মায়ার্সের সেঞ্চুরিতে সেইন্ট লুসিয়ার দ্বিতীয় দিন উইন্ডিজের
২৬ জুন ২০২২ ০৩:১২ | আপডেট: ২৬ জুন ২০২২ ১১:০৯
সেইন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা স্বপ্নের মতো শুরু করেছিল টিম বাংলাদেশ। তবে দিন যত গড়িয়েছে তত স্বপ্ন ফিকে হয়েছে সাকিব আল হাসানের দলের। কাইল মায়ার্সের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১০৬ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে। ১০৬ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৪০ রান তুলে দিন শেষ করেছে উইন্ডিজ।
বিনা উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিং শুরু করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার। দুর্দান্ত গতিতে রান তুলতে থাকেন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং জন ক্যাম্পবেল। জুটির শতরান গড়ার পর আর বেশি সময় এই জুটিকে টিকতে দেননি পেসার শরিফুল ইসলাম। ২৬তম ওভারে ক্যাম্পবেলকে সোহানের তালুবন্দি করে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন শরিফুল।
২৬তম ওভারের শেষ বলটি শর্ট পিচ করেন শরিফুল। একটু বাউন্স হয় বলটিতে আর সেটাতে পুল করতে যান ক্যাম্পবেল। শরিফুলের পেস এবং বাউন্সে পরাস্ত হন ক্যাম্পবেল আর তালুবন্দি হন সোহানের। ৭৯ বলে ৬টি চারে ৪৫ রান করেন জন ক্যাম্পবেল।
শুরুটা সেখান থেকেই। এরপর ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট এবং রেইমন রেইফার মিলে গড়েন ৩১ রানের জুটি। তবে তাদের জুটি বড় করতে দিলেন না মিরাজ। ৩৮তম ওভারে বল হাতে এসে প্রথম বলেই ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে বোল্ড করে ফেরান মিরাজ। মিরাজের আর্ম বলটি অফ স্ট্যাম্পের বাইরে পড়ে আর সামনের পা এগিয়ে দিয়ে ডিফেন্স করতে যান ব্র্যাথওয়েট। তবে পুরোপুরি বলের লাইন মিস করেন তিনি এতেই ভাঙে উইকেট। বাংলাদেশ দিনের দ্বিতীয় সাফল্য পেয়ে যায়। ব্র্যাথওয়েট ১০৭ বলে ৫১ রান করে ফেরেন।
পরের ওভারে বল হাতে আসেন খালেদ আহমেদ। ৩৯তম ওভারের প্রথম বলটি শর্ট লেন্থে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে করেন টাইগার পেসার। তার বলটি লাইন থেকে দূরে হলেও খেলতে যান রেইফার আর এতেই ইনসাইড এজ হয়ে বল আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। রেইফার ৪১ বলে ২২ রানে ফেরেন বোল্ড হয়ে। উইন্ডিজ ১৩১ রানেই হারায় তৃতীয় উইকেট।
ব্র্যাথওয়েট ফেরার পর উইকেটে আসেন এঙ্ক্রুমাহ বোনার। ৩৯তম ওভারে রেইফার ফেরার পর ব্ল্যাকউড এক রান নিয়ে স্ট্রাইক দেন বোনারকে। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল বোনারের জন্য। ওভারের শেষ বলোটি ব্যাক অব লেন্থে ফেলেন খালেদ। তার বলোটি ব্যাকফুটে গিয়ে ডিফেন্স করতে যান বোনার কিন্তু ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড হন তিনিও। ৭ বলে শূন্য রানে ফেরেন তিনি। আর উইন্ডিজ ১৩২ রানে হারায় চতুর্থ উইকেট।
লাঞ্চ থেকে ফিরে কাইল মায়ার্স এবং জারমেই ব্ল্যাকউড গড়েন ১১৬ রানের জুটি। আর এতেই বিপদ সামলে সেইন্ট লুসিয়া টেস্টের চালকের আসনে আবারও স্বাগতিকরা। লাঞ্চের পরে বাংলাদেশের বোলাররা স্বাগতিক ব্যাটারদের তেমন পরীক্ষাতেই ফেলতে পারেননি। এতেই সাবলীল ভঙ্গিতেই রান তুলেছেন মায়ার্স এবং ব্ল্যাকউড।
মায়ার্স ঝড়ো গতিতে রান তুললেও ব্ল্যাকউড বেশ দেখেশুনেই খেলছেন। ৬৯তম ওভারে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অর্ধশতক পূরণ করেন মায়ার্স। ওই ওভারেই এবাদতকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে লিড নেয় উইন্ডিজ।
দ্বিতীয় সেশন থেকে ৩০ ওভারে উইন্ডিজ ১১১ রান তোলে। আর ১৪ রানের লিড নিয়ে চা-বিরতিতে যায়। বিরতি থেকে ফিরেই ৭৪তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউ হয়ে জারমেই ব্ল্যাকউড ফিরলে ভাঙে ১১৬ রানের দুর্দান্ত এই জুটি। তবে এরপর জশুয়া ডা সিলভাকে নিয়ে আরও একটি শতরানের জুটি গড়ার পথেই রয়েছেন কাইল মায়ার্স।
এর আগে অবশ্য নিজের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিটি তুলে নেন মায়ার্স। তার প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটিও বাংলাদেশের বিপক্ষেই। সেই সেঞ্চুরিটিকে অবশ্য ডাবল সেঞ্চুরিতে রূপ দিয়েছিলেন মায়ার্স ২১০ রান তুলে অপরাজিত ছিলেন সেই টেস্টে। সেইন্ট লুসিয়ায় ১২৬ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছেন মায়ার্স। আর তার দল ১০৬ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৪০ রান তুলে দিন শেষ করেছে। এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ ২৩৪ রানে অলআউট হয়।
দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন খালেদ আহমেদ এবং মেহেদি হাসান মিরাজ। আর একটি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। উইকেট শূন্য দিন কাটিয়েছেন সাকিব আল হাসান এবং এবাদত হোসেন।
সারাবাংলা/এসএস
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম বাংলাদেশ কাইল মায়ার্স টপ নিউজ দ্বিতীয় ইনিংস