৫৪ ডট, ৩ চার, ৭ ছক্কার এক ইনিংস
১৯ নভেম্বর ২০২১ ১৫:৪৮ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২১ ১৯:৫৮
টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নির্ধারিত ২০ ওভারে সাতটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। টি-টোয়েন্টি ইনিংস হিসেবে মনেই হতে পারে, টাইগার ব্যাটাররা দুর্দান্ত একটি ইনিংসই খেলেছেন। কিন্তু এই ইনিংসেরই আরও দুইটি তথ্য বিবেচনায় নিলেই বেরিয়ে আসছে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের পুরনো রোগ।
ইনিংস শেষের তথ্য বলছে, এই ইনিংসে সাতটি ছক্কার বিপরীতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা মাটি কামড়ে বাউন্ডারি মেরেছেন মাত্র তিনটি! ২০ ওভারের ইনিংসে তিনটি চার— এর সপক্ষে কথা বলার মতো কাউকে পাওয়া যাবে কি? আরেকটি তথ্যে পুরনো রোগটিই যে এখনো প্রকট, তার প্রমাণ মিলছে। দলের সাম্প্রতিক কিছু ইনিংসের মতোই এই ইনিংসেও ডট বলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত। ১২০ বলের মধ্যে ৫৪টি ডট বল খেলেছেন মাহমুদউল্লাহরা। অর্থাৎ ২০ ওভারের মধ্যে ৯ ওভারই ডট!
ডটের হিসাব আসলে নিলে অবশ্য ইনিংস শেষে স্কোরটা খুব একটা খারাপ মনে হচ্ছে না। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে আফিফ, সোহান আর মেহেদির তিনটি ছোট্ট কিন্তু কার্যকর ইনিংসে দলের স্কোর থেমেছে ১২৭ রানে। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের এই দশায় এটি কতটা ফাইটিং স্কোর, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর অনেক পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশ দলে। মুশফিকুর রহিম, লিটন দাস, সৌম্য সরকারদের দল থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। সাকিব নিয়েছেন বিশ্রাম। সেই সুযোগে দলে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পেয়েছেন চার তরুণ— সাইফ হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, শহিদুল ইসলাম ও আকবর আলী। দীর্ঘ দিন পর দলে ফিরেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন এটাকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন পথচলা।’
ক্রিকেটারদের পরিবর্তনের বিবেচনায় নতুন এই পথচলায় অবশ্য প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে পারফরম্যান্সে তেমন রদবদল হয়নি। সেই ইনিংসের শুরু থেকেই উইকেটের পতন, টপ অর্ডারে কারও দাঁড়াতে না পারার পুরনো অভ্যাসের প্রত্যাবর্তন। উইকেট পতনের চেয়েও বড় কথা, উইকেট বিলিয়ে আসার প্রবণতাটিই যেন প্রকট।
ওপেনিংয়ে আজ অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন সাইফ হাসান। সুবিধা করতে পারেননি অভিষিক্ত সাইফ (১)। নাইমও (১) ছিলেন নিস্প্রভ। অনেকদিন পর দলে ফেরা অপর তরুণ নাজমুল হোসেন শান্ত তিন নম্বরে নেমে করতে পারলেন মাত্র ৭ রান। সব মিলিয়ে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ তৃতীয় উইকেট হারালো দলীয় ১৫ রানের মাথায়।
এরপর তরুণ আফিফকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর প্রতিরোধের চেষ্টা। আফিফ এগুতে পারলেও মাহমুদউল্লাহ ব্যর্থ। মোহাম্মদ নাওয়াজের নির্বিশ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে ৭ রান করেছিলেন অধিনায়ক। বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪/৪০।
এরপর আফিফ এবং নুরুল হাসান সোহান দারুণ খেলছিলেন। তবে নিজের ইনিংসকে বড় করতে পারেননি একজনও। দলীয় ৬১ রানের মাথায় ৩৪ বলে ৩৬ রান করে ফিরেছেন আফিফ। তার ইনিংসে চার ও ছয় দুটি করে। খানিক বাদে নুরুল হাসান দুই ছয়ে ২২ বলে ফেরেন ২৮ রান করে। এরপর বাংলাদেশ যে একশ ত্রিশের কাছাকাছি গেল তাতে বড় অবদান শেখ মাহেদি হাসানের।
সাত নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে ২০ বলে ১টি চার এবং ২টি ছয়ে ৩০ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন মাহেদি। ইনিংসের শেষ বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকানো তাসকিন আহমেদ ৮ রান করে বাংলাদেশের পক্ষে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
পাকিস্তানের হয়ে হাসান আলী ২২ রান খরচায় নিয়েছেন তিন উইকেট। ২৪ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। এছাড়া একটি করে উইকেট পেয়েছেন শাদাব খান ও মোহাম্মদ নাওয়াজ।
সারাবাংলা/এসএইচএস/টিআর
আফিফ হোসেন ধ্রুব টপ নিউজ বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ মাহমুদউল্লাহ