বায়ার্নকে গুঁড়িয়ে সেমিতে এক পা ম্যানচেস্টার সিটির
১২ এপ্রিল ২০২৩ ০৪:০৮ | আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৩ ১০:১৫
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। রদ্রির দুর্দান্ত এক গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বার্নার্দো সিলভা। পরে আর্লিং হালান্ডের লক্ষ্যভেদে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রাখে সিটিজেনরা।
ইতিহাদে ম্যাচের শুরুতে বল দখলে এগিয়ে থাকা বায়ার্ন প্রথমার্ধের ২৭ মিনিটের মাথায় রদ্রির দুর্দান্ত এক গোলে পিছিয়ে পড়ে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নামা বায়ার্ন শুরুটা ভালো করে। তবে ৭০ আর ৭৬ মিনিটে বার্নার্দো সিলভা এবং আর্লিং হালান্ডের গোলে ব্যবধান ৩-০ করে ফেলে সিটি। আর তাতেই ম্যাচে ফেরা হয়নি বাভারিয়ানদের।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে সিটি। বায়ার্ন গোলরক্ষকের ভুলে ১৪তম মিনিটেই গোল পেয়ে যেতে পারতেন হালান্ড। তবে সে যাত্রায় রক্ষা পেয়ে যায় জার্মান ক্লাবটি। সতীর্থের ব্যাকপাস পেয়ে ক্লিয়ার করতে একটু দেরি করেন ইয়ান সমার আর তখনই দিকে ছুটে যান আর্লিং হালান্ড, শেষ মুহূর্তে কোনোমতে দলকে বিপদমুক্ত করেন সমার।
প্রথম দফায় বেঁচে গেলেও ২৭তম মিনিটে সিটির আক্রমণ থেকে আর বাঁচতে পারেনি বায়ার্ন। বাঁর্নার্দো সিলভার পাস ধরে দুই বায়ার্ন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি বক্সের সামনে জায়গা করে নিয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের উঁচু এক শট করেন রদ্রি। দূরের পোস্টের কোণা দিয়ে বল ঢুকে পড়ে জালে আর তাতেই সিটি এগিয়ে যায় ১-০ গোলের ব্যবধানে।
রদ্রির গোলের মিনিট ছয় পর ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো। কিন্তু ইয়ান সমার সেবার কোনোমতে বাঁচিয়ে দেন। কিন্তু ফিরতি বল যায় ইয়াকি গুন্দোয়ানের পায়ে। সেখান থেকে জোরালো শট নেন গুন্দোয়ান আর সেই শটও দারুণ দক্ষতায় ফেরান সমার। বিরতির পর প্রথম মিনিটেই দারুণ আক্রমণ করে বায়ার্ন। লেরয় সানের জোরাল শট ঠেকিয়ে জাল অক্ষত রাখেন এডারসন। তিন মিনিট পর আরেকটি দারুণ একটি সুযোগ পায় বায়ার্ন, এবার বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক। এতেই প্রথমার্ধ শেষ হয় বায়ার্নের ১-০ গোলে পিছিয়ে থাকার মধ্য দিয়ে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণ করতে থাকে বায়ার্ন। সমতা সূচক গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকা বায়ার্ন ৫৭তম মিনিটে বেঁচে যায় সমারের দৃঢ়তায়। ছয় গজ বক্সের বাইরে থেকে রুবেন দিয়াজের শটে এক হাত দিয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান তিনি। তবে দ্বিতীয় গোলের জন্য খুব বেশি সময় আর অপেক্ষা করতে হয়নি পেপ গার্দিওলার দলকে।
ম্যাচের ৭০তম মিনিটে বায়ার্নের রক্ষণ আবারও ভুল করে বসে। জ্যাক গ্রিলিশের চাপে ডি বক্সের সামনে বল হারান দায়োট উপমেকানো। আর সেখান থেকে বল পেয়ে আর্লিং জালান্ড ক্রস করেন ডি বক্সে। হালান্ডের ক্রস খুঁজে নেন বার্নার্দো সিলভা। দারুণ হেডারে বল জালে জড়িয়ে ব্যবধান ২-০ করেন তিনি। এর মিনিট ছয়েক পর স্কোরশিটে নাম তোলেন হালান্ড নিজেই। ডান দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো ক্রস বক্সে পেয়ে জন স্টোনস হেডে খুঁজে নেন হলান্ডকে। ছয় গজ বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে অনায়াসে জালে পাঠান হালান্ড।
সিটির জার্সিতে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে নরওয়ের এই ফরোয়ার্ডের মোট গোল হলো ৪৫টি। প্রিমিয়ার লিগ যুগে প্রতিযোগিতাটির কোনো খেলোয়াড়ের যা সর্বোচ্চ।
ম্যাচের বাকি সময় সিটি আরও সুযোগ তৈরি করে তবে শেষ পর্যন্ত আর ব্যবধান বাড়েনি। এতেই ৩-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটিজেনরা। বায়ার্নের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় আগামী বুধবার ফিরতি লেগে ফের মুখোমুখি হবে দল দুটি। আগ্রাসী সিটির বিপক্ষে তিন গোলের ব্যবধান ঘুচিয়ে পরের ধাপে যেতে অবিশ্বাস্য কিছুই করে দেখাতে হবে ৬ বারের ইউরোপ চ্যাম্পিয়নদের।
এদিকে কোয়ার্টার ফাইনালের আরেক ম্যাচে এদিন পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার মাঠ থেকে ২-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে ইন্টার মিলান।
সারাবাংলা/এসএস
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল টপ নিউজ ম্যানচেস্টার সিটি বনাম বার্নলি