টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ: ব্যাটিংয়ে সেরা যারা
১৬ অক্টোবর ২০২১ ২২:৩৭ | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২১ ০৮:২৯
আরেকটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে রাত পোহালেই। বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে পেছন ফিরে তাকালে চোখ ভাসবে রোমাঞ্চকর এক অধ্যায়। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৬, এই নয় বছরে অনুষ্ঠিত হয়েছে ছয়টি বিশ্বকাপ যার প্রতিটিতেই ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চ, উন্মাদনা যেমন ছিল তেমনি ছিল আফসোস, বিয়োগ বেদনাও। এসবের মধ্যে ব্যাট হাতে মুগ্ধ করেছেন এমন পাঁচজন ব্যাটারকে নিয়েই এই আয়োজন।
আগের ছয়টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন শ্রীলংকার কিংবদন্তি ব্যাটার মাহেলা জয়াবর্ধনে। রান সংগ্রাহকদের তালিকায় দুই নম্বরে আছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ফেরিওয়ালা ক্রিস গেইল। তিন নম্বরে শ্রীলংকার সাবেক বিধ্বংসী ওপেনার তিলকরত্নে দিলশান। চার নম্বরে ভারতীয় মহা-তারকা বিরাট কোহলি ও পাঁচে দক্ষিণ আফ্রিকান কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্স।
মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলংকা): শ্রীলংকান কিংবদন্তির টি-টোয়েন্টি অধ্যায় শেষ হয়েছে সেই ২০১৪ সালে। অর্থাৎ আগের ছয়টি বিশ্বকাপের পাঁচটিতে খেলেছেন লংকান তারকা, ২০১৬ সালের বিশ্বকাপে খেলেননি তিনি। তবুও রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সবার উপরে এখনো তার নামটি জ্বলজ্বল করছে। বিশ্বকাপে জয়াবর্ধনের ব্যাট বুঝি একটু বেশিই চওড়া হচ্ছিল! ক্যারিয়ারের একমাত্র টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিটা পেয়েছেন বিশ্বকাপেই। মোট ৯টি হাফ সেঞ্চুরির ৫টিই করেছেন বিশ্বকাপে। ক্যারিয়ার গড় যেখানে ত্রিশের কিছু বেশি, বিশ্বকাপে সেটা চল্লিশের কাছাকাছি।
কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, তিলকরত্নে দিলশান, লাসিথ মালিঙ্গা প্রজন্ম ‘শেষ সুযোগ’ কাজে লাগিয়ে ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল। জয়াবর্ধনে বিশ্বজয়ের মাস দুই পরই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটকে বিদায় বলে দেন। তার আগে বিশ্বকাপে ৩১ ম্যাচে ৩১ ইনিংস ব্যাটিং করে ১ হাজার ১৬ রান করেছেন। গড় ৩৯.০৭, স্ট্রাইকরেট ১৩৪.৭৪।
ক্রিস গেইল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন গেইল। বিশ্বজুড়ে দানবীয় ব্যাটিং চালিয়ে যান বলে এই ফরম্যাটের ফেরিওয়ালা বলা হয় ক্যারিবিয়ান তারকাকে। বিশ্বকাপেও নিজের ছাপ রেখেছেন গেইল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে একাধিক সেঞ্চুরির মালিক গেইল (২টি)। আগের ছয়টি বিশ্বকাপেই খেলা ক্যারিবিয়ান দানব সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে খেলেছেন মোট ২৮টি ম্যাচ। যাতে ২৬ ইনিংস ব্যাটিং করে ৯২০ রান করেছেন। সেঞ্চুরি দুটি, হাফ সেঞ্চুরি ৭টি। গড় ঠিক ৪০, স্ট্রাইকরেট ১৪৬.৭৩।
এবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে বিশ্বকাপ খেলবেন গেইল। ফলে জয়াবর্ধনেকে ছাড়িয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার বড় সুযোগ তার সামনে। নিশ্চয় চেষ্টা করবেন ক্যারিবিয়ান তারকা।
তিলকরত্নে দিলশান (শ্রীলংকা): ২০১৬ সালের সর্বশেষ বিশ্বকাপের পরপরই টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেন দিলশান। তার আগে এই ফরম্যাটে সব কিছুই জিতেছেন। শ্রীলংকার ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান দিলশানের। ২০১৬ সালেও বেশ ভালো খেলেছেন লংকান তারকা। ছয়টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট ৩৫ ম্যাচ খেলা দিলশান ৩৪ ইনিংস ব্যাটিং করে ৮৯৭ রান করেছেন। অল্পের জন্য বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পাননি, অপরাজিত ছিলেন ৯৬ রানে। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৬টি। দিলশান এই রান তুলেছেন ৩০.৯৩ গড় ও ১২৪.০৬ স্ট্রাইকরেটে।
বিরাট কোহলি (ভারত): কয়েক বছর ধরেই বিশ্বের সেরা ব্যাটার ভাবা বিরাট কোহলির সাম্প্রতিক ফর্ম ভালো যাচ্ছে না। তবে কোহলির টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স রীতিমতো অবিশ্বাস্য। ২০১২ সাল থেকে তিন বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট ১৬টি ম্যাচ খেলেছেন। তাতে ৭৭৭ রান করেছেন ভারতীয় তারকা, গড় ৮৬.৩৩! কোহলির স্ট্রাইকরেট ১৩৩.০৪। কোহলি সেঞ্চুরি পাননি, হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৯টি, সর্বোচ্চ ৮৯*।
এবার নিশ্চয় ব্যাটের ধারাটা অব্যাহত রাখতে চাইবেন ভারতীয় তারকা। কারণ আগেই ঘোষণা দিয়েছেন এবারের বিশ্বকাপ শেষে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছাড়বেন। অর্থাৎ অধিনায়ক হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের এটাই শেষ সুযোগ কোহলির। সাম্প্রতিক ফর্ম অবশ্য ভালো যাচ্ছে না। আইপিএলে সুবিধা করতে পারেননি কোহলি। তার দলও ফাইনালে উঠতে পারেনি। আইপিএলেও অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন বলে অধিনায়ক হিসেবে শিরোপা জয়ের সুযোগ সেখানে শেষ হয়েছে আগেই।
এবি ডি ভিলিয়ার্স (দক্ষিণ আফ্রিকা): ডি ভিলিয়ার্সের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার ২০১৭ সালে শেষ হলেও এবারের বিশ্বকাপে খেলার সম্ভবনা তৈরি হয়েছিল তার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়লেও বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগে দাপুটে খেলছেন ডি ভিলিয়ার্স। ফলে তাকে অবসর থেকে ফিরিয়ে এনে বিশ্বকাপ খেলানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বোর্ডের এই উদ্যোগে ডি ভিলিয়ার্সও সম্মত হয়েছিলেন। কিন্তু করোনার কারণে বিশ্বকাপ পিছিয়ে গেলে সেই সম্মতিটা আর স্থায়ী হয়নি। গত মে মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর ফিরবেন না।
তার আগের ছয় বিশ্বকাপ মিলিয়ে ৩০ ম্যাচ খেলেছেন ডি ভিলিয়ার্স। তাতে ২৯ ইনিংস ব্যাটিং করে রান করেছেন ৭১৭। গড় ২৯.৮৯, স্ট্রাইকরেট ১৪৩.৪০। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ৫টি, সর্বোচ্চ অপরাজিত ৭৯।
ভারতের আয়োজনে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বিশ্বকাপের খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/
এবি ডি ভিলিয়ার্স ক্রিস গেইল টপ নিউজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বিরাট কোহলি