সেল্টিককে হারিয়ে ৪২ বছর পর প্রতিশোধ রিয়ালের
৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০২:৫৯ | আপডেট: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৪:০৪
স্কটল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব সেল্টিককের সঙ্গে শেষবার রিয়াল মাদ্রিদের দেখা হয়েছিল ১৯৭৯/৮০ মৌসুমে তৎকালীন ইউরোপিয়ান কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে। সেবার গ্লাসগোর সেল্টিক পার্ক থেকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হেরেছিল রিয়াল তবে ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল তারা। তবে সেল্টিকের মাঠে সেই হারের ক্ষত যেন এখনো শুকায়নি। তাই তো ৪২ বছর পর আবারও সেল্টিকের মুখোমুখি রিয়াল মাদ্রিদ এবার যেন সেই প্রতিশোধটাই নিল।
হালান্ডের রেকর্ডের দিনে সেভিয়াকে উড়িয়ে দিল ম্যানসিটি
এমবাপের জোড়া গোলে জুভেন্টাসকে হারাল পিএসজি
সেল্টিক পার্ক থেকে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা ৩-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে। রিয়াল হয়ে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে প্রথম গোল করেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, এরপর ৬০ মিনিটে লুকা মদ্রিচ আর ৭৭ মিনিটে এডেন হ্যাজার্ড তৃতীয় গোলটি করেন। এই ম্যাচে রিয়াল স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন আর প্রথমার্ধ শেষে চোট পেয়ে আর মাঠেই নামেননি ডিফেন্ডার এডার মিলিতাও।
গ্লাসগোতে এক ভয়ংকর অভ্যার্থনা পায় লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। সেল্টিক পার্কে ম্যাচের শুরু থেকেই রিয়ালকে চেপে ধরে। প্রথম পাঁচ মিনিটে বেশ কয়েকবার রিয়ালের রক্ষণে হামলা দেয় স্বাগতিকরা তবে সে যাত্রায় নিজেদের রক্ষা করে রিয়াল। এরপর নিজেদের কিছুটা গুছিয়ে নিয়ে মধ্যমাঠের দখল নিতে শুরু করে টনি ক্রুস এবং লুকা মদ্রিচরা। মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই করিম বেনজেমা এবং ভিনিসিয়াস জুনিয়রের মাধ্যমে আক্রমণ চালাতে শুরু করে।
অবশ্য ছেড়ে কথা বলছিল না সেল্টিকও। দুর্দান্ত আক্রমণ ব্যস্ত রেখেছিল রিয়ালের রক্ষণকেও। ম্যাচের ২১ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল তারা তবে কলাম ম্যাকগ্রেগরের বুলেট শট থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করলেও গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসলে বেঁচে যায় রিয়াল।
ম্যাচের ২৭তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় রিয়াল। দলের সেরা খেলোয়াড় করিম বেনজেমা হাঁটুতে চোট পেয়ে খোঁড়াতে থাকেন। এরপর ৩০ মিনিটের মাথায় তাকে তুলে নিয়ে এডেন হ্যাজার্ডকে মাঠে নামাতে বাধ্য হন কার্লো আনচেলোত্তি। মাঠে নেমেই দারুণ খেলতে থাকেন হ্যাজার্ড, ৪৩ মিনিটে সেল্টিক রক্ষণকে পরাস্ত করে ভিনিসিয়াসকে দারুণ এক পাস দেন তিনি। তবে সেল্টিক গোলরক্ষক জো হার্টকে একা পেয়েও তাকে পরাস্ত করতে পারনেনি ভিনিসিয়াস। এতেই প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে খোঁড়াতে থাকেন রিয়াল সেন্টার ব্যাক এডার মিলিতাও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তাকে বসিয়ে অ্যান্তোনিও রুডিগারকে নামান আনচেলোত্তি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গুছিয়ে আক্রমণ করতে থাকে রিয়াল। ফলাফল আসতেও সময় লাগেনি বেশি। ৫৬ মিনিটের মাথায় প্রতি আক্রমণে মাঠে ডান দিক থেকে বল নিয়ে আক্রমণে ওঠেন ফেদেরিখো ভালভার্দে। বল নিয়ে একাই মধ্যমাঠ থেকে পৌঁছে যান সেল্টিকের ডি বক্সের কোণায়, এরপর ডি বক্সে ভিনিসিয়াসের উদ্দেশ্যে পাস দেন। ডি-বক্সে বল পেয়ে টোকা দিয়ে জালে জড়িয়ে রিয়ালকে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে নেন ভিনিসিয়াস।
এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার সময় সেল্টিককে দেয়নি রিয়াল। চার মিনিট পর এডেন হ্যাজার্ডের বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে সেল্টিকের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বুটের বাইরের পাশ দিয়ে ফ্লিক করে বল জালে জড়ান লুকা মদ্রিচ। রিয়াল এগিয়ে যায় ২-০ গোলে। এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বেশ ভালোভাবেই নিয়ে নেয় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। দুর্দান্ত খেলতে থাকেন এডেন হ্যাজার্ড। তার দারুণ পারফরম্যান্সের পূর্ণতা পায় ম্যাচের ৭৭তম মিনিটে। টনি ক্রুসের ঝোলানো পাস ডি বক্সের ডান দিকে পেয়ে যান দানি কার্ভাহাল। বল পেয়ে ডি-বক্সের ভেতর পাস দেন হ্যাজার্ডের উদ্দেশ্যে, দারুণ এই পাসে পা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান হ্যাজার্ড। রিয়াল পেয়ে যায় তৃতীয় গোলের দেখা। ২০২০ সালের পর চ্যাম্পিয়নস লিগে এটিই হ্যাজার্ডের প্রথম গোল।
শেষ পর্যন্ত ভিনিসিয়াস, মদ্রিচ এবং হ্যাজার্ডের করা গোলে ৩-০ ব্যবধানে জিতে মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ।
সারাবাংলা/এসএস
২০২২/২৩ মৌসুম উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ টপ নিউজ সেল্টিক বনাম রিয়াল মাদ্রিদ