Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিশরকে কাঁদিয়ে প্রথম আফ্রিকান নেশন্স কাপ জিতল সেনেগাল

স্পোর্টস ডেস্ক
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৪:২৭ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:১২

পঞ্চম পেনাল্টি নিতে এলেন সাদিও মানে। বল স্পটে রেখে পেছনে সরে এসে দাঁড়ালেন, এরপর রেফারির বাঁশি বাজার সঙ্গে একটু দীর্ঘ করে শ্বাস নিয়ে দৌড়ে গিয়ে বলে সজোরে লাথি দিয়ে বাঁ দিকের কর্নার দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন জালে। আর সঙ্গে সঙ্গে গড়ে ফেললেন ইতিহাস। ম্যাচের শুরুতে এই স্পট কিক থেকেই গোল করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন সাদিও মানে। আর ম্যাচের শেষে এসে সেই স্পট কিক থেকে বল জালে জড়িয়েই লিখলেন সেনেগালের ইতিহাস। মিশরকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের সেনেগাল জিতল আফ্রিকান নেশন্স কাপের শিরোপা।

বিজ্ঞাপন

ওলেম্বে স্টেডিয়ামে রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলার মীমাংসা হলো না। এরপর খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও গোলশূন্যতে শেষ হলো ম্যাচ। এবার পালা টাইব্রেকারের। যেখানে মোহাম্মদ সালাহর মিশরকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেনেগাল জিতল প্রথমবারের মতো আফ্রিকার সেরার মুকুট।

সেনেগালের প্রথম নাকি মিশরের ১২ বছরের অপেক্ষার অবসান? আফ্রিকান নেশন্স কাপের ফাইনালের আগে সমীকরণ ছিল এটাই। শেষবার ২০১০ সালে আফ্রিকার সেরার মুকুট জিতেছিল মিশর। এরপর আর ২০১৭ সালে ফাইনালে উঠলেও শিরোপা ছুঁয়ে দেখা হয়নি মোহাম্মদ সালাহদের। অন্যদিকে আফ্রিকান নেশন্স কাপের গত আসরে ২০১৯ সালে আলজেরিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল সেনেগালের।

এবার ঘুচেছে অপেক্ষার পালা। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আফ্রিকার সেরার মুকুট ছিনিয়ে নিয়েছে সেনেগাল। সেটিও আবার মহাদেশের সর্বোচ্চ শিরোপাধারীদের হারিয়েই।

ম্যাচের আগে খাতাকলমে এগিয়ে ছিল সেনেগালই। সাদিও মানে, ইসমাইল সার আর ইদ্রিস গুয়ের মতো খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া আক্রমণভাগ। আবার ফিফার বর্ষসেরা গোলরক্ষক এডুয়ার্ড মেন্ডি গোলবারের নিচে আর তার সামনে কুলিবালি এবং আবদৌ ডায়ালোর মতো ডিফেন্ডারদের নিয়ে গড়া সেনেগালের একাদশ।

সেনেগাল এগিয়ে যেতে পারতো ম্যাচের সাত মিনিটের মাথায়। ম্যাচের মাত্র তিন মিনিটের মাথায় সালিও চিসকে ডি বক্সের ভেতর ফাউল করেন মোহাম্মদ আবদেলমোনেম। সঙ্গে সঙ্গে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। স্পট কিক থেকে বল জালে জড়াতে ব্যর্থ সাদিও মানে। গোলরক্ষকের সোজাসুজি বল মেরে দলকে লিড এনে দিতে ব্যর্থ মানে। এরপর দুই পক্ষের সমানে সমান লড়াইয়ে শেষ হলো নির্ধারিত ৯০ মিনিট। ফলাফল ওই গোলশূন্য!

বিজ্ঞাপন

এরপর ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। এই সময়েও দুই দল গোল করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গেলেও মেলেনি গোলের দেখা। আর এভাবেই শেষ হয় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটও। এই সময়ে ৫৭ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখে আক্রমণ সাজায় সেনেগাল। ১৩টি শটের মধ্যে মিশরের গোল বরাবর ৮টি শট করে সাদিও মানেরা। অন্যদিকে মোট ৭টি শটের মধ্যে কেবল তিনটিই লক্ষ্যে রাখতে পারে মিশর। গোটা ম্যাচ জুড়ে নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন মোহাম্মদ সালাহ।

অতিরিক্ত সময়েও ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ না হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে প্রথম পেনাল্টি নিতে আসেন সেনেগালের কালিদু কুলিবালি। ডান পায়ের শটে প্রথম পেনাল্টি থেকে বল জালে জড়ান কুলিবালি। এরপর মিশরের জিজো বল জালে জড়িয়ে সমতায় ফেরান দলকে। আবদৌ ডায়ালো সেনেগালের দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান ২-১ করেন। মিশরের হয় দ্বিতীয় পেনাল্টি নিতে আসা মোহাম্মাদ আবদেলমোনেম গোল করতে ব্যর্থ হন। তার শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে। এরপর নিজেদের তৃতীয় পেনাল্টি মিস করেন সেনেগালের বনুনা সার। এরপর তৃতীয় শট নিত এসে দলকে ২-২ গোলে সমতায় ফেরান মিশরের মারওয়ান হামদি। চতুর্থ শটে বামবা ডিয়েং গোল করলে সেনেগাল ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। এরপর চাপের মুখে চতুর্থ শট নিতে এসে তা মিস করেন মিশরের মোহাম্মদ লাশিন।

পঞ্চম পেনাল্টিটি ছিল সেনেগালের ইতিহাস গড়ার পেনাল্টি। সাদিও মানের দিকে তাকিয়ে গোটা সেনেগাল। ডান পায়ের শটে বাঁ দিকের কোণা দিয়ে বল জালে জড়িয়ে বুনো উল্লাসে গোটা দেশকে মাতালেন মানে। মিশরকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের আফ্রিকান নেশন্স কাপের শিরোপা জিতল সেনেগাল।

সারাবাংলা/এসএস

আফ্রিকান নেশন্স কাপ টপ নিউজ প্রথম শিরোপা সেনেগাল বনাম মিশর সেনেগালের শিরোপা জয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর