঙ্গলে নিহিত শ্রীমঙ্গল। প্রকৃতির অপরূপ সাজে সজ্জিত সবুজ শ্যামলের সমারোহে ভরপুর এ অঞ্চলের অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে চা। চায়ের রাজধানীখ্যাত শ্রীমঙ্গলকে দুটি পাতা একটি কুঁড়ির দেশও বলা হয়ে থাকে। দেশের অধিকাংশ চা বাগান শ্রীমঙ্গলের চারদিকে বেষ্টিত। এ অঞ্চলের লেবু ও আনারসের কদরও কম নয়। পাহাড় ও চা বাগান বেষ্টিত বৃহত্তর সিলেটের প্রায় মাঝামাঝি স্থানে অবস্থিত ছোট্ট শহর শ্রীমঙ্গল।

সড়কপথে ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে যেতে পাহাড় ও চা বাগানের বুক চিরে অাঁকাবাঁকা পথ ধরে চলে গেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। হবিগঞ্জের সীমানা পেরুনোর পরপরই আসতে থাকে শ্রীমঙ্গল তথা মৌলভীবাজার জেলা। পর্যটন নগরী হিসেবে খ্যাত শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এবং চা শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনস্বরূপ শ্রীমঙ্গলের প্রবেশদ্বারে নির্মাণ করা হয়েছে অপরূপ সাজে সজ্জিত এক ‘চা কন্যার ভাস্কর্য’।

এখানে বেড়াতে আসার পথে ভাস্কর্যটি দেখে যে কেউ মনে করবেন, তিনি চা শিল্পাঞ্চলে প্রবেশ করেছেন। শ্রীমঙ্গলসহ দেশের সব চা শ্রমিকের ভালো-মন্দ, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা সবই যেন মিলেমিশে আছে এই ভাস্কর্যটির মধ্যে। চোখ জুড়ানো মনমুগ্ধকর এই ভাস্কর্যটির সৌন্দর্য অবলোকনে প্রতিদিন হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটকের সমাগম ঘটে এখানে। এভাবেই নিভৃত অরণ্যভূমি শ্রীমঙ্গল বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। ক্রমে পর্যটকদের মনে পর্যটন অঞ্চল শ্রীমঙ্গল ও এই অঞ্চলের চা শ্রমিকদের বিষয়ে জানার আগ্রহ বেড়ে চলছে।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে হবিগঞ্জ জেলার শেষ সীমান্তে এবং মৌলভীবাজার জেলার প্রবেশদ্বারের ঠিক মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার আমতলী চা বাগান সংলগ্ন মুছাই বাজার। এখানে শ্রীমঙ্গলের প্রবেশ পথে রাস্তার বাম পাশে অবস্থিত এই ‘চা-কন্যার ভাস্কর্য’। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমীর প্রকৌশলী সঞ্জিত রায়ের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় দীর্ঘ প্রায় তিন মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফল এই চমৎকার শিল্পকর্মটি। ভাস্কর্যটির অপরূপ সৌন্দর্য আর কারুকাজে একদিকে যেমন প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে শ্রীমঙ্গলের পরিবেশ ও প্রতিচিত্রের রূপ তেমনি ফুটে উঠেছে কারুশিল্পকারের হাতের নৈপুণ্যতা। প্রায় ২৪ ফুট উঁচু এই ভাস্কর্যটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নারী চা শ্রমিকের কোমল হাতে চা পাতা চয়নের মনমুগ্ধকর এক নিপুণ প্রতিচ্ছবি।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষদিকে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পরপরই ভাস্কর্যটি শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসা দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে দারুণ এক আকর্ষণে পরিণত হয়েছে। তাই প্রতিদিন হাজারো পর্যটককে এর সৌন্দর্য উপভোগ ও এর পাদদেশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়। প্রকৃতিপ্রেমীরা যেন অনায়াসে উপভোগ করতে পারেন চা বাগান এবং চা শিল্পের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত চা জনপদের নারী চা শ্রমিকদের। সেজন্য এ বিষয়টিকে শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে এই ভাস্কর্যে।

পড়ুন বাকি পর্ব

এই শীতে ঘুরতে যাই চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গল…

ছবিঃ লেখক

লেখকঃ মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি, জিটিভি

সারাবাংলা/আরএফ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর