শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরাতে ছাত্রদের সহায়তা করতে হবে
২৮ জুলাই ২০২৪ ১৯:০১ | আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ০১:৫১
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা ও নাশকতা হয়েছে। প্রাণ ঝড়েছে অসংখ্য মানুষের। ছাত্রদের দাবিও প্রায় শতভাগ মেনে নেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারকেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
রোববার (২৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ’৭১।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের প্রতিবাদে ছাত্র সমাজের সাম্প্রতিক আন্দোলনটি ছিল বাংলাদেশের রাষ্ট্রজীবনের একটি মোড় ঘুড়ানো আন্দোলন। এই আন্দোলন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, যুক্তিনির্ভর এবং একইসঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক বার্তা। স্বাধীনতা সংগ্রামী বা মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের ব্যাপক সংখ্যক মানুষ এই আন্দোলনের ন্যায্যতা অনুধাবন করেছিলেন। কিন্তু চরম দুর্ভাগ্যের বিষয় যে, কোটা আন্দোলনের বাতাবরণে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক গোষ্ঠী, বিশেষ করে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার মনোবৃত্তির মানুষ যুক্ত হওয়ায় ছাত্র আন্দোলন তার চরিত্র থেকে দূরে সরে যায়। ফলে তা ভয়াবহ সহিংসতার রূপ ধারণ করে- যা ছিল চরম দুর্ভাগ্যজনক।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সীমাহীন এই সহিংসতায় একদিকে যেমন আন্দোলনকারীরা বহু সংখ্যক হতাহত হয়েছেন, অনেক অমূল্য প্রাণ ঝরেছে- একইসঙ্গে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির অবর্ণনীয় ক্ষতি হয়েছে। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ’৭১ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য তদন্তের মাধ্যমে প্রতিটি হত্যাকাণ্ড ও অবর্ণনীয় রাষ্ট্রীয় ক্ষয়ক্ষতির যোগ্য বিচার দাবি করে। কারণ, ধংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় সম্পদগুলো কোনো দল বা সরকারের নয়- সেগুলো রাষ্ট্রের বা বাংলাদেশের মানুষের।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা কোনো কোটা বা স্বার্থের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেননি। আন্দোলনকারী ছাত্রসমাজের হাতে বাংলাদেশের যে জাতীয় পতাকা শোভা পেয়েছে তার রূপকার এ দেশের মুক্তিযোদ্ধা- যারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার-আল বদরের বিরুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে জয়ী হয়ে এই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।
অতএব ছাত্র আন্দোলনের বাতাবরণে ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছে। মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের মানুষ হিসেবে আমরা দ্রুত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুস্থ ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানাচ্ছি। ছাত্র সমাজের প্রতি আহ্বান, তারা যেন সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক পরিবেশ পুনরুদ্ধারে সর্বাত্মক সহায়তা করেন। কারণ, সরকারি পদক্ষেপে এরই মধ্যে তাদের মৌলিক দাবির শতভাগ পূরণ হয়েছে।
বিবৃতিতে সই করেন- সেক্টর কমান্ডরস ফোরামের কার্যনির্বাহী সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুল আলম, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ম হামিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সহিদুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আমজাদ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), সংগঠনের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন হাবীব, যুগ্ম মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাবুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মৃধা বেনু ও সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী খান।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম