Saturday 28 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছবিটি পরিবারের সঙ্গে বসে উপভোগ করতে পারবেন: সামিনা বাশার


১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:০৮ | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৪৭

ভারতের চণ্ডিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনসুরেন্সে মাস্টার্স করে ২০১৯ থেকে শোবিজে সামিনা বাশার। কাজ করেছেন অনেক টিভিসি, ওভিসি ও টেলিভিশন নাটকে। ‘অপারেশন সুন্দরবন’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে নবীন এ নায়িকার প্রধান চরিত্রে অভিষেক ঘটেছে ‘মোনা: জ্বিন-২’ ছবিটির মাধ্যমে। তার সঙ্গে কথা বলেছেন সারাবাংলার সিনিয়র নিউজরুম এডিটর আহমেদ জামান শিমুল।

  • প্রথমবারের কোন ছবিতে প্রধান চরিত্রে এবং ঈদ উৎসবে ছবি মুক্তি পেয়েছে। নিশ্চয় অনেক আনন্দ লাগছে?

আমি তো অনেক উত্তেজিত। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে রোজার ঈদের মত এত বড় উৎসবে আমার ছবি মুক্তি পেয়েছে, তাও আবার স্বপ্নের প্রযোজনা সংস্থা থেকে—সবকিছু ঈদের খুশিকে দ্বিগুণ করে দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন
  • আপনি জাজ মাল্টিমিডিয়ায় কাজ করার জন্য বেশ কয়েকবার বাসা থেকে পালিয়ে ছিলেন। সে গল্পটা শুনতে চাই।

গল্পটা আসলে আজিজ ভাইকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছিলাম। যেহেতু ওনার কাছে বহু ছেলে মেয়ে কাজ করতে আসে, এটা তাদের জন্য একটা শিক্ষা হিসেবে উনি জাজের পেইজে আমার পুরো গল্পটা শেয়ার করেছিলেন। এর কারণ হিসেবে বলেছিলেন, উনি চান সবাই আমাকে দেখে শিখুক আমরা এখানে পড়াশোনাটাকেও প্রাধান্য দিই। পড়াশোনা শেষ করে তারপর আসুক আমরা এটা চাই, বাসা থেকে পালিয়ে আসলে সেটা হবে না। অভিভাবকের অবশ্যই সম্মতি থাকতে হবে তার এ জায়গায় কাজ করার ব্যাপারে।
আমার পরিবার থেকে আমাকে বলা হয়েছিল, যদি এসএসসিতে এ প্লাস পাই তাহলে আমাকে জাজে কাজ করতে দিবে। তারা শুধু আমাকে বলার জন্য বলেছিল। পরবর্তীতে আমি রাগ হয়ে বাসা থেকে পালিয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে ফেরানো হয়। এভাবে ২-৩ বার পালিয়ে গিয়েছিলাম শুধু জাজে কাজ করার জন্য। এরপর আমার বাবা-মা আমাকে ভারতের পাঞ্জাবে পাঠিয়ে দিয়েছিল। কারণ তাদের মনে হতো আমি এখনও ছোট, কিছু বুঝবো না। যখন ভার্সিটি শেষ করলাম, তখন বুঝলো না ঠিক আছে এটার তার স্বপ্ন বাধা দেওয়া ঠিক হবে না। শেষ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কাজ হচ্ছে এটাই বড় কথা।

বিজ্ঞাপন
  • নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন আপনার থাকতেই পারে কিন্তু সেটা জাজের মাধ্যমে হতে হবে—এমন চিন্তা কেন মাথায় আসলো?

অনেকগুলো কারণ আছে। এর মধ্যে যেগুলো বিশেষ তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে জাজ এ মুহূর্তে বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রযোজনা সংস্থা। সবাই চাইবে কিন্তু সেরা জায়গায় কাজ করতে। দ্বিতীয়ত বলবো, আমি সবসময় তাদের হাউজটাকে নিয়ে গবেষণা করতাম—তারা কোন ধরণের ছবি বানাচ্ছে, কোন কোয়ালিটির, কাদেরকে নিয়ে বানাচ্ছে ইত্যাদি। এগুলোর খোঁজ খবর নিতে গিয়ে আমি দেখলাম তারা সবসময় নতুন মুখ নিয়ে কাজ করে। অন্যান্য প্রযোজনা সংস্থা টাকা ফেরত আসবে কিনা এ ভয়ে নতুনদের নিতে চায় না। আর তারা নতুনদের দিয়ে সিনেমা কিন্তু হিট করে।

তৃতীয় কারণ, তাদের কনটেন্ট। ‘জ্বিন-২’ ও কিন্তু ভিন্ন ধরণের গল্প। হরর টাইপের গল্প কিন্তু আমাদের দেশে খুব কমই হয়েছে। হয় না বললেই চলে। আজিজ ভাইয়াই এ জনরাটা চালু করেছেন। আমার সবসময় ভিন্ন ধরণের কাজ করতে ভালো লাগে। তারা যৌথ প্রযোজনায় কাজ করতো, সেটাও আমার একটা ইচ্ছে ছিল—যেহেতু আমি ভারতে পড়াশোনা করেছি। দুদেশ মিলে কাজ করলে ভালো হতো। দুঃখজনকভাবে আমি যখন দেশে ফেরত আসি তখন তারা এটা বন্ধ করে দেয়।

  • ‘মোনা: জ্বিন-২’ সিনেমায় যুক্ত হওয়ার গল্পটা শুনতে চাই।

আমার যেহেতু জাজে কাজ করার ইচ্ছে অনেক আগে থেকে, তাই আমি তাদের একজনের নাম্বার জোগাড় করে কল দিই। তিনিই আমাকে জানান ছবিটির অডিশন হচ্ছে। আমি চাইলে অংশ নিতে পারি। নির্ধারিত তারিখে জাজের অফিসে গিয়ে উপস্থিত হই। আমি ভেবেছিলাম আজিজ ভাই আমার অডিশনটা নিবেন। কিন্তু ওনার বড় মেয়ে মুহু আমার অডিশন নিয়েছিলেন। ওখানে আমাকে কিছু ব্যাসিক কথাবার্তা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল— আমার ব্যাকগ্রাউন্ডসহ অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়ে। অভিনয় দক্ষতা যাচাই করার জন্য একটা স্ক্রিপ্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে কিছু লাইন পড়ে তাদের শোনাতে বলা হয়েছিল। সেগুলো করলাম। এক-দু ঘণ্টার মত একটা অডিশন ছিল। তারপর বাসায় গেলাম। পরের দিন জানলাম, আমি ছবিটির জন্য নির্বাচিত হয়েছি।

  • এটা কত সালের ঘটনা?

তিন বছর আগের। ২০২১ সালের দিকের।

  • তাহলে কি ‘অপারেশন সুন্দরবন’ করার পর এটার অডিশন দিয়েছিলেন?

না, না। এটার অডিশন দেওয়ার পর আমি ‘অপারেশন সুন্দরবন’ করেছিলাম।

  • টানা ১৭ দিন রাতে না ঘুমিয়ে ছবিটির শুটিং করেছিলেন। কষ্ট লাগেনি?

শুটিং মানেই তো কষ্ট। এ ছবির শুটিং হয়েছে শীতে। কিন্তু পর্দায় দেখানো হবে গরমকাল। ৭ ডিগ্রি তাপমাত্রায় টানা ১৭ দিন কাজ করেছি জামালপুরে। এর মধ্যে পুকুরে লাফ দেওয়ার দৃশ্যও রয়েছে। পুরো টিম অনেক কষ্ট করেছে। বনের মধ্যে শুটিং করার কারণে বুঝেনই কী পরিমাণ ঠাণ্ডা ছিল। সুতির কাপড় পরে শট দিয়েছি, দর্শকদের যাতে ঠিকঠাক উপহার দিতে পারি। একটা শট দেওয়ার পরই আমদারকে চাদর বা অন্য গরম কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হত। আমার নিজের অ্যাজমার সমস্যা ছিল, এর মধ্যেও শুটিং করেছি।

  • অ্যাজমার কারণে শুটিং সেটে কোন সমস্যায় পড়েননি?

সমস্যায় পড়তে হয়নি। কারণ সেটের সবাই খুবই হেল্পফুল ছিল। দেখা যেত একটু পর পরই গরম চা, পানি এসব এনে দিত।

  • শুটিং সেটের ভয়ংকর কোনো স্মৃতি আছে কি?

আমাদের সহশিল্পী ওমরের গাড়ির একটা দৃশ্য ছিল। যেখানে সে গাড়ি ড্রাইভিং করছিল এবং জোরে জোরে ব্রেক করছিল। আমরা তো পিছনের সিটে নিশ্চিন্তে বসে শট দিচ্ছিলাম। কিন্তু পরে জানতে পারলাম ও ড্রাইভিং পারতো না! অথচ আমাদেরকে সে বলেছিল, সামনে স্পিড ব্রেকার ছিল তো তাই এভাবে ব্রেক করছিলাম। পরবর্তীতে সে বলে, আগের দিন দেখছিল কীভাবে গাড়িটা চালানো যায়। ভয়ে পরিচালককে জানায়নি সে গাড়ি চালাতে পারে না।
এটা তো সিরিয়াস ঘটনা বললাম, একটা মজার ঘটনা বলি। একদিন শুটিং হচ্ছে। ভোর চারটার মতো বাজে। বড়দা মিঠু ভাইয়াসহ আমাদের চারজনের শট। সবাই পুকুরে নামবো। কনকনে শীত। থ্রি, টু… অ্যাকশন বলার সঙ্গে সঙ্গে সবাই নামছে আমি আর নামি না। আমার এমনিতে ‘পানিভীতি’ আছে। তার উপরে ঠাণ্ডা, আবার অ্যাজমা। সবকিছু মিলিয়ে আমি না ওখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেছি। আমাকে উপর থেকে বলা হচ্ছিলো, জাম্প করো, জাম্প করো। কিন্তু আমি করি নাই। পরিচালক অনেক চিল্লাচিল্লা করেন এ নিয়ে। যদিও দ্বিতীয়বারের টেকে আমি অনেক দূর পর্যন্ত চলে গিয়েছিলাম জাম্প করে।

  • ঈদের শাকিব খানের ছবিসহ ডজনখানেক ছবি মুক্তি পেয়েছে। বাকি সবার ছবি রেখে কেন আপনার ছবি দেখবে দর্শক?

আমাদের ছবিটি ভিন্নধরণের ছবি। দর্শকরা সবসময় ভিন্ন কিছু দেখতে পছন্দ করে। ওই গতানুগতিক প্রেম-ভালোবাসা দেখতে পছন্দ করে না। আমাদের ছবিটির দর্শক কিন্তু সবাই। ছবিটি পরিবারের সঙ্গে বসে উপভোগ করতে পারবেন। সবচেয়ে বেশি পছন্দ হবে বাচ্চাদের। আর সবার সিনেমায় দেখা উচিত দর্শকদের। শাকিব খানের একজন ভক্ত হিসেবে তাকে ছাড়া তো ঈদ কল্পনায় করতে পারি না আমি। তার ছবির সঙ্গে আমার ছবি মুক্তি পাচ্ছে এটা আমার জন্য সৌভাগ্যের।

  • নিজের ছবির ছাড়া ঈদে অন্য কার ছবি আগে দেখবেন?

কারটা আগে দেখবো জানি না। শাকিব ভাইয়া, বুবলি আপু, রাজ ভাইয়াসহ সবারই ছবি দেখার ইচ্ছে আছে এক এক করে। আমি বাংলা সিনেমার বিশাল বড় ফ্যান।

  • আপনি তো টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। সিনেমায় নিয়মিত হলে কী টিভিতে কাজ করা ছেড়ে দিবেন?

তা করবো না। নিয়মিতই টিভি নাটকে অভিনয়টা চালিয়ে যাবো। তবে সিনেমাটা বেশি প্রাধান্য থাকবে।

সারাবাংলা/এজেডএস

আহমেদ জামান শিমুল ঈদুল ফিতর ২০২৪ ছবিটি পরিবারের সঙ্গে বসে উপভোগ করতে পারবেন: সামিনা বাশার সাক্ষাৎকার সামিনা বাশার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর