৭৩ রানের লিডে ৩য় দিন শেষ করল বাংলাদেশ
৩ জানুয়ারি ২০২২ ১১:৩৫ | আপডেট: ৩ জানুয়ারি ২০২২ ১১:৪১
বে ওভালে তৃতীয় দিনে শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু মুমিনুল হক এবং লিটন দাসের ব্যাটিং বীরত্বে বাংলাদেশ লিড নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৫৬ ওভারে ৬ উইকেটে ৪০১ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। আর কিউইদের চেয়ে টাইগাররা এগিয়ে আছে ৭৩ রানে।
দ্বিতীয় দিনে ২ উইকেটে ১৭৫ রান তুলে দিন শেষ করেছিল টাইগাররা। ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় এবং অধিনায়ক মুমিনুল হক অপরাজিত ছিলেন যথাক্রমে ৭০ ও ৮ রানে। তৃতীয় দিনে তৃতীয় ওভারেই ফিরলেন মাহমুদুল হাসান জয়। এদিন নামের পাশে মাত্র ৮ রান যোগ করতে পেরেছিলেন তিনি।
সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও হতাশ করেছেন মুমিনুল-লিটন
আগের দিন দুই উইকেট নেওয়া নিল ওয়াগনারই এদিন আঘাত হানে টাইগারদের শিবিরে। দ্বিতীয় দিনে যে দৃঢ় জয়কে দেখা গিয়েছিল, তৃতীয় দিনের সকালে ছিল না তার ছিটেফোঁটাও। স্টাম্পের বাইরের বলগুলোও তাড়া করছিলেন বারবার। আর সেই ভুলের মাশুল গুনতে হয়েছে গালি থাকা হেনরি নিকোলসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে। জয় যখন ফিরছেন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৮৪।
এরপর উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। মুমিনুলের সঙ্গে বেশ ধীর গতিতেই এগোচ্ছিলেন মুশি। রানের চাকা যেন একেবারেই থমকে ছিল ওই সময়ে। বিপদ বাড়তে পারতো ৮০তম ওভারেই। ওগানারের করা ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেটের পেছনে থাকা টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন মুমিনুল। তবে ভাগ্য সহায় ছিল টাইগার দলপতির। ওয়াগনারের করার বলটি ছিল পায়ের নো বলের কারণে সে যাত্রায় রক্ষা পায় মুমিনুল। এ সময় তিনি ব্যাট করছিলেন ৯ রানে।
চতুর্থ উইকেটে একটু বেশি সতর্ক ছিলেন মুশি-মুমিনুল। তাই তো ১৮.২ ওভারে এই জুটি থেকে আসে মাত্র ১৯ রান। অর্থাৎ ওভার প্রতি রান ওঠে মাত্র এক। তবে জুটি থামে ওই ১৮.২ ওভারেই। ট্রেন্ট বোল্টের ফুল লেংথের বল আটকাতে পারেননি মুশি। আর এতেই বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে।
মুশফিক ১২ রান করে ফিরলে উইকেটে আসেন লিটন দাস। তখনও বাংলাদেশ ১২৫ রানে পিছিয়ে ছিল। এরপর পঞ্চম উইকেটে এই দুই ব্যাটার ৩১৭ বলে ১৫৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়লেন। এতেই বাংলাদেশ পেল ৩৩ রানের লিড।
দারুণ ব্যাট করতে থাকা মুমিনুলকে নিয়ে যখনই টাইগার সমর্থকরা শতক হাঁকানোর স্বপ্ন দেখছিল ঠিক তখনই ধ্যানচ্যুত হলেন তিনি। শতক থেকে মাত্র ১২ রান দূরে থাকতে ট্রেন্ট বোল্টের লেংথ ডেলিভারি পড়তেই যেন পারলেন না। রক্ষণ করতে গিয়ে পরাস্ত হলেন, বল গিয়ে লাগলো ভেতরের পায়ে, কিউইদের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার আঙুল তুলে জানিয়ে দিলেন আউট। তবে রিভিউ নিয়েছিলেন মুমিনুল কিন্তু তাতেও আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে আসেনি কোনো পরিবর্তন।
৩৭০ মিনিটে ক্রিজে থাকা মুমিনুল ২৪৪ বলে ১২টি চারে ৮৮ রান করে ফিরলেন প্যাভিলিয়নে। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি মুমিনুলের ১৫তম অর্ধশতক।
মুমিনুল হক ফিরলে আর বেশি সময় টিকতে পারেননি লিটন দাসও। ২৪৭ মিনিটে ক্রিজে থাকা লিটন ১৭৭ বলে ১০টি চারে ৮৬ রান করে ফিরলেন। তিনিও হয়েছেন বোল্টের শিকার। তবে অধিনায়ক মুমিনুলের মতো এলবিডাব্লিউ নয়, লিটন উইকেটের পেছনে টম ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেছেন। এটি লিটনের ১১তম অর্ধশতক।
শেষসেশনে ৩৭ ওভারে ৯৪ রান তুলতে বাংলাদেশ হারিয়ে মুমিনুল এবং লিটনের উইকেট। ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বি ৩৫ বলে ১১ আর মেহেদি হাসান মিরাজ ৩৮ বলে ২০ রান করে তৃতীয় দিন শেষ করেছেন অপরাজিত থেকে।
তৃতীয় দিনে বাংলাদেশের আউট হওয়া চার ব্যাটারের মধ্যে প্রথমটি নিয়েছেন নিল ওয়াগনার। এরপরের তিনটি উইকেটই ঝুলিতে পুরেছেন ট্রেন্ট বোল্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড
১ম ইনিংস
নিউজিল্যান্ড: ১০৮.১ ওভারে ৩২৮/১০ (লাথাম ১, ইয়াং ৫২, কনওয়ে ১২২, টেইলর ৩১, নিকোলস ৭৫, ব্লান্ডেল ১১, রবিন্দ্র ৪, জেমিসন ৬, সাউদি ৬, ওয়াগনার ০, বোল্ট ৯*) ; (তাসকিন ২৬-৭-৭৭-০, শরিফুল ২৫-৭-৬২-৩, ইবাদত ১৮-৩-৭৫-১, মিরাজ ৩২-৯-৮৬-৩, শান্ত ২-০-১০-০, মুমিনুল ৪.১-০-৬-২)।
বাংলাদেশ: ১৫৬ ওভারে ৪০১/৬; (জয় ৭৮, সাদমান ২২, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮৮, মুশফিক ১২, লিটন ৮৬, ইয়াসির ১১*, মিরাজ ২০*); (সাউদি ৩২-৪-৯৪-০, বোল্ট ৩০-১১-৬১-৩, জেমিসন ৩০-৯-৭২-০, ওয়াগনার ৩৮-৯-৯৮-৩, রবিন্দ্র ২৬-৪-৬৪-০)।
আরও পড়ুন: সকালটা বোলারদের, বাকি দিনটা টাইগার ব্যাটারদের
সারাবাংলা/এসএস