বিশাল জয়ে সিরিজ শুরু বাংলাদেশের
১৬ জুলাই ২০২১ ২০:০৮ | আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২১ ২১:২০
ব্যাটিংয়ে শুরুতে বিপদে পড়া বাংলাদেশকে টেনে তুললেন লিটন দাস। পরে বোলিংয়ে জিম্বাবুয়ানদের স্রেফ পিষে মেরেছেন সাকিব আল হাসান। দুই মিলিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে জিম্বাবুয়েকে ১৫৫ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বিদেশের মাটিতে ওয়ানডেতে টাইগারদের সবচেয়ে বড় জয় এটা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটা টানা ১৭ জয়। একমাত্র টেস্টে বিশাল জয়ের পর ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেছিলেন, ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা তার দলের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সে হিসেবে ওয়ানডে সিরিজের শুরুটাও দারুণ হলো বাংলাদেশের।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সফরকারীদের শুরুটা কিন্তু ভালো হয়েছিল যাচ্ছে-তা। নতুন বলে জিম্বাবুয়ের পিচগুলো বরাবরই ভয়ঙ্কর। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে একবারও ভাবেননি জিম্বাবুয়ান অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। প্রথম ঘণ্টায় নতুন বল আর পিচের সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশিদেরকে ভুগিয়েছেনও জিম্বাবুয়েন পেসাররা।
শুরুতে ব্লেসিং মুজারাবানি ও দুই বছর পর দলে ফেরা টেন্ডায় চাতারা শুরুতে বড় বড় সুইং আর বাড়তি বাউন্স পাচ্ছিলেন। সুইং আর বাউন্সে বাংলাদেশি ব্যাটারদের নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছেন দুজন। বাংলাদেশি টপ অর্ডার পারেনি দাঁতে দাঁত উইকেটে পড়ে থাকতে। ৭৪ রান তুলতেই চার উইকেট নেই বাংলাদেশের। তবে দীর্ঘ দিন অপ ফর্মে থাকার পর টেস্ট ম্যাচে রানের দেখা পাওয়া লিটন দাস টিকে থেকেছেন।
বল একটু পুরনো হলে এবং উইকেটের আদ্রতা কেটে গেলে স্বাভাবিক ব্যাটিংয়ে দলের রান বাড়িয়েছেন লিটন। মিডল অর্ডারে তাকে বড় সঙ্গ দিয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। সেট হয়ে বড় ইনিংস না খেলতে পারার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়লেও পঞ্চম উইকেট জুটিতে লিটনের সঙ্গে ৯২ রানের জুটি গড়েন মাহমুদুউল্লাহ।
৫২ বলে ৩৩ রান করে ফিরেছেন মাহমুদউল্লাহ। তার পরপরই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে এটা লিটনের তৃতীয় সেঞ্চুরি। ১১০ বলে সেঞ্চুরি ছুয়ে ফিরেছেন ১০২ রানের মাথায়। তার ইনিংসে চারের মার ৮টি। পরে আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মেহেদি হাসান মিরাজ কার্যকরী একটা জুটি গড়ে বাংলাদেশকে আড়াইশ’র ওপারে নিয়েছেন। আফিফ হাফ সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরেছেন ৩৫ বলে ৪৫ রান করেন। তার ইনিংসে চার ১টি, ছক্কা ২টি। মেহেদি ২৫ বলে করেছেন ২৬ রান।
হারারের উইকেটে আড়াইশ পেরিয়ে জেতা সহজ কাজ নয়। তাছাড়া জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইন আপের ফর্ম ও বাংলাদেশি বোলিং লাইনআপের ফর্ম বিবেচনায় বুঝাই যাচ্ছিল এই রান করাটা সহজ হবে না স্বাগতিকদের। সাকিব আল হাসান জিম্বাবুয়ানদের কাছাকাছিও যেতে দিলেন না। ব্যাট হাতে অনেকদিন অফ ফর্মে বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তবে বল হাতে পারফর্ম করেই যাচ্ছেন। আজ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেরা বোলিংই করে দেখালেন সাকিব।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে বড় জুটি গড়তে দেননি। তাসকিন, সাইফউদ্দিনরাও দারুণ বোলিং করেছেন। তাতে ২৮.৫ ওভারে ১২৮ রানেই নবম উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। স্বাগতিকদের ইনিংস শেষ হয়েছে সেখানেই। ইনজুরির কারণে ব্যাটিং করতে পারেননি দলটির দশম ব্যাটার তিমিসেন মারুমা।
স্বাগতিকদের পক্ষে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন রেগিস চাকাভা। ৫১ বলে সর্বোচ্চ ৫৪ রান করেছেন তিনি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান করেছেন ব্রেন্ডন টেলর।
সাকিব ১০ ওভারে ৩০ রান খরচায় নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও শরিফুল ইসলাম।