ইউক্রেনের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে ২৫ বছর পর সেমিতে ইংল্যান্ড
৪ জুলাই ২০২১ ০২:৫১ | আপডেট: ৪ জুলাই ২০২১ ১২:১৫
শেষবার ১৯৯৬ সালের ইউরোতে সেমিফাইনালে খেলেছিল ইংল্যান্ড। এরপর ২০০৪ ও ২০১২ তে কোয়ার্টার ফাইনাল খেললেও আর সেমিতে খেলা হয়নি ইংলিশদের। তবে অবশেষে ২৫ বছরের আক্ষেপ ঘুচল ইংল্যান্ডের। ২০২০ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কাটল ইংলিশরা। এদিন ইংল্যান্ডের হয়ে জোড়া গোল করেন হ্যারি কেইন আর একটি করে গোল আসে হ্যারি মাগুয়ের এবং জর্ডান হ্যান্ডারসনের কাছ থেকে। আর তাতেই ৫৫ বছরের শিরোপা খরা ঘুচানোর স্বপ্নে আরেক ধাপ এগুলো ইংলিশরা।
মেজর কোনো টুর্নামেন্টের নকআউট পর্বে এটি ইংলিশদের দ্বিতীয়বারের মতো চার গোল করার রেকর্ড। শেষবার ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে জার্মানিকে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। এরপরে এই প্রথম ইউরোতে এসে নকআউট পর্বে চার গোলের দেখা পেল তারা।
শেষ ষোলতে শক্তিশালী জার্মানিকে ২-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টারে জায়গা করে নিয়েছিল ইংলিশরা। আর অতিরিক্ত সময়ে রোমাঞ্চকর গোলে ইউক্রেন ২-১ ব্যবধানে সুইডেনকে হারিয়ে উঠে আসে কোয়ার্টারে।
ইউরো ২০২০ এ ফেভারিটের তকমা নিয়েই যাত্রা শুরু করে গ্যারেথ সাউথগেটের দল। শুরুতে ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের জানানও দিয়েছিল তারা। তবে পরের ম্যাচেই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র’তেই তাদের সামর্থ্যের ওপর আবারও ওঠে আঙুল। তবে চেক প্রজাতন্ত্রকে ১-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের পর্বে নাম লেখায় ইংলিশরা। এরপর শেষ ১৬’তে জার্মানিকে ২-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে কোয়ার্টারে জায়গা করে নেয় হ্যারি কেইনরা। আর কোয়ার্টারে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নকআউট পর্বে ইউরোতে ৪-০ গোলের ব্যবধানে জিতে ২৫ বছর পর সেমিফাইনালে উঠল ইংল্যান্ড।
রোমের এস্তাদিও অলিম্পিকোয় আসরে এখন পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে নিজেদের জাল অক্ষত রাখা ইংল্যান্ড এই ম্যাচে সব দিক থেকেই আধিপত্য করেছে। বল দখলে কিছুটা এগিয়ে থেকে গোলের উদ্দেশে মোট ১০টি শট নেয় তারা, যার ৬টি লক্ষ্যে। আর আন্দ্রে শেভচেঙ্কোর দলের সাত শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। যদিও এর কোনোটিই তেমন ভীতি ছড়াতে পারেনি।
ম্যাচের শুরুতেই ইউক্রেন নিজেদের গুছিয়ে ওঠার আগেই চার মিনিটের মাথায় লিড নেয় ইংল্যান্ড। ইউক্রেনের ডি-বক্সের ঠিক সামনে বাঁ দিক থেকে ডি-বক্সের ভেতর হ্যারি কেইনের উদ্দেশে থ্রু বল দেন রহিম স্টার্লিং। দুই ডিফেন্ডারকে পেছনে ফেলে দারুণভাবে বল দখলে নিয়ে ডান পায়ের শটে তা জালে পাঠিয়ে দলকে লিড এনে দেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন।
এরপর প্রথমার্ধের খেলাটা কিছুটা ঝিমিয়ে যাওয়ায় আর দেখা মেলেনি কোনো গোলের। তবে বিরতি থেকে ফিরে প্রথম মিনিটেই লুক শ’র নেওয়া সেট পিস থেকে হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হ্যারি ম্যাগুয়ের। ২-০ গোলের লিড নিয়ে আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে ইংলিশরা। খুঁজতে শুরু করে তৃতীয় গোল। অপেক্ষা খুব বেশি সময় করতে হয়নি ইংলিশদের, মিনিট চারেক পরে লুক শ’র ক্রস থেকে ছয় গজ বক্সের ভেতর থেকে সহজ এক হেডারে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন কেইন। তাতেই মাত্র ৫০ মিনিটের মধ্যে ৩-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে এক প্রকার ম্যাচ নিজেদের করে নেয় ইংলিশরা।
খেলার ৬২তম মিনিটে হ্যাট্রিকের আশায় দুর্দান্ত এক শট নিয়েছিলেন কেইন কিন্তু তাঁর শট কর্নারের বিনিময়য়ে ফেরান ইউক্রেন গোলরক্ষক বুশচান। এরপর ওই কর্নার নিতে যান মেসন মাউন্টের, তাঁর কর্নার থেকে হেডে গোল করে ইউক্রেনের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন জর্ডান হ্যান্ডারসন। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ৪-০ গোলের জয়ে সেমিতে যায় ইংল্যান্ড।
সেমিফাইনালে আগামী ৮ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় ডেনমার্কের মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড।
সারাবাংলা/এসএস
ইংল্যান্ড বনাম ইউক্রেন উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ কোয়ার্টার ফাইনাল টপ নিউজ সেমিফাইনাল হ্যারি কেইন হ্যারি মাগুয়ের