ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও ২০০ পেরোতে পারল না বাংলাদেশ
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৩৮ | আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৪:৩১
এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের বোলিং তোপের মুখে পড়ে টাইগাররা। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানেই অল আউট হয় বাংলাদেশ। লাহোরের এই স্টেডিয়ামেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৩৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিং সহায়ক এই উইকেটেই পাকিস্তানের সঙ্গে ২০০ পেরোতে পারেনি বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই পাকিস্তানের পেস তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। শুরুতে মাত্র ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত জুটিতে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। তবে সাকিব আল হাসান ফেরার পরে মাত্র ৫৬ রানে বাংলাদেশ হারায় ৬ উইকেট। এতেই ৩৮.৪ ওভারে ১৯৩ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
নাজমুল হোসেন শান্তর হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে ছিটকে পড়ার পরেই ডেকে নেওয়া হয় লিটন দাসকে। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে দেখা যায়নি লিটনকে। আফগানদের বিপক্ষে দারুণ ব্যাট করা মেহেদি হাসান মিরাজেই ভরসা রাখে বাংলাদেশ। কিন্তু এদিন ব্যাট হাতে হতাশ করেন মিরাজ। ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
ইনিংসের প্রথম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে খেলতেই পারেনন নাঈম শেখ। প্রথম ওভারটি দেন মেইডেন। এপরের ওভারে স্ট্রাইকে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। আর বল হাতে আসেন নাসিম শাহ। আর প্রথম বলটিই করেন আউট সাইড লেগে। সেই বল চিপ করে স্কয়ার লেগে খেলতে চেয়েছিলেন মিরাজ। তবে সেখানে থাকা ফখর জামানের সহজ ক্যাচে পরিণত হন তিনি।
নাঈম শেখ এবং লিটন দাস মিলে শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন। এই দুই কিছুটা ধাক্কা কাটিয়ে উঠলেও লিটন দাস উইকেট বিলিয়ে দিলে আবারও বিপদে পড়ে টাইগারা। পঞ্চম ওভারের পঞ্চম বলটি শাহিন আফ্রিদি বাউন্সার দিয়েছিলেন। সেই বলটিই কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে ধরা পড়েন। বাংলাদেশ ৩১ রানে হারায় দ্বিতীয় উইকেট। লিটন ফেরেন ১৩ বলে ৪টি চারে ১৬ রান করে।
পাঁচে ব্যাট হাতে আসেন তাওহিদ হৃদয়। তবে আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচের মতো এদিনও ব্যর্থ হৃদয়। ৯ বল খেলে ২ রানে হারিস রউফের বলে পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। বাংলাদেশ ৪৭ রানে হারায় চার নম্বর উইকেট। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ব্যাট হাতে আসেন সাকিব আল হাসান। সে সময় দলীয় মাত্র ৩১ রানেই সাজঘরে ফিরেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ এবং লিটন দাস। এরপর নাঈম শেখও বেশি সময় উইকেটে টিকতে পারেননি। ফিরেছেন দলীয় ৪৫ রানে। বিপর্যয় বাড়ে তাওহিদ হৃদয় দলীয় ৪৭ রানে ফিরলে।
এরপর পঞ্চম উইকেটে দুই অভিজ্ঞ টাইগারের ব্যাটে ভর করে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার লড়াই। সফলও হয়েছেন তারা দুইজন। ধীরে সুস্থে পাকিস্তানি বোলারদের সামলেছেন দক্ষ হাতে। এরপর ধীরে ধীরে দলের সংগ্রহ বাড়িয়েছেন। ২৮তম ওভারে ফাহিমের করা প্রথম বল থেকে ১ রান নিয়ে অর্ধশতক পূরণ করেন সাকিব আল হাসান। টাইগার এই অলরাউন্ডারের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের এটি ৫৪তম অর্ধশতক।
তবে অর্ধশতক ছোঁয়ার পর আর ইনিংস বড় করতে পারেননি সাকিব। ফিরেছেন ৩০তম ওভারের প্রথম বলে। ফাহিমের করা কিছুটা শর্ট লেংথের বল স্কয়ার লেগে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ফখর জামানের তালুবন্দি হন সাকিব। এতেই মুশফিকের সঙ্গে ১২০ বলে ১০০ রানের জুটিও ভাঙে। বাংলাদেশ ১৪৭ রানে হারায় পঞ্চম উইকেট।
সাকিব ফেরার পর অর্ধশতক ছুঁয়ে ফেলেন মুশফিকুর রহিমও। ফিফটি করতে মুশফিক খেলেন ৭২ বল। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি মুশফিকের ৪৬তম অর্ধশতক। তবে এরপরেই আবারও ব্যাটিং ধস টাইগারদের। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ ৬ উইকেট হারিয়েছে মাত্র ৫৬ রান তুলতেই। শেষ পর্যন্ত মুশফিকুর রহিম ৮৭ বলে ৬৪ রান করে ফেরে। এতেই আর দলীয় সংগ্রহ ২০০ পেরোয়নি টাইগারদের।
পাকিস্তানের হয়ে ৪ উইকেট নেন হারিস রউফ। তিনটি উইকেট নেন নাসিম শাহ আর একটি করে উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, ফাহিম আশরাফ এবং আঘা সালমান।
এশিয়া কাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। আর অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাচ্ছে এশিয়া কাপ।
সারাবাংলা/এসএস