Wednesday 17 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশ ই-কমার্স:
জুলাই অভ্যুত্থানের ক্ষত, চ্যালেঞ্জ এবং নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা (সোহেল মৃধা)
১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৫:০২

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ইতিহাসে এক অপ্রত্যাশিত ও গভীর পটপরিবর্তন এনেছে। দেশের উদীয়মান ই-কমার্স খাত, যা বিগত এক দশকে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে এবং অর্থনৈতিক ডিজিটাল রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে—এই রাজনৈতিক পালাবদলের সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সম্পূর্ণরূপে ইন্টারনেট, লজিস্টিকস এবং ডিজিটাল পেমেন্ট নির্ভর হওয়ায়, অভ্যুত্থানকালীন দীর্ঘ অচলাবস্থা ই-কমার্স শিল্পের অন্তর্নিহিত ভঙ্গুরতা উন্মোচন করে। এই সংকট স্পষ্ট করে দেখায় যে, সুশাসন, আইনি নিরাপত্তা এবং শক্তিশালী লজিস্টিকস অবকাঠামো ছাড়া একটি ডিজিটাল অর্থনীতি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি এবং ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় ই-কমার্স খাতটি পুনরুদ্ধারের জন্য দ্বৈত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে। জুলাই অভ্যুত্থান থেকে শুরু করে বর্তমান সময় (ডিসেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত ই-কমার্স খাতের উত্থান-পতন, দীর্ঘদিনের কাঠামোগত দুর্বলতা এবং আসন্ন নির্বাচন-পরবর্তী নতুন সরকারের কাছে খাতটিকে উদ্যোক্তা-বান্ধব, সুশৃঙ্খল ও বিশ্বমানের করার জন্য প্রয়োজনীয় সুগভীর দাবি ও প্রত্যাশা নিয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ই-কমার্সের অবস্থান: জুলাই অভ্যুত্থানের ক্ষতি (জুলাই – আগস্ট ২০২৪)

জুলাই-আগস্টের অসহযোগ আন্দোলন ই-কমার্স সাপ্লাই চেইনে তীব্র আঘাত হানে।

* মার্কেট সাইজের পতন ও অর্থনৈতিক ক্ষতি: ইন্টারনেট শাটডাউন ও সড়ক অবরোধের কারণে ই-কমার্সের দৈনিক লেনদেন সেই সময় প্রায় ৮০% থেকে ৯০% পর্যন্ত হ্রাস পায়। অর্থনৈতিক তথ্যানুসারে, এই দুই মাসে ই-কমার্স খাতটিতে আনুমানিক ১,৫০০ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন ব্যাহত হয়।

* লজিস্টিকস ও পরিবহন ব্যবস্থা ভেঙে পড়া: দেশব্যাপী রাস্তা অবরোধ থাকায় পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়ে।

* আস্থা ও ক্রয়ক্ষমতার হ্রাস: অভ্যুত্থান-পরবর্তী অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি (CPI-এর হার) মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়ায় উচ্চমূল্যের পণ্যের বিক্রি হ্রাস পায়।

ই-কমার্সের অবস্থান: অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপ ও বর্তমান চ্যালেঞ্জ (সেপ্টেম্বর ২০২৪ – ডিসেম্বর ২০২৫)

ক. বর্তমান অর্থনৈতিক চিত্র ও চ্যালেঞ্জ (ডিসেম্বর ২০২৫):

বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ই-কমার্স খাত পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে, তবে চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান।

* মার্কেট সাইজ ও লেনদেন: বর্তমানে ই-কমার্স খাতের বার্ষিক মার্কেট সাইজ আনুমানিক $৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ আনুমানিক ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা। এই মার্কেটের প্রায় ৪০% থেকে ৫০% অনানুষ্ঠানিক F-Commerce-এর মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

* ব্যবহারকারী সংখ্যা: দেশের প্রায় ১.২ কোটি থেকে ১.৫ কোটি মানুষ নিয়মিত ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে।

* চ্যালেঞ্জ: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা সত্ত্বেও, অর্থনৈতিক চাপ ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে ই-কমার্সের বার্ষিক লেনদেন প্রবৃদ্ধির হার (CAGR) বিশ্বব্যাপী গড়ের তুলনায় বর্তমানে কিছুটা কম।

খ. ই-ক্যাব-এর ভূমিকা ও কাঠামোগত দুর্বলতা:

ই-ক্যাব দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচিত প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে প্রশাসক দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল। এই দুর্বলতা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত দাবি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে উপস্থাপনে বাধা দেয়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা (SME) এই কাঠামোতে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

নির্বাচন পরবর্তী নতুন সরকারের কাছে ই-কমার্স খাতের সুদূরপ্রসারী প্রত্যাশা ও বর্ধিত দাবি

নতুন সরকারের নীতিগত সহায়তা পেলে এই খাত দ্রুত $১ বিলিয়ন ডলারের শিল্পে পরিণত হবে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য নিম্নলিখিত দাবিগুলো জরুরি:

১. ই-কমার্সকে ‘শিল্প খাত’ ঘোষণা: এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দাবি। শিল্পখাত ঘোষণা হলে উদ্যোক্তারা সহজ শর্তে ঋণ ও দীর্ঘমেয়াদী প্রণোদনা পাবেন।

২. স্বতন্ত্র ‘ডিজিটাল ট্রেড লাইসেন্স’ প্রবর্তন: ই-কমার্স ব্যবসার জন্য আধুনিক ও স্বতন্ত্র ‘ডিজিটাল ট্রেড লাইসেন্স’ চালু করা।

৩. গ্রাহক নিরাপত্তা, আস্থা ও অসাধু ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রণ:

* ভুয়া ব্যবসায়ী শনাক্তকরণ: ভুয়া বা অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্রুত শনাক্ত ও বর্জন করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেস এবং ডিজিটাল ট্র্যাকিং সিস্টেম তৈরি করা।

* গ্রাহক সন্তুষ্টি ও নিরাপত্তা: দ্রুত, স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ গ্রাহক সুরক্ষা ব্যবস্থা (Consumer Protection Mechanism) নিশ্চিত করা।

৪. পেমেন্ট ও লজিস্টিকস: সিএলটিপি (CLTP) ও এস্ক্রো বাস্তবায়ন:

* ক্যাশ অন ডেলিভারি (COD) পেমেন্ট সুরক্ষা: ক্রেতা পণ্য বুঝে পাওয়ার পর কুরিয়ার যেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উদ্যোক্তাকে টাকা পরিশোধ করে, তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ক্যাশ লজিস্টিকস ট্র্যাকিং পলিসি (CLTP) চালু করা।

* এস্ক্রো সার্ভিস: বড় লেনদেন ও নতুন প্ল্যাটফর্মগুলোর ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত থার্ড-পার্টি এস্ক্রো সার্ভিস বাধ্যতামূলক করা।

৫. প্রযুক্তি, ডেটা ও উদ্ভাবন (Tech & Innovation):

* AI/ডেটা গভর্ন্যান্স: ই-কমার্স ফ্রড শনাক্তকরণে জাতীয় পর্যায়ে AI/মেশিন লার্নিং টুলের ব্যবহারকে উৎসাহিত করা।

* জাতীয় ই-কমার্স ডাটা সেন্টার: সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় একটি জাতীয় ই-কমার্স ডেটা সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা।

* ওপেন API: লজিস্টিকস এবং পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ওপেন API/ইন্টার-অপারেবিলিটি নিশ্চিত করার জন্য নীতি তৈরি করা।

* ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস (UPI-এর মতো মডেল): বিভিন্ন ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম একটি ইউনিফাইড পেমেন্ট ইন্টারফেস (UPI) মডেল অনুসরণ করে, সেই লক্ষ্যে নীতি প্রণয়নের দাবি।

৬. ক্রস-বর্ডার ই-কমার্স নীতি ও আন্তর্জাতিক পরিচিতি:

* রপ্তানি নীতি সরলীকরণ: ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (SME) জন্য পণ্য রপ্তানির প্রক্রিয়া সহজ করা।

* আন্তর্জাতিক লেনদেন ও প্রণোদনা: আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ের সংযোগ স্থাপন এবং বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আনার প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, সহজ ও প্রণোদনামূলক করার দাবি।

* প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের রপ্তানি: বাংলাদেশের আইটি সার্ভিস ও ডিজিটাল পণ্যের আন্তর্জাতিক ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে বিক্রির জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া।

* ওয়ান স্টপ সার্ভিস (OSS): আন্তর্জাতিক ই-কমার্সের জন্য প্রয়োজনীয় সকল নথি দ্রুত পাওয়ার জন্য একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস (OSS) উইন্ডো চালু করা।

৭. ই-কমার্স ট্রাইব্যুনাল এবং আইন প্রয়োগ: ই-কমার্স সংক্রান্ত বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল বা দ্রুত বিচার আদালত গঠন করা।

* ভোক্তা অধিকার ট্র্যাকিং: ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো যেন অনলাইনে দ্রুত ট্র্যাকিং ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সমাধান হয়, তার জন্য একটি ইউনিফাইড ডিজিটাল পোর্টাল তৈরির দাবি।

৮. জাতীয় লজিস্টিকস নীতিমালা ও স্থানীয় সরবরাহ চেইন:

* সমন্বিত নীতিমালা ও আঞ্চলিক হাব: সারাদেশে পণ্য বিতরণের জন্য সমন্বিত লজিস্টিকস নীতিমালা প্রণয়ন এবং ঢাকার বাইরে আঞ্চলিক লজিস্টিকস হাব (Hub) স্থাপন করা।

* শীতল সরবরাহ চেইন: কৃষি ও পচনশীল খাদ্যের জন্য শীতল সরবরাহ চেইন অবকাঠামো (Cold Chain Logistics) তৈরিতে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা।

* গ্রিন ই-কমার্স ও প্যাকেজিং: পরিবেশবান্ধব লজিস্টিকস উৎসাহিত করার জন্য ‘গ্রিন ই-কমার্স’ নীতিমালা প্রণয়ন করা এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল হাব প্রতিষ্ঠা করা।

৯. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন ও সমর্থন:

* জামানতবিহীন ঋণ ও ফান্ড: নারী উদ্যোক্তা ও গ্রামীণ SME-দের জন্য সহজে জামানতবিহীন ঋণ নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ ‘ই-কমার্স ফান্ড’ গঠন করা।

* নারী উদ্যোক্তা কোটা: সরকারি ই-কমার্স প্রণোদনায় নারী পরিচালিত ব্যবসার জন্য একটি নির্দিষ্ট কোটা নিশ্চিত করা।

১০. মানবসম্পদ উন্নয়ন ও ই-কমার্স শিক্ষার প্রসার:

* দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি: ই-কমার্স ও লজিস্টিকস খাতের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা জাতীয় ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করার দাবি।

* ফ্রিল্যান্সিং সংযোগ: স্থানীয় প্ল্যাটফর্মগুলো যেন ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মের মতো কাজ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে নীতি তৈরি করে বেকার তরুণদের ই-কমার্স উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করার দাবি।

* পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্তিকরণ: জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে ই-কমার্স এবং ডিজিটাল লেনদেন শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি।

* এফ-কমার্স উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ: অনানুষ্ঠানিক F-Commerce উদ্যোক্তাদের জন্য নিয়মিত কর, ভ্যাট, ভোক্তা অধিকার ও ডেটা নিরাপত্তা বিষয়ে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

১১. কর কাঠামো, রাজস্ব ও স্বচ্ছতা:

* সরলীকরণ ও প্রণোদনা: ই-কমার্স ব্যবসার ওপর বিদ্যমান ভ্যাট ও কর কাঠামোকে সরল করা।

* এনবিআর সমন্বয়: কর ফাঁকি রোধে NBR-এর সঙ্গে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর ডেটা সমন্বয়ের জন্য শক্তিশালী আইনি কাঠামো তৈরি করা।

* ডাবল ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণ: কর ফাঁকি রোধে ডাবল বা ফেইক ইনভয়েসিং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সমন্বিত পদক্ষেপের দাবি।

১২. প্রতিযোগিতা ও একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণ: বাজারে বিদ্যমান বড় প্ল্যাটফর্মগুলো যাতে ছোট উদ্যোক্তাদের ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য একটি স্পষ্ট প্রতিযোগিতা নীতিমালা প্রণয়ন করা।

১৩. স্থানীয় অর্থনীতি এবং ঐতিহ্যগত বাজারের সংযোগ:

* স্থানীয় উৎপাদকদের সাথে সংযোগ: গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র উৎপাদকদের মূল সাপ্লাই চেইনে সরাসরি যুক্ত করার জন্য সরকারি ভর্তুকি বা বিশেষ সহায়তা প্রদানের দাবি।

* O2O মডেল: ছোট দোকান ও খুচরা বিক্রেতাদের ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার জন্য বিশেষ ‘অনলাইন-টু-অফলাইন’ (O2O) মডেল প্রণয়নে ভর্তুকি দেওয়া।

* জিআই ট্যাগ পণ্যের প্রমোশন: হস্তশিল্প, জামদানি বা জিআই ট্যাগপ্রাপ্ত পণ্যগুলো আন্তর্জাতিক ই-কমার্সে বিশেষ সুবিধা সহকারে প্রচারের জন্য নীতি তৈরি করা।

১৪. প্রশাসনিক গতিশীলতা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা:

* ই-কমার্স ফোকাল পয়েন্ট: প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে ই-কমার্স সংক্রান্ত কাজের জন্য উচ্চপদস্থ ‘ফোকাল পয়েন্ট’ কর্মকর্তা নিয়োগ করা।

* ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা সেল ও দুর্যোগকালীন প্রোটোকল: দুর্যোগের পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ ‘ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও ত্বরান্বিতকরণ সেল’ গঠন করা এবং দুর্যোগকালীন অপারেশন প্রোটোকল তৈরি করা।

* বিকল্প যোগাযোগ ব্যবস্থা: ইন্টারনেট বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে জরুরি লেনদেনের জন্য বিকল্প বা অফলাইন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করার দাবি।

* ই-ক্যাব নির্বাচন রোডম্যাপ: ই-ক্যাবকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ বাস্তবায়নের দাবি।

১৫. নিরাপত্তা ও আইনগত ফ্রেমওয়ার্ক:

* সাইবার ইন্স্যুরেন্স: ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম ও ডেটার সুরক্ষার জন্য সাইবার ইন্স্যুরেন্স নীতি প্রণয়নকে উৎসাহিত করা।

* জাতীয় ই-কমার্স স্ট্যান্ডার্ড: পণ্যের বিবরণ, রিটার্ন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত একটি জাতীয় ই-কমার্স স্ট্যান্ডার্ড (Quality Standard) বাধ্যতামূলক করার দাবি।

১৬. ই-কমার্স উন্নয়ন কাউন্সিল গঠন: সরকার, ই-ক্যাব ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী জাতীয় ই-কমার্স উন্নয়ন কাউন্সিল গঠন করা।

ই-কমার্সকে জাতীয় অর্থনৈতিক ইঞ্জিন হিসেবে প্রতিষ্ঠা

যদি নতুন সরকার ই-কমার্সকে শিল্পখাত হিসেবে ঘোষণা করে এবং উপরে উল্লিখিত সুদূরপ্রসারী দাবিগুলো বাস্তবায়নে মনযোগী হয়, তবে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির মানচিত্রে একটি শক্তিশালী স্থান করে নিতে পারবে। এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হলে, ই-কমার্স খাতটি কেবল স্থানীয়ভাবে সংকুচিত হবে না, বরং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে এবং বহু কর্মসংস্থান হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে।

লেখক: প্রতিষ্ঠাতা কিনলে ডটকম, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ই-ক্যাব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর