বিশ্বকাপের দল পরিচিতি: ইকুয়েডর
৬ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫৬
দেখতে দেখতে চলে এলো আরেকটি ফুটবল বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপ কাতারে। ২০০২ সালের কোরিয়া-জাপান বিশ্বকাপের পর ফুটবল বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে এশিয়াতে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবার। তাই স্বাভাবিকভাবেই এবার এশিয়াবাসী বেশিই রোমাঞ্চিত।
৮টি গ্রুপে ভাগ হয়ে এবারের বিশ্বকাপে অংশ নিচ্ছে মোট ৩২টি দল। প্রতিটি গ্রুপই বেশ চমকপ্রদ। গ্রুপের দল বিভাজনে আন্দাজ করা যাচ্ছে গ্রুপ পর্বেই জমে উঠবে বিশ্বকাপ। গ্রুপ ‘এ’তে স্বাগতিক কাতারের সঙ্গে আছে ইকুয়েডর, সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডস। সারাবাংলা ডটনেটের ধারাবাহিক বিশ্বকাপ দল পর্যালোচনায় আজকের আলোচনা ‘এ’ গ্রুপের দল ইকুয়েডরকে নিয়ে-
বিশ্বমঞ্চে ইকুয়েডরকে তুলে আনার কারিগর: ১৯৩০ সালের প্রথম বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হেলায় হারানোর ৭২ বছর পর ইকুয়েডর বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথম সুযোগ পায়। এত বছর পর তাদের সাফল্য ধরা দেওয়ার কারিগর ছিলেন মন্টেনিগ্রিয়ান ডুসান ড্রাসকোভিচ, যিনি ১৯৮৮ সাল থেকে ৫ বছর ইকুয়েডর জাতীয় দলের সঙ্গে ছিলেন। এই কোচ তার ন্যূনতম স্প্যানিশ জ্ঞান এবং ইকুয়েডরীয় ফুটবল সম্পর্কে সামান্য বোঝার কাজ কাজে লাগিয়ে বিপ্লব ঘটিয়েছিলেন। স্কাউটিং, দেশ জুড়ে স্থানীয় প্রতিভা বিকাশের প্রতিশ্রুতি, ইউরোপীয় শারীরিক, কৌশলগত এবং আন্তঃব্যক্তিগত প্রশিক্ষণের মিশেলে ইকুয়েডরের ফুটবল পদ্ধতিকে শূন্য থেকে বিশ্ব পর্যায়ে পরিবর্তন এনেছিলেন। কারণ তার আগে ইকুয়েডর ছিল ভেনেজুয়েলার পরেই লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে দুর্বল দল।
বিগত বিশ্বকাপের পারফরমেন্স: ‘লা ট্রাই’ বা ‘লা ট্রাইকলার’ নামে পরিচিত লাতিন আমেরিকার ইকুয়েডর ২০০২ সালে তাদের মহাদেশের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে দ্বিতীয় হবার মাধ্যমে বিশ্বকাপে প্রথম সুযোগ পায় এবং এরপর থেকে এবারের বিশ্বকাপসহ তারা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছে মাত্র ৪ বার। তাদের সেরা পারফরম্যান্স ছিল ২০০৬ বিশ্বকাপে যেখানে জার্মানি, পোল্যান্ড এবং কোস্টারিকার গ্রুপে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে তারা ডেভিড বেকহ্যামের ফ্রি-কিকে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে গিয়েছিল মাত্র ১-০ গোলের ব্যবধানে। ২০০২ কাতার বিশ্বকাপের আগের ৩টি বিশ্বকাপে তারা খেলার সুযোগ পেয়েছে ১০টি ম্যাচে, তার মধ্যে জিতেছে ৪টিতে, ড্র করেছে ১টি এবং পরাজিত হয়েছে ৫টি ম্যাচে। তারা সর্বমোট গোল করে ১০টি আর হজম করেছিল ১১টি গোল। ২০০২, ২০০৬ এবং ২০১৪ বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা এডিসন মেন্ডেজ সবচেয়ে বেশি ৮টি ম্যাচ খেলেছেন। অন্যদিকে ৩টি করে সর্বোচ্চ গোল করেছেন অগাস্টিন ডেলগাডো ও এনার ভ্যালেন্সিয়া।
কীভাবে কাতার বিশ্বকাপে সুযোগ পেল: মহাদেশীয় বাছাই পর্বে তাদের অবস্থান ছিল চতুর্থ। বাছাই পর্বে তাদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য ছিল কুইটোর উচ্চতায় কলম্বিয়াকে ৬-১ গোলে পরাজিত করা এবং হেভিওয়েট ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সাথে ১-১ গোলে ড্র করা। ফলশ্রুতিতে তারা বাছাই পর্বের ১৮টি ম্যাচের মধ্যে ৭টি ম্যাচে জয়লাভ করে। ২৭টি গোলের বিপরীতে গোল হজম করে ১৯টি যা ছিল বাছাই পর্বে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার পরে সবচেয়ে কম গোল হজম করা দলের একটি।
আর্জেন্টাইন গুস্তাভো আলফারো কাতার বিশ্বকাপে দেশটির কোচের দায়িত্বে থাকবেন, যদিও তিনি প্রথমে ইকুয়েডরের প্রথম পছন্দ ছিলেন না। হার্নান দারিও গোমেজ, জর্জ সেলিকো এবং জর্ডি ক্রুইফের (যিনি একটি খেলার দায়িত্ব না নিয়েই চলে যান) সংক্ষিপ্ত এবং অসফল মেয়াদের পর কিছুটা স্থিতিশীলতা আনতে কোভিডকালীন সময়ে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে ৬০ বছর বয়সী আলফারো দায়িত্ব নেন। তিনি এসেই পিয়েরো হিনকাপি, ময়েসেস কাইসেডো এবং গনজালো প্লাতার মতো তরুণদের জন্য জায়গা তৈরি করতে এবং দলের গতিশীলতা আনতে আন্তোনিও ভ্যালেন্সিয়া, ক্রিশ্চিয়ান নোবোয়া ও ফেলিপ ক্যাসেডোর মত পুরানো প্রহরীদেরকে বাদ দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতিশীল তরুন খেলোয়াড়দের উপর তিনি ভরসা রাখেন যারা আগের বছর কোপা আমেরিকায় তাদের গ্রুপে শেষ স্থান অধিকার করেছিল।
তিনি মহামারীর মাঝখানে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ৩০ দিন আগে ইকুয়েডরের দায়িত্ব নেন। তিনি স্বীকার করেছেন, এটা মোটেও সহজ ছিল না। ইকুয়েডর কাতার বিশ্বকাপের জন্য যোগ্যতা অর্জনের পর তিনি একটি উত্তেজনাপূর্ণ বক্তৃতায় বলেছিলেন: “চ্যালেঞ্জটি ছিল একটি ফাঁকা প্রাচীর যেখানে তাদের ইতিহাস তৈরির ছবি ঝুলিয়ে রাখতে হয়েছিল। তারা প্রথম দিন থেকেই বিশ্বাস করেছিল এবং একসঙ্গে দাঁড়িয়েছিল। তারা ধৈর্যশীল ছিল, তারা অধ্যবসায়ী ছিল কিন্তু তারা একটি অসম্ভব ইউটোপিয়ার শিকারীও ছিল”। ইকুয়েডরে কেউই শুরুর দিকে বিশ্বাস করেনি কিন্তু ঠিকই তাদের জাতীয় দল শেষ পর্যন্ত মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বকাপের গ্রুপ সঙ্গী: ‘গ্রুপ-এ’তে ২০ নভেম্বর স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে উদ্বোধনী ম্যাচ খেলার ৫ দিন পরে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হবে এবং ২৯ নভেম্বর সেনেগালের বিপক্ষে খেলবে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি।
দলের শক্তিশালী ও দুর্বল দিক: ইকুয়েডর ছিল দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যোগ্যতা অর্জনকারী সর্বকনিষ্ঠ দল যাদের গড় বয়স মাত্র ২৫ বছর এবং তাদের উচ্চতা খুব বেশি না হলেও তারা কিন্তু শারীরিক ভাবে শক্তিশালী একটি দল যাদের ৯,৩৫০ ফুট উচ্চতায় খেলার সক্ষমতা রয়েছে।
দলটি বাছাই পর্বে ২৬ পয়েন্টের ১৮ পয়েন্ট অর্জন করেছে হোম-গ্রাউন্ডে অতিরিক্ত উচ্চতার সুযোগ নিয়ে। কিন্তু প্রীতি ম্যাচে নাইজেরিয়া এবং কেপভার্দে উভয়কেই ১-০ গোলে পরাজিত করলেও মেক্সিকো, সৌদি আরব এবং জাপানের বিপক্ষে ০-০ গোলে ড্র করায় দলের গোল করার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দলের প্রধান স্ট্রাইকার এনার ভ্যালেন্সিয়া (জাতীয় দলে এ পর্যন্ত গোল করেছেন ৩৫টি; ১টি গোল করতে সময় নেন ২.১১ ম্যাচ) উভয় ম্যাচেই গোল করতে ব্যর্থ হন। দলের স্কোরিং ফর্ম নিয়ে ইতিমধ্যেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাদের কোচ। তার সামনে বিকল্প হিসেবে আছেন, মাইকেল এস্ট্রাদা যিনি বাছাই পর্বে গোল করেছিলেন ৬টি, কিন্তু গড়ে তার ১টি গোল করতে ৪.৫টির মতো ম্যাচ খেলতে হয়!
এবারের বিশ্বকাপে তাদের সম্ভাবনা: বাজির দর: ১৫০/১। তাদের টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ স্বাগতিক এবং এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে দুর্বল দল কাতারের সাথে। কিন্তু বিশ্বকাপে একটি মজার রেকর্ড রয়েছে আর সেটি হল বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে কোন স্বাগতিক দলই এ পর্যন্ত হারেনি। আরেকটি ব্যাপার হল কাতারের সাথে ইকুয়েডরের র্যাঙ্কিং ব্যবধান হচ্ছে মাত্র ৬ পয়েন্টের (৪৪ ও ৫০), যদিও বিশ্বকাপে এসব র্যাঙ্কিং-এর প্রভাব খুবই কম। তাই ডার্ক হর্স ইকুয়েডরকে প্রথম ম্যাচ শুরু করতে হবে জয় দিয়ে, কারণ শীর্ষ-স্তরের নেদারল্যান্ডস (র্যাঙ্কিং: ৮) এবং শক্তিশালী রক্ষণ ও আক্রমণ ভাগের সমন্বয়ে গড়া সেনেগালকে (র্যাঙ্কিং: ১৮) হারানো এত সহজ হবে না।
যাদের দিকে চোখ রাখতে হবে: পেইরো হিনকাপি (ডিফেন্ডার, বয়স: ২০ বছর): জার্মান বুন্দেসলিগার বায়ার্ন লেভারকুসেন এই সেন্টার-হাফের দৃষ্টিশক্তি, ড্রাইভ এবং সুনির্দিষ্ট পাসের মাধ্যমে রক্ষণ থেকে আক্রমণ শুরু করার ক্ষমতার কারণে এ বছরের আগস্টে $৭.৫ মিলিয়ন দিয়ে কিনে নিয়েছে। এই ডিফেন্ডার কড়া ট্যাকলে অভ্যস্ত এবং বাতাসে অত্যন্ত শক্তিশালী। বাম পায়ে খেলার কারণে লেফট ব্যাক এস্তপিনান যখন উপরে উঠবেন তার জায়গা অনায়াসে কাভার করবেন হিনকাপি। এমনও ধারণা করা হচ্ছে যে, বিশ্বকাপে ভালো করলে এই ডিফেন্ডারের দাম $৫০ মিলিয়ন পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে!
পারভিস এস্তপিনান (লেফট ব্যাক, বয়স: ২৪ বছর): নিচ থেকে আক্রমণ করার জন্য প্রসিদ্ধ এস্তপিনান স্পেনের ভিলারিয়ালের হয়ে ২০২১-২২ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য যথেষ্ট অবদান রেখেছিলেন। সে যাত্রায় তারা জুভেন্টাস এবং বায়ার্ন মিউনিককেও পরাজিত করেছিল। শুধু কি তাই বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে তার পা থেকে দলের সর্বোচ্চ ১১১৯টি পাস এসেছিল, ১৭টি ম্যাচে ২২টি গোলের সুযোগ তৈরি করে নিজে ২টি গোল করার পাশাপাশি ৬টি গোলে সহায়তা করেছিলেন।
ময়েসেস কাইসেডো (মিডফিল্ডার, বয়স: ২১ বছর): নিঃসন্দেহে এই দলের তারকা হলেন কাইসেডো, যিনি “নিনো মোই” পরিচিত। ভারসাম্য এবং রক্ষণাত্মক কাঠামো প্রদান করে ইংল্যান্ডের ব্রাইটন দলে তিনি ইতিমধ্যে একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছেন। একজন বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার হিসাবে তিনি আক্রমণে অবদান রাখেন আবার ব্যাকলাইনকেও সাহায্য করেন। ব্রাইটন কোচ, রবার্তো ডি জারবি, তাকে “প্রিমিয়ার লিগের সেরা মিডফিল্ডারদের একজন” বলে অভিহিত করেছেন, যোগ করেছেন: “কাইসেডো বল সহ এবং বল ছাড়া একজন শীর্ষ খেলোয়াড়। অনেক খেলোয়াড় আছে যারা বল নিয়ে খুব ভালো কিন্তু তারা রক্ষণে অতটা ভালো হয় না। তিনি হাফওয়ে লাইন থেকে বাইসাইকেল কিক স্কোর করবেন না বা সিল্কি দক্ষতা দিয়ে প্রতিপক্ষকে চমকে দেবেন না, তবে তার কার্যকর পাসিং, দুর্দান্ত অবস্থান এবং গেম-পঠন বুদ্ধিমত্তা ইকুয়েডরের অগ্রগতির প্রচেষ্টায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বাছাই পর্বে তার পাসিংয়ের সফলতার হার ছিল ৮৬.৮%, সুযোগ তৈরি করা এবং বল দখলের ক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন সেরা তৃতীয় স্থানে।
গঞ্জালো প্লাটা (মিডফিল্ডার, বয়স: ২১ বছর): ২০১৯ পোল্যান্ড যুব বিশ্বকাপে ‘ব্রোঞ্জ বল’ জেতা এই মেধাবী মিডফিল্ডার বিপক্ষ দলের ডিফেন্স এলোমেলো করে ফাঁক-ফোকর তৈরি করা এবং ওয়ান-টু-ওয়ান সিচুয়েশনে চোখের পলকে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার কাজে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেন। তিনি বর্তমানে স্পেনের রিয়েল ভ্যালাডোলিড ক্লাবে খেলছেন।
অ্যাঞ্জেল মেনা (উইংগার, বয়স ৩৪ বছর): তিনি খেলায় সর্বদা উজ্জ্বল হন না এবং কখনও কখনও বেঞ্চেও থাকেন, তবে তিনি স্কোয়াডের প্রত্যেকের কাছে মাঠে এবং মাঠের বাইরে যা করেন তার জন্য তিনি দলের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান ‘অগোচরে নায়ক’ হিসেবে পরিচিত। লা ট্রাইকলারের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, মেনার বুদ্ধিমত্তা দলটিকে কোচের পছন্দের উচ্চ-গতির ফুটবল খেলতে সক্ষম করে। তার রয়েছে দুর্দান্ত দৃষ্টি এবং শট নেয়ার ক্ষমতা। তিনি একজন বাঁ পায়ের উইঙ্গার। মেক্সিকান ক্লাব লিওনে এখন পর্যন্ত ১৩৮ ম্যাচে ৬২টি গোল করেছেন।
এনার ভ্যালেন্সিয়া (উইংগার ও ফরোয়ার্ড, বয়স: ৩২ বছর): তুরস্কের ফেনারবাচেতে খেলা এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার ইকুয়েডরের তুলনামূলক তরুণ দলটির পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করবেন কারণ ২০১০ সালের বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ড এবং হন্ডুরাসের বিপক্ষে ২টি গোল করেছিলেন।
বিশ্বকাপে যারা সুযোগ পেতে পারেন:
গোলরক্ষক: আলেকজান্ডার ডমিঙ্গুয়েজ (দেপোর্টেস টলিমা), হারনান গালিন্দেজ (ইউনিভার্সিড ডি চিলি), মোয়েসেস রামিরেজ (ইন্ডিপেনডিয়েন্টে দেল ভালে), হোর্হে পিনোস (৯ ডি অক্টোবর)
ডিফেন্ডার: রবার্ট আরবোলেদা (সাও পাওলো), পারভিস এস্তুপিনান (ভিলারিয়াল), জার্মান পেজেলা (রিয়াল বেটিস), অ্যাঞ্জেলো প্রিসিয়াডো (জেঙ্ক), পিয়েরো হিনকাপি (বেয়ার লেভারকুসেন), জেভিয়ের আরেগা (সিয়াটেল সাউন্ডারস), দিয়েগো প্যালাসিওস (লস অ্যাঞ্জেলেস), বায়রন কাস্টিলো (বার্সেলোনা), ফার্নান্দো লিওন (অ্যাটলেটিকো সান লুইস)
মিডফিল্ডার: কার্লোস গ্রুয়েজো (অগসবার্গ), অ্যাঞ্জেল মেনা (ক্লাব লিওন), জেগসন মেন্ডেজ (অরল্যান্ডো সিটি), গঞ্জালো প্লাটা (রিয়াল ভ্যালাডোলিড), রোমারিও ইবারা (পাচুকা), মোয়েসেস ক্যাসেডো (ব্রাইটন), অ্যালান ফ্রাঙ্কো (শার্লট), জোয়াও রোজাস (এমেলেক), হোসে সিফুয়েন্তেস (লস অ্যাঞ্জেলেস), মাইকেল কারসেলেন (ইকুয়েডর বার্সেলোনা), জেরেমি সারমিয়েন্টো (ব্রাইটন), ড্যানি ক্যাবেজাস (ইন্ডিপেন্ডিয়েন্টে দেল ভ্যালে)
ফরোয়ার্ড: এনার ভ্যালেন্সিয়া (ফেনারবাচে), মাইকেল এস্ট্রাদা (ক্রুজ আজুল), জর্ডি ক্যাসেডো (সিএসকেএ সোফিয়া) ও জোর্কেফ রেসকো (নিওয়েলস ওল্ড বয়েজ)
বিশ্বকাপের সম্ভাব্য লাইন-আপ (সেরা-একাদশ):
গোলরক্ষক: আলেকজান্ডার ডমিঙ্গুয়েজ (দেপোর্টেস টলিমা);
ডিফেন্ডার: অ্যাঞ্জেলো প্রিসিয়াডো (জেঙ্ক), রবার্ট আরবোলেদা (সাও পাওলো), পিয়েরো হিনকাপি (বেয়ার লেভারকুসেন), পারভিস এস্তুপিনান (ভিলারিয়াল);
মিডফিল্ডার: কার্লোস গ্রুয়েজো (অগসবার্গ), মোইসেস ক্যাসেডো (ব্রাইটন), গঞ্জালো প্লাটা (রিয়াল ভ্যালাডোলিড);
ফরোয়ার্ড: অ্যাঞ্জেল মেনা (ক্লাব লিওন), মাইকেল এস্ট্রাডা (ক্রুজ আজুল) এবং এনার ভ্যালেন্সিয়া (ফেনারবাচে)।
খেলার ফর্মেশন: ৪-৪-২ সবচেয়ে সাধারণ ফর্মেশন হলেও আলফারো প্রতিপক্ষের উপর নির্ভর করে কৌশল পরিবর্তন করতে ভয় পান না। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে তিনি দলকে খেলিয়েছেন ৩-৫-২ পদ্ধতিতে তবে বিশ্বকাপের মূল পর্বে ৪-৩-৩ পদ্ধতিতে খেলানোর সম্ভাবনা বেশি, যেহেতু বিশ্বকাপের পরে প্রীতি ম্যাচগুলোতে দল সেভাবে গোল পায়নি।
আমার দেখা সেরা একাদশ (বর্তমান ও নতুন খেলোয়াড় সহ): শেষ করব আমার দেখা ইকুয়েডরের সেরা একাদশ দিয়ে। আমার পছন্দের একাদশ তৈরি করা হয়েছে যাদের খেলা আমি দেখেছি এবং ফর্মেশন হবে আমার প্রিয় ৪-৪-২ পদ্ধতিতে, অর্থাৎ গোলরক্ষকের সামনে থাকবে ৪ জন ডিফেন্ডার, ৪ জন মিডফিল্ডার এবং ২ জন স্ট্রাইকার।
১) গোল-রক্ষক:- হোসে ফ্রান্সিসকো সেভালোস (ম্যাচ সংখ্যা: ৮৯টি)
২) রক্ষণ-ভাগ:-
রাইট-উইং ব্যাক: আন্তোনিও ভ্যালেন্সিয়া (ম্যাচ সংখ্যা: ৮৯টি & গোল সংখ্যা: ১১টি। ক্লাব লেভেলে ৩২৫টি ম্যাচ খেলেছেন ইংল্যান্ডের উইগান অ্যাথলেটিক এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে)।
সেন্ট্রাল-ডিফেন্ডার: ইভান হুর্তাদো (ম্যাচ সংখ্যা: ১৬৮টি & গোল সংখ্যা: ৫টি),
উলিসেস দে লা ক্রুজ (ম্যাচ সংখ্যা: ১০১টি & গোল সংখ্যা: ৬টি। তিনি স্কটল্যান্ডের হিবারনিয়ান এবং ইংল্যান্ডের অ্যাস্টন ভিলার হয়ে খেলেছেন ১৩৭টি ম্যাচ)
লেফট উইং-ব্যাক: ওয়াল্টার আয়োভি (ম্যাচ সংখ্যা: ১২১টি & গোল সংখ্যা: ৮টি। যিনি ২৮৬টি ম্যাচ খেলেছেন মেক্সিকোর মন্টেরে ও পাচুকা ক্লাবের হয়ে)।
৩) মধ্য-মাঠ:-
রক্ষণাত্মক মিডফিল্ড: সেগুন্ডো কাস্টিলো (ম্যাচ সংখ্যা: ৮৭টি & গোল সংখ্যা: ৯টি)।
আক্রমণাত্মক মিডফিল্ড: এডিসন মেন্ডেজ (ম্যাচ সংখ্যা: ১১১টি & গোল সংখ্যা: ১৮টি। তিনি হল্যান্ডের ক্লাব পিএসভি আইন্দহোভেনে খেলেছেন ৬৯টি ম্যাচ),
অ্যালেক্স আগুইনাগা (ম্যাচ সংখ্যা: ১০৯টি & গোল সংখ্যা: ২৩টি। তিনি মেক্সিকোর নেকাক্সা ক্লাবে খেলেছেন ৪৭৬টি ম্যাচ),
এনার ভ্যালেন্সিয়া (ম্যাচ সংখ্যা: ৭৪টি & গোল সংখ্যা: ৩৫টি। যিনি ১৪৯টি ম্যাচ খেলেছেন ইংলিশ এবং তার্কিশ লীগে। বয়স: ৩৪ বছর এবং বর্তমান জাতীয় দলে খেলছেন)। উনি ফরোয়ার্ড হলেও তাকে আমি উইঙ্গার হিসেবে ব্যবহার করব।
৪) ফরোয়ার্ড:- অগাস্টিন ডেলগাডো (ম্যাচ সংখ্যা: ৭১টি & গোল সংখ্যা: ৩১টি) &
ক্রিশ্চিয়ান বেনিটেজ (ম্যাচ সংখ্যা: ৫৮টি & গোল সংখ্যা: ২৪টি)।
৫) অতিরিক্ত:- ডিফেন্ডার, জিওভানি এস্পিনোজা (ম্যাচ সংখ্যা: ৯০টি & গোল সংখ্যা: ৩টি),
উইঙ্গার, ক্রিশ্চিয়ান টেলো (ম্যাচ সংখ্যা: ৮৩টি & গোল সংখ্যা: ৪টি। তিনি ৩৩৯টি ম্যাচ খেলেছেন রাশিয়ার বিভিন্ন ক্লাবে) &
ফরোয়ার্ড, ফেলিপ কাইসেডো (ম্যাচ সংখ্যা: ৬৮টি & গোল সংখ্যা: ২২টি। যিনি ৩৮৫ টি ম্যাচ খেলেছেন ইংলিশ, স্প্যানিশ, ইতালিয়ান এবং অন্য ইউরোপিয়ান ক্লাবে)।
সারাবাংলা/এসআইটি/এসএইচএস