চতুর্থ দিন শেষে এগিয়ে বাংলাদেশ
১৮ মে ২০২২ ১৯:২৭ | আপডেট: ১৮ মে ২০২২ ২১:৩৩
মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসের ব্যাটে বিশাল লিডের সম্ভবনা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত খুব বেশি লিড পায়নি বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানের লিড পেয়েছে মুমিনুল হকের দল। তবে শেষ বিকেলে তাইজুল ইসলামের কল্যাণে বেশ ভালোই এগিয়ে থাকল স্বাগতিকরা। দুর্দান্ত এক রান আউট করার পর দারুণ এক ডেলিভারিতে একটা উইকেটও তুলে নিয়েছেন তাইজুল।
চট্টগ্রাম টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলংকার সংগ্রহ ৩৯/২। অর্থাৎ আট উইকেট হাতে রেখে এখনো ২৯ রানে পিছিয়ে লংকানরা। এমন অবস্থা থেকে চট্টগ্রাম টেস্টে ফল বের হওয়া কঠিন। বাংলাদেশ সকাল সকাল শ্রীলংকার ব্যাটিং ইনিংসে মড়ক লাগাতে পারলে অবশ্য ফলের সম্ভবনা তৈরি হতে পারে। তবে চট্টগ্রামের পিচে দ্রুত সময়ের মধ্যে আট উইকেট তুলে নেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়।
বুধবার (১৮ মে) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৬৮ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করতে নেমে শুরু থেকেই স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছেন বাংলাদেশি অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভ। তাতে কাজও হয়েছে। চতুর্থ দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ১৭.১ ওভার বোলিং করেছে বাংলাদেশ, তাতে স্পিনাররাই করেছেন ১৬.১ ওভার!
তাইজুল, সাকিব আল হাসানরা বড় টার্ন আদায় করতে পেরেছেন। প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট নেওয়া নাঈম হাসানও পিচে সুবিধা পাচ্ছিলেন। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় তাইজুল ইসলামের দুর্দান্ত এক থ্রোতে ওশাদা ফার্নান্দোর উইকেট হারায় শ্রীলংকা। খানিক বাদে লাথিস এম্বুলদেনিয়াকে পরাস্ত করে সরাসরি বোল্ড করেছেন তাইজুল। সেখানেই দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়ার। দিন শেষে শ্রীলংকান অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে অপরাজিত ছিলেন ১৮ রানে।
এর আগে ৩ উইকেটে ৩১৮ রান নিয়ে আজ চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। ক্রিজে ছিলেন মুশফিকুর রহিম (৫৩*), লিটন দাস (৫৪ *)। দিনের প্রথম সেশনটা নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিয়েছেন এই দুজন। ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল সেঞ্চুরি পেতে যাচ্ছেন দুজনই।
কিন্তু লাঞ্চ বিরতির পরই হঠাৎ ছন্দপদন। লাঞ্চে লিটন দাস পছন্দের খাবার পেয়েছিলেন কিনা কে জানে! সেই রাগ বুঝি ঝাড়তে চাইলেন শ্রীলংকান বোলারদের ওপর! লাঞ্চ বিরতি শেষে প্রথম বলেই আউট। বদলি পেসার রাজিথার অনেকটা বাইরের বল অযথা তাড়া করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন লিটন। সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন ১৮৯ বলে ১০টি চারের সাহায্যে ৮৮ রান কর।
এরপর উইকেটে আসেন আগের দিন হাতের পেশিতে টান পেয়ে ১৩৩ রানে মাঠ ছাড়া তামিম ইকবাল। তামিম মাঠে নেমে প্রথম বলেই আউট। রাজিথার ডেলিভারিটা অবশ্য ছিল দুর্দান্ত। অফ স্ট্যাম্পের বাইরে পরে ভেতরে ঢুকেছে অনেকটা। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি তামিম। সরাসরি বোল্ড।
গত আফগানিস্তান সিরিজে এই ভেতরে ঢোকা বলে বহু ভুগেছেন তামিম। আজও ঠিক সেভাবেই ফেরার আগে ২১৮ বল খেলে ১৫টি চারের সাহায্যে ১৩৩ রান করেছেন।
মুশফিকুর রহিম অপরপ্রান্তে অবিচলই ছিলেন। রানের চিন্তা বাদ দিয়ে উইকেট আকড়ে পড়ে ছিলেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটার। অপর দিকে সাকিব আল হাসান সাত নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে কিছুটা আক্রমনাত্মক হতে চেয়েছেন। তাতে সফল হতে পারেননি। আসিথা ফার্নান্দোর শরীর তাক করা বলে উচিয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন ব্যক্তিগত ২৬ রানের মাথায়।
খানিকবাদে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিমও। তবে ফেরার আগে ক্যারিয়ারের অষ্টম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন অনেকদিন অফ ফর্মে থাকা মুশফিক। ১০৫ রান করে ফেরার আগে ২৮২ বল খেলে চার মেরেছেন মাত্র ৪টি, ছক্কা নেই। এতেই বুঝা যায়, রানের চিন্তা বাদ দিয়ে কিভাবে উইকেট আগলে পড়ে ছিলেন মুশফিক।
বাকি সময়ে লেজের ব্যাটারদের নিয়ে লিড বাড়ানোর চেষ্টা করে গেছেন তাইজুল ইসলাম। ৪৫ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২০ রান করে ফিরেছেন তাইজুল। বাংলাদেশ থেমেছে ৪৬৫ রানে।
শ্রীলংকার হয়ে রাজিথা ৬০ রানে নিয়েছেন চার উইকেট। আসিথা ফার্নান্দো ৭২ রানে নিয়েছেন তিন উইকেট।