শান্ত-মিরাজের শতকে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৩৪
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:১৪ | আপডেট: ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:২২
শ্রীলংকার বিপক্ষে হতশ্রী ব্যাটিংয়ের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিং লাইন-আপই বদলে ফেলল বাংলাদেশ। আর তাতেই বাজিমাত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রানের পাহাড়সম পুঁজি বাংলাদেশের। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের পুঁজি। আর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ।
উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ শুরুর পর কিছুটা ছন্দপতন। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মেহেদি হাসান মিরাজের জোড়া সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের বিশাল সংগ্রহ। ১১৯ বলে ১১২ রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফেরেন মিরাজ আর নাজমুল হোসেন শান্ত ১০৫ বলে ১০৪ রান করে রানআউট হন। তবে তার আগে দলের পাহাড়সম সংগ্রহের পথ গড়ে দেন এই দুই ব্যাটার।
উদ্বোধনী জুটিটা বাংলাদেশকে ভুগাচ্ছে বেশ। তামিম ইকবালের ইনজুরির পর বেশ কয়েকজনকে লিটন দাসের সঙ্গী হিসেবে পরীক্ষা করে বাংলাদেশ। তবে কিছুতেই আসেনি সফলতা। টানা ছয় ম্যাচে বাংলাদেশ দলের উদ্বোধনী জুটি দিতে পারেনি একটি অর্ধশত রানের জুটি। অবশেষে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাওয়া গেল অর্ধশত রানের জুটি।
এশিয়া কাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে আফগানদের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। প্রথম ১৪ বলে ৫ রান করেন মিরাজ। এরপর ফারুকির এক ওভারে দুই চারে অনেকটাই এগিয়েছেন তিনি। অষ্টম ওভারেই ওপেনিং জুটিতে ৫০ ছুঁয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। সাত ম্যাচ পর ওপেনিং জুটিতে ৫০ দেখল বাংলাদেশ।
তবে দলীয় অর্ধশত ছোঁয়ার পরেই দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। মুজিব উর রহমানের করা ইনিংসের ১০ম ওভারের শেষ বল এগিয়ে ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন নাঈম শেখ। তবে তার গুগলি পড়তেই পারেননি তিনি। মুজিব এর গুগলিতে পরাস্থ হয়ে বোল্ড হলেন নাঈম। আর তাতেই ভাঙল বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি।
৩২ বলে ২৮ রান করে নাঈম যখন ফিরলেন তখন স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান ৬০। এরপর চমকে দিয়ে তিনে ব্যাট হাতে এলেন তৌহিদ হৃদয়। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার এলেন আর গেলেন। উইকেটে টিকলেন মাত্র দুই বল। ১১তম ওভারে গুলবাদিন নায়েবের করা অফ স্ট্যাম্পের বল খেলতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
আর এরপরেই মিরাজ আর শান্তর রেকর্ড গড়া জুটি। বাংলাদেশের হয়ে এশিয়া কাপে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি এখন মিরাজ-শান্তর। কেবল এশিয়া কাপে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটিই নয়, যেকোনো উইকেটে এটি বাংলাদেশের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন এই দুই ব্যাটার। তবে আক্ষেপ রয়ে গেছে মাত্র ৯ রানের। ১৯৪ রানের জুটি গড়ার পর রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ। আর তাতেই ২০০ রানের জুটি গড়া হয়নি বাংলাদেশের। তৃতীয় উইকেটে মুশফিকুর রহিম এবং লিটন দাসের গড়া ২০২ রানের জুটি এখন পর্যন্ত এই উইকেটে সর্বোচ্চ বাংলাদেশের। আর তাই রেকর্ডটা নিজেদের করে নেওয়া থেকে মাত্র ৯ রান দূরে থাকতেই থামতে হয়েছে শান্ত-মিরাজকে।
এর আগে ৪১তম ওভারে গুলবদিন নাইবের বলে পুল শটটা ঠিকঠাক খেলতে পারেননি। ক্রিজ থেকে একটু দূরে বল গেছে সে সময় সিঙ্গেল নিবেন কিনা সংশয় ছিল মিরাজ-শান্ত দুইজনেরই। তবে শেষমেশ সিঙ্গেলটা নিয়েই নিলেন। আর সিঙ্গেল নিয়েই হাওয়ায় লাফিয়ে উঠে মিরাজের বুনো উল্লাস। পেয়ে গেলেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা।
অন্যদিকে ব্যাট হাতে ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সময় কাটানো নাজমুল হোসেন শান্তও পেয়েছেন সেঞ্চুরির দেখা। শ্রীলংকার বিপক্ষে এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে অন্যদের ব্যর্থতার দিনে ৮৯ রানের দায়িত্বশীল এক ইনিংস খেলেছিলেন শান্ত। আজ আফগানিস্তানের বিপক্ষে তুলে নিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি।
পরপর দুই উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ চাপে পরে যাওয়ার পর ক্রিজে নেমেছিলেন শান্ত। শুরু থেকেই বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন। রশিদ খান, মুজিবুর রহমান, ফজলহক ফারুকিদের নিয়ে গড়া আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণকে কুলিয়ে উঠতে দেননি। ১০১ বলে সেঞ্চুরি পূর্ন করে বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে নিয়েছেন শান্ত।
শান্ত ১০৪ রান করে ফেরার পর সাকিব আল হাসানের ১৮ বলে ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসের ওপর ভর করে বাংলাদেশের পাহাড়সম সংগ্রহ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৩৪ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। শেষ দিকে মুশফিকুর রহিম ১৫ বলে, শামিম পাটওয়ারি ৬ বলে ১১ রান করেন। আফগানিস্তানের হয়ে একটি করে উইকেট নেন মুজিব উর রহমান এবং গুলবাদিন নাইব। এছাড়া বাকি তিন ব্যাটারই ফেরেন রানআউট হয়ে।
সারাবাংলা/এসএস
এশিয়া কাপ ২০২৩ টপ নিউজ নাজমুল হোসেন শান্ত বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান মেহেদি হাসান মিরাজ