ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই উইকেটে আসতে হয় ডেভন কনওয়েকে। অধিনায়ককে হারিয়ে চাপে পড়া কিউইদের হাল ধরেন আরেক ওপেনার উইল ইয়ংকে সঙ্গে নিয়ে। শুরুটা ধীরে করলেও সময়ের সঙ্গে হাত খুলে খেলতে শুরু করেন এই দুই কিউই টপ অর্ডার ব্যাটার। বাংলাদেশের পেসারদের ভালো বল সমীহ করে খেলছিলেন আর লাইনচ্যুত বল থেকে রান বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এরপর উইকেটে সেট হওয়ার পর রানের গতি বাড়াতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। ইনিংসের ২১তম ওভারে এসে শরিফুলকে টানা দুই বলে দুটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করেন ডেভন কনওয়ে। এরপর মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত অনায়াসে কাটিয়ে দেন কনওয়ে এবং ইয়ং। মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত ১ উইকেটে ৬৬ রান তোলে স্বাগতিকরা।
বিরতির পর ফিরে ব্যাট চালানোর গতি বাড়িয়ে দেন কনওয়ে। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ফিরে ৮ম ওভারে আর ইনিংসের ৩৫তম ওভারে মেহেদি হাসান মিরাজের করা প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে কনওয়ে তুলে নেন অর্ধশতক। ওই ওভারে মিরাজকে আরও দুটি বাউন্ডারি হাঁকান এই কিউই ব্যাটার।
বাংলাদেশের বোলাররা তেমন ভীতিই ছড়াতে পারেনি কিউই ব্যাটারদের মনে। অনায়াসে রান তুলেছেন উইল ইয়ং এবং ডেভন কনওয়ে। এর মধ্যে ৩৯তম ওভারে মিরাজকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলীয় শতরান পূরণের সঙ্গে ১০০ রানের জুটিও ছুঁয়ে ফেলেন ইয়ং।
এরপর ব্যক্তিগত রানের খাতায় অর্ধশতক পূর্ণ করেন ইয়ং। পঞ্চাশ ছুঁয়ে ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে মেহেদি মিরাজের বল মিড উইকেটে ঠেলে দিয়ে রান নিতে ছোটেন। এক রান পূর্ণ করে ছোটেন দ্বিতীয় রানের দিকে আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। নাজমুল হোসেন শান্ত ফিল্ডিং করে বল ফেরত পাঠান উইকেটরক্ষক লিটনের কাছে। দারুণ দ্রুততার সঙ্গে বল লুফে নিয়ে স্টাম্প ভাঙেন লিটন। আম্পায়ার বেশ সময় নিয়ে বারবার রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত দেন ইয়ং দাগ ছোঁয়ার আগেই লিটন স্টাম্প ভেঙেছেন। এতেই ৫২ রান করা ইয়ং ফিরলেন দলীয় ১৩৯ রানে।
ইয়ং ফিরলে উইকেটে আসেন রস টেইলর। তাকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন কনওয়ে। ইনিংসের ৬৬তম ওভারেরর তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে পূর্ণ করেন শতক। তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁতে কনওয়ে খেলেন ১৮৬ বল। দুর্দান্ত এই ইনিংসে তিনি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন ১৪টি আর ছক্কা মেরেছেন একটি।
তবে কনওয়ের শতকপূর্ণ হওয়ার পরের ওভারে বল হাতে আসেন শরিফুল ইসলাম। বল হাতে কিউই ব্যাটারদের কিছুটা পরীক্ষা যা নেওয়ার একমাত্র শরিফুলই নিয়েছেন গোটা ইনিংস জুড়ে। এবার সেই পরীক্ষায় পাস করতে পারলেন না রস টেইলর। ৬৭তম ওভারের ৪র্থ বলে কাভারে ফিল্ডিং করতে থাকা সাদমান ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন টেইলর। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৩১ রান। টেইলর যখন ফিরছেন তখন কিউইদের স্কোরবোর্ডে রান ৩ উইকেটে ১৮৯।
টেইলর ফিরলে কনওয়েকে সঙ্গ দিতে আসেন হেনরি নিকোলস। তবে তার সঙ্গে কনওয়ের জুটি বেশি বড় করতে দেননি টাইগার দলপতি মুমিনুল। তার দুর্দান্ত ইনিংসের শেষ হয় ৭৯তম ওভারে এসে। বাংলাদেশ দলপতি মুমিনুল হকের বলে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার। ২২৭ বলে ১২২ রান করে ফেরেন তিনি। দুর্দান্ত ইনিংসটি তিনি সাজান ১৬টি চার ও একটি ছক্কায়। দলীয় ২২৭ রানে ফেরেন তিনি।
এরপর দিনের শেষভাগে এসে ইবাদত হোসেন টম ব্লান্ডেলকে বোল্ড করলে সেখানেই দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। আউট হওয়ার আগে ব্লান্ডেল করেন ১১ রান। অন্যদিকে ৩২ রান করে অপরাজিত আছেন হেনরি নিকোলস।