Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সতীর্থদের সঙ্গে আইপিএল’র অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন মোস্তাফিজ

মহিবুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মে ২০২১ ১২:৫৮ | আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ১৬:৪৯

রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে এবার আইপিএলে খেলতে গিয়ে প্রায় প্রতিটি ভেন্যুতেই ট্রু বা স্পোর্টিং উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, যেখানে ব্যাটে বলে সমান দাপট দেখিয়েছেন বোলার, ব্যাটাররা। কিন্তু বিস্ময়কর হল, এমন উইকেটেও তিনি ঠিকই উড়ন্ত ছন্দে বল করেছেন এবং কাঙ্খিত সাফল্যও পেয়েছেন। বিস্ময়কর একারণেই যে বাংলাদেশে এজাতীয় উইকেটে তিনি বলতে গেলে খেলেনই না। অতএব বিদেশ বিভুঁইয়ে তার পারফরম্যান্সও এতটা ভাল হওয়ার কথা ছিল না। তাহলে তিনি কী করে পারলেন? প্রশ্নের উদ্রেক হতেই পারে।

বিজ্ঞাপন

পেরেছেন একারণেই রাজস্থান রয়্যালসের কোচিং স্টাফ প্রায় হাতে কলমে শিখিয়েছেন টি-টোয়েন্টি সংস্করণে এ জাতীয় উইকেটে কোন কৌশল অবলম্বন করলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব। বাধ্য ছাত্রে মত তিনিও তা শিখেছেন। আইপিএলের সেই শিক্ষা ও অভিজ্ঞতাই এবার টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে জাতীয় দলের অনুশীলনে সতীর্থদের সঙ্গে শেয়ার করতে চান লাল সবুজের বাঁহাতি এই পেসার। তার বিশ্বাস এতে করে টিম বাংলাদেশ উপকৃত হবে।

বিজ্ঞাপন

আইপিএলের এবারের আসরে ৭ ম্যাচে ৮.২৯ ইকোনোমি রেটে ৮ উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। যা মূলত বোলিং বৈচিত্র্যের কল্যানেই এসেছে। কখনো স্লোয়ার, কখনো কাটার, বাউন্সার, আবার কখনও বা ইনসুইংয়ে ব্যাটারদের নিপুন হাতে ঘায়েল করেছেন এবং সেই বাস্তবতা তিনি অনুধাবনও করেছেন যে এই জাতীয় উইকেটে সাফল্য পেতে বোলিং বৈচিত্রের কোন বিকল্পই নেই। সেই বার্তাটিই এবার তিনি জাতীয় দলের অন্যান্য পেসারদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান যাতে করে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তারা নিজেদের মেলে ধরতে পারেন। যেহেতু টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উইকেটও আইপিএলের কাছাকাছি মানেরই হয়ে থাকে।

আইপিএল থেকে দেশে ফিরে সারাবাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথাগুলো জানালেন মোস্তাফিজ। কথা বলেছেন প্রাসঙ্গিক আরও অনেক বিষয় নিয়ে। পাঠকদের উদ্দেশে তা তুলে ধরা হলো-

সারাবাংলা: আইপিএলে আপনি বেশ ভাল ছন্দে ছিলেন। কিন্তু করেনার দাপটে মাঝপথে এসেই তা বনধ হয়ে গেল। নিজেকে দুর্ভাগা মনে হয়?

মোস্তাফিজ: আপনি যা বলছেন তা ঠিক আছে। তবে আপনি হয়ত দেখেছেন একটি দলের অনেকেই করেনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আরেকটি দলেও তা ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছিল। এখানে যদি আমার লাভ ক্ষতির কথা হিসেব করি তাহলে দেখা যেত এই সংক্রমন আরো বাড়ত। এতে করে প্লেয়ার, ম্যাচ অফিসিয়ালরাও আক্রান্ত হতে পারতেন। ওভারঅল যদি হিসেব করি বন্ধ হয়েছে খারাপ হয়নি। এতে করে সবারই ভাল হয়েছে।

সারাবাংলা: যেহেতু এবছরই টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। সেহেতু আইপিএলে খেলে নিজেকে প্রস্তুত করার ভাল একটি সুযোগ আপনার তৈরী হয়েছিল। সেই প্রস্তুতিটা কতখানি বাধাগ্রস্থ হল বলে মনে করছেন?

মোস্তাফিজ: যেসব উইকেটে আমি খেলেছি, আমি চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটি দেওয়ার। কারণ এসব উইকেটে আমি আগেও খেলেছি। এখানে সবসময় ট্রু উইকেটই থাকে। প্রতিটি মাঠের উইকেটই ভাল ছিল। তবে আমি যেটা বুঝেছি, এসব ট্রু উইকেটে খেলতে গেলে আমাদের স্কিল আরও বাড়াতে হবে। এখন থেকে আমি যখন দেশে অনুশীলন করব তখন আমি আমাদের বোলারদের বলব তারা যেন ভেরিয়েশন নিয়ে কাজ করে এবং নিজেদের স্কিল আরও বাড়ায়। এতে করে আমাদের দলই উপকৃত হবে।

সারাবাংলা: আপনার দলের দু তিনটি ম্যাচে আপনার বোলিংয়ের সময় ফিল্ডাররা বিশেষ করে জশ বাটলার, বেন স্টোকস ক্যাচ ফেলেছে। শুধূ তাই না যেখানে সিঙ্গেল হওয়ার কথাও নয় প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যান ডাবল নিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়টি কতটা যন্ত্রণা দিয়েছে?

মোস্তাফিজ: আসলে ওদের সঙ্গে আমি এবারই প্রথম খেলেছি। সেকারণেই হয়ত এক আধটু ভুল হচ্ছিল। তবে আস্তে আস্তে কিন্তু ঠিক হয়ে যাচ্ছিল। ওরা ফিল্ডিংয়ের বেশ উন্নতি করছিল। সত্যি বলতে মাঠে কেউই চায় না মিস ফিল্ডিং করতে বা ক্যাচ ফেলতে।

সারাবাংলা: আইপিএলে যেসব ব্যাটসম্যানদের আপনি আউট করেছেন এরা সবাই বিশ্বমানের। এই ব্যাপারটা কী বিশ্বকাপে আপনার আত্মবিশ্বস বুস্ট আপ করবে?

মোস্তাফিজ: অবশ্যই।

সারাবাংলা: এবারের আইপিএলে আপনাকে বোলিংয়ে হয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। সেখানে আপনি প্রমান করেছে। ডেথ ওভারেও বোলিংয়েও প্রতিপক্ষকে রান নেয়া থেকে বিরত রেখেছেন। আপনার কী মনে হয় দায়িত্বটা আপনি খুব ভাল করেই বুঝতে পেরেছেন?

মোস্তাফিজ: দেখেন আমি জাতীয় দলে ঢোকার পর থেকেই ডেথ ওভারে বেশি বল করেছি। আমার মনের ভেতরে গাথাই আছে যে এই জায়গাটায় আমি কম বেশি বল করবই। ওইটা নিয়ে আমার তেমন কোন ভাবনাই আসে না। আমার ভাবনা থাকে যে জায়গাটায় বোলিংয়ে সুযোগ দিবে সে জায়গাটায় আমি যেন অবদান রাখতে পারি, যেন আমাকে দিয়ে দল ‍উপকৃত হয়।

সারাবাংলা: টুর্নামেন্ট শুরুর দিকে অনেকেই ভেবেছিল যে জোফরা আর্চার ও বেন স্টোবসের মত বোলাররা থাকতে একাদশে নিয়মিত আপনার জায়গা হয়ত নাও হতে পারে। সেখানে আপনি জায়গা পাকাপোক্ত তো করলেনই উল্টো পেস বোলিং বিভাগে দলের নেতৃত্ব দিলেন। এটা কেমন লেগেছে?

মোস্তাফিজ: সত্যি বলতে ওরা আমার উপরে আস্থা রেখেছে। আমিও চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটি দেওয়ার। কতটুকু দিতে পেরেছি সেটা আমার দল, দর্শক, আপনারা ভাল বলতে পারবেন।

সারাবাংলা: ‍ উইকেটে কেমন সহায়তা পেয়েছেন? এজন্যই জানতে চাচ্ছি আপনার স্লেয়ার ও কাটার অসাধারণ ধরেছে।

মোস্তাফিজ: আগেই বললাম উইকেটে ট্রু ছিল তাই সাহায্যও পেয়েছি।

সারাবাংলা: যেভাবে স্লোয়ার ও কাটার পেয়েছেন তাতে মনে হয়েছে শুরুর সেই মোস্তাফিজ?

মোস্তাফিজ: সত্যি বলতে আমার রিদমটা খুবই ভাল ছিল।

সারাবাংলা: নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলে এলেন। আপনাকে কতটা আপন করে নিয়েছিল রাজস্থান রয়্যালস?

মোস্তাফিজ: এই দিয়ে আমি আইপিএলের চারটি আসরে খেললাম। দুটি হায়দ্রাবাদে, একটি মুম্বাইয়ের হয়ে আর এবার রাজস্থানে। আসলে এরা অনেক বড় ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং পেশাদার। এখানে কাউকে বিন্দুমাত্র অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই। দলের সবাই খুব সাপোর্ট করেছে। আমি যে নতুন তা বুঝতে দেয়নি। শুধু আমার দলই না, প্রতিটি দলের ম্যানেজমেন্টই অনেক সাজানো গোছানো।

সারাবাংলা: বোলিংয়ে রাজস্থান রয়্যালসকে নেতৃত্ব দেওয়ার পরে নিশ্চয়ই আপনি আগের চেয়ে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন?

মোস্তাফিজ: অবশ্যই তাই। নিজের সেরাটি দিলে সবই সম্ভব। তবে আমার কাছে দেশের খেলাই আগে।

সারাবাংলা: শ্রীলংকা সিরিজে আপনার লক্ষ্য কী?

মোস্তাফিজ: প্রথমে আমি ঠিকমত অনুশীলন করতে চাই। সিরিজ এখনো বেশ কিছুদিন বাকি আছে। আমার যুতসই প্রস্তুতি লাগবে।

সারাবাংলা: কী মনে হচ্ছে ঘরের মাটিতে ওদের বিপক্ষে ভাল করা কতখানি সম্ভব?

মোস্তাফিজ: বিশ্বাস আছে ভাল কিছুই হবে ইনশাআল্লাহ।

** সারাবাংলার ঈদ আয়োজনে আগামীকাল প্রকাশিত হবে তারকা পেসার তাসকিন আহমেদের সাক্ষাৎকার।

সারাবাংলা/এমআরএফ/এসএস

আইপিএল অভিজ্ঞতা টপ নিউজ টাইগার পেসার পেসার মোস্তাফিজুর মোস্তাফিজুর রহমান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর