তাওহিদ হৃদয় বীরত্বে কুমিল্লার অসাধারণ জয়
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:১২ | আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:৪০
দুর্দান্ত ঢাকার ১৭৫ রানের বড় স্কোরের জবাব দিতে নেমে ২৩ রানেই নেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তিন উইকেট! কুমিল্লার স্কোর কার্ডের দিকে তাকালে অস্বাভাবিকই মনে হবে। মাত্র দুজন ব্যাটার পেরুতে পেরেছেন দুই অঙ্কের কোটা। তবুও কুমিল্লাই ম্যাচের জয়ী দল! কারণ মাত্র দুজন দুই অঙ্কের কোটা পেরুনো ব্যাটারের একজন তাওহিদ হৃদয় ব্যাট হাতে রীতিমতো কাব্য লিখেছেন। অবিশ্বাস্য এক সেঞ্চুরি করে অনেকটা একাই জিতিয়ে দিয়েছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে।
এক বল হাতে রেখে দুর্দান্ত ঢাকার বিপক্ষে ৪ উইকেটের জয় পেয়েছে কুমিল্লা। তাওহিদ হৃদয় মাত্র ৫৭ বল খেলে ৮টি চার ৭টি ছক্কার সাহায্যে ১০৮ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন। কুমিল্লার পক্ষে দুই অঙ্কের কোটা পেরুনো অপর ব্যাটার ব্রুক গোস্টের রান ৩৪। এবার বুঝুন কুমিল্লার আজকের জয়ে হৃদয়ের অবদান আসলে কতটা।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কুমিল্লার বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ১৭৫ রানের বড় স্কোর গড়েছিল দুর্দান্ত ঢাকা। বড় স্কোরের জবাব দিতে নেমে প্রথম ওভারেই লিটন দাস ফিরলে ক্রিজে নামেন হৃদয়।
এরপর ম্যাচ শেষ হওয়ার পর্যন্ত অপরপ্রান্ত থেকে একটার পর একটা উইকেট পতন হতেই শুধু দেখেছেন হৃদয়। ২৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় কুমিল্লা। এরপর ব্রুক গোস্টের কাছ থেকে কিছুক্ষণের সঙ্গ পেয়েছেন। তবে গোস্ট বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি ক্রিজে। ৩৫ বলে ৩৪ রান করে আউট হয়েছেন তিনি।
গোস্টকে হারানোর পর টপাটপ আরও কয়েকটা উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা। সেখান থেকে কুমিল্লাকে জেতানোর দায়িত্বটা যেন একাই পালন করতে চাইলেন হৃদয়। অর্ধশতক পূর্ণ করেছিলেন ৩২ বলে। কিন্তু যখন দেখলেন অপরপ্রান্ত থেকে কেউই সেভাবে সঙ্গ দিতে পারছেন না তখন দলকে জেতাতে হৃদয়ের ব্যাট যেন হয়ে উঠল তরবারি!
পরের পঞ্চাশ করেছেন মাত্র ২০ বলে! হৃদয় নিজে সেঞ্চুরি করেছেন, দলকেও জিতিয়েছেন। ১ বল হাতে থাকলে কুমিল্লার যখন ৪ উইকেটের জয় নিশ্চিত হলো হৃদয় তখন ৫৭ বলে ৮টি চার ৭টি ছক্কার সাহায্যে ১০৮ রানে অপরাজিত। চলতি দশম বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরি এটা। হৃদয়েরও টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি এটা। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে তার সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ৮৫।
এর আগে নাঈম শেখ ও সাইফ হাসানের ব্যাটে বড় স্কোর গড়ে ঢাকা। নাঈম শেখের সঙ্গে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন শ্রীলংকান ক্রিকেটার চতুরঙ্গা ডি সিলভা। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আলিস আল-ইসলামের বলে ফেরার আগে ১৩ বলে ১৪ রান করেন চতুরঙ্গা।
ঢাকার দ্বিতীয় উইকেট জুটিটা হয়েছে দুর্দান্ত। নাঈম শেখ শুরু থেকেই দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করেছেন। সাইফ হাসান বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন। উইকেট থিতু হয়ে সাইফও দ্রুত রান তুলেছেন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭৮ বল খেলে ১১৯ রান তুলেছেন দুজন। সাইফ হাসান ম্যাথু ফোডের স্লোয়ারে ক্যাচ আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ৫৭ রান করেছেন। তার ইনিংসে চারের মার ৪টি, ছক্কা ৩টি। নাঈম শেখ হিট উইকেট হয়েছেন ব্যক্তিগত ৬৪ রানের মাথায়। ৪৫ বলে এই রান করার পথে ৯টি চার ১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন নাঈম।
এই দুজন ফেরার পর কিছুটা ছন্দ হারিয়ে ফেলে ঢাকা। তবে অ্যালেক্স রোসের শেষের ঝড়ে শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহই পেয়েছে দলটি। ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রানে থেমেছে ঢাকা। অ্যালেক্স রোস ১১ বলে ২টি চার ১টি ছয়ে ২১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
কুমিল্লার হয়ে ম্যাথু ফোড ৪ ওভারে ৩৫ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন। অপর উইকেটটি আলিস আল-ইসলামের।
সারাবাংলা/এসএইচএস