সাকিব-তামিম নেই তাতে কি…
১৭ জুন ২০২৩ ১৮:৩২ | আপডেট: ১৭ জুন ২০২৩ ১৮:৩৯
মিরপুর টেস্টে আফগানিস্তানকে স্রেফ উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ। টেস্টের ফল নির্ধারণ হয়েছে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনে। এই দশ সেশনের একটিতেও আফগানদের মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি স্বাগতিকরা। ব্যাট-বল দুই বিভাগেই একতরফা দাপট দেখিয়ে ৫৪৬ রানে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ।
রানের হিসেবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড এটা। জয়টা কতো বড় তা বুঝানোর জন্য আর কিছু পরিসংখ্যান ঘাটা যাক। বাংলাদেশের এর আগের সর্বোচ্চ জয় ছিল ২২৬ রানের। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়েকে ২২৬ রানে হারিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন টাইগাররা। অর্থাৎ আজ রেকর্ডের ডাবলের চেয়েও বেশি ব্যবধানে জিতল বাংলাদেশ।
পুরো টেস্ট ইতিহাসেই বাংলাদেশের এই জয় তৃতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ দুই জয়ের রেকর্ডে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার নাম। ১৯২৮ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ৬৭৫ রানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। রানের হিসেবে টেস্টে সেটিই সর্বোচ্চ জয়। ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়া আবার ইংল্যান্ডকে হারায় ৫৬২ রানের ব্যবধানে। এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়। তারপরের অবস্থানেই বাংলাদেশের আজকের জয়টা। দারুণ ব্যাপার হলো দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় দুই তারকাকে ছাড়াই এই জয়টা পেল বাংলাদেশ। বলা হচ্ছে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের কথা।
বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে টেনেছেন তারা। পরিসংখ্যান, অর্জন সব হিসেবেই বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ক্রিকেটার সাকিব, আর সেরা ব্যাটার তামিম। ইনজুরির কারণে এই টেস্টে খেলতে পারেননি দুজন। শুধু সাকিব, তামিম নয় একটা সময় যে পঞ্চপাণ্ডবের কাঁধে চড়ে এগুতো বাংলাদেশ ক্রিকেট সেই পাঁচজনের মধ্যে আজ মাঠে ছিলেন কেবল মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি বিন মুর্তজার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার অনেকদিন ধরেই থেমে আছে। মাহমুদউল্লাহ টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন অনেক আগেই।
অর্থাৎ সিনিয়রদের ছাড়াই মিরপুরে রেকর্ড গড়া এক জয় পেল লিটন কুমারের বাংলাদেশ। তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত দুই ইনিংসেই দুর্দান্ত দুটি সেঞ্চুরি করেছেন। রান করেছেন তরুণ মাহমুদুল হাসান জয়। দুর্দান্ত বোলিং করেছেন ইবাদত হোসেন চৌধুরী, তাসকিন আহমেদ। মিরপুর টেস্টে আর একবার বুঝা গেল সিনিয়রদের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তৈরি জুনিয়ররা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মিরপুর টেস্টের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন দাস বলতে চাইলেন সেটাই। লিটন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে যে আমরা জিতেছি, একই পরিস্থিতি ছিল কিন্তু। তামিম ভাই, সাকিব ভাই কেউই খেলেনি। আমরা তরুণ দল ছিলাম এবং দেশের বাইরে গিয়ে জিতেছি। আমরা যখন দেশের বাইরে গিয়ে জিতলাম আমাদের ভেতর একটা বিশ্বাস আসল যে কষ্ট সাফল্য পাওয়ার হার বাড়ে। সবাই এখন একটা ব্যাপারে মরিয়া যে কখন টেস্ট আসবে, কখন টেস্ট আসবে।’
‘আল্টিমেটলি দুই-তিন বছর পরে গিয়ে তিন-চারজন সিনিয়র খেলোয়াড়কে পাবেন না। এখন থেকে এটা যদি সামলাতে না পারেন তাহলে হুট করে বদল হয়ে গেলে কঠিন। তারা খেললে ভালো হতো, কিন্তু এমন না যে ওখান থেকে আমরা কামব্যাক করতে পারব না। পাইপলাইনে, আমাদের ব্যাটিং অর্ডারে আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে। নতুন যারা আসছে তারা সামর্থ্যবান।’
আঙুলের চোটের কারণে সাকিব আল হাসান খেলতে পারেননি। সাকিব না খেলা মানে একজন বোলার একজন ব্যাটারকে হারানো। লিটন বলছিলন, ‘হয়তো দুই বছর পর বা চার বছর পর এমন দিন আসবে যখন সাকিব ভাই থাকবে না। বাংলাদেশ দলকে তো এগিয়ে যেতে হবে। আমি যে দলটা খেলেছি বাংলাদেশের সেরা দল ছিল। তারা তাদের ভূমিকা পালন করেছে।’
সাকিব-তামিম-মুশফিকরা নিশ্চয় একদিন থাকবেন না। তার আগেই লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাসকিন আহমেদরা দায়িত্ব নিতে শিখে যাবেন সেটাই প্রত্যাশা।
সারাবাংলা/এসএইচএস
টপ নিউজ তামিম ইকবাল বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ সাকিব আল হাসান