রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা টাইগারদের
২৩ এপ্রিল ২০২১ ১১:৪৮ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ১৩:৪২
পাল্লেকেলেতে প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনে এসে রানের পাহাড় গড়ে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ১৮ ওভারে ৬৭ রান তোলে মুমিনুল হক অ্যান্ড কোং। আগের দিনের অপরাজিত মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস তুলে নেন অর্ধশতক। শেষ অবধি ৭ উইকেট হারিয়ে ৫৪১ রানে ইনিংস ঘোষণা করে সফরকারিরা।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ২য় দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশের ব্যাটিং সৌন্দর্য থামিয়ে দিয়েছিল বৃষ্টি। তারপর খেলা শুরু হলেও মাত্র ৭ ওভার পর বৃষ্টিভেজা মাঠ আর আলোকস্বল্পতার কারণে আম্পায়াররা দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ ঘোষণা করেন। তখনও খেলা বাকি ২৫ ওভার। দ্বিতীয় দিনে মুমিনুল হকের দলের আফসোস এই একটাই। এই ২৫ ওভার খেলা হলে বাংলাদেশের স্কোরটা হয়তো আরও সুন্দর দেখাতো! ৪ উইকেটে ৪৭৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষে করে বাংলাদেশ।
এর আগে ২ উইকেটে ৩০২ রান নিয়ে আজ দ্বিতীয় দিন শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আগের দিনে অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের জুটি গড়া নাজমুল হোসেন শান্ত ১২৬ রানে ও মুমিনুর হক সৌরভ ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। প্রথম দিন শেষে প্রেস কনফারেন্সে শান্ত বলেছিলেন, আজকের সকালটা ভালোই ভালোই কাটিয়ে দিতে পারলে বড় ইনিংস অনেকটা নিশ্চিত। সকালে শুধু শান্ত নয়, মুমিনুলও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন।
তামিম ইকবালের শুরুর আক্রমণ আর শান্তর শান্ত ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কান বোলিং আগের দিনই খেই হারিয়ে ফেলেছিল। খেই হারানো লঙ্কানদের আজ দ্বিতীয় দিনে পাত্তাই দেননি শান্ত-মুমিনুল জুটি। ৬৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শুরু করা মুমিনুল প্রথম সেশনেই সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। টেস্ট ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ অধিনায়কের এটা ১১তম সেঞ্চুরি, কিন্তু বিদেশে প্রথম। মুমিনুল বিদেশে রান করতে পারেন না, এই অপবাদের ভালো একটা জবাব আজ দিয়েছেন কক্সবাজারের ক্রিকেটার। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ নিয়ে চতুর্থ সেঞ্চুরি পেলেন মুমিনুল।
শান্তও দেড়শ পেরিয়ে যান দিনের প্রথম সেশনেই। অভিষেক সেঞ্চুরিতে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলার সম্ভবনা জাগিয়ে শান্ত যখন ফিরলেন ততোক্ষণে বাংলাদেশ রান পাহাড়ের চূড়ায়। দলীয় ৩৯৪ রানের মাথায় ১৬৩ রান করে ফিরেছেন তরুণ তারকা ক্রিকেটার। তার ইনিংসে চার ১৭টি, ছক্কা ১টি। শান্ত আর কিছুক্ষণ টিকে থাকলে কয়েকটা রেকর্ড হতে পারত। এর আগে বাংলাদেশ কখনোই ২ উইকেটে ৪০০ রান তুলতে পারেনি, শান্ত ফেরার আগে আর ৬ রান হলে আজ সেটা হতে পারত। টেস্ট ক্রিকেটে বলের হিসেবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটিটি মোহাম্মদ আশরাফুল ও মুশফিকুর রহিমের দখলে। ২০১৩ সালে এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১৮ বলের জুটি গড়েছিলেন দুই তারকা, আজ শান্ত-মুমিনুলের জুটি ভেঙেছে ৫১৪ বলে।
দীর্ঘ সময়ের সঙ্গী শান্ত ফেরার পর বেশিক্ষণ মাঠে থাকতে পারেননি মুমিনুল হকও। দলীয় ৪২৪ রানের মাথায় ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে থিরিমান্নের ক্যাচ হয়েছেন মুমিনুল। তার আগে ৩০৪ বল খেলে ১১টি চারের সাহায্যে খেলেছেন ১৩৬ রানের ঝলমলে একটা ইনিংস। জুটির রেকর্ড গড়ে এই দুজন ফেরার পর উইকেটে জমে যাচ্ছিল মুশফিকুর রহিম ও লিটন কুমার দাস জুটি। বৃষ্টি বিড়ম্বনা আর আলোক স্বল্পতার প্রতিবন্ধকতা সেখানেই শুরু।
এরপর ২য় দিন শেষে ১০৭ বল খেলে ৪টি চারে ৪৩ রানে মুশফিক আর লিটন ৩৯ বলে ২ চার ১ ছয়ে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
তৃতীয় দিনে এসে ইনিংসের ১৬০তম ওভারের তৃতীয় বল ধনঞ্জয়কে লং অনে ড্রাইভ করে এক রান নিয়ে পূর্ণ করেন নিজের অর্দশতক। অর্ধশতক তুলে নিতে মুশফিক খেলেন ১২০টি বল। এটি তার ক্যারিয়ারের ২৩তম অর্ধশতক। আর লঙ্কানদের বিপক্ষে ৮ম অর্ধশতক। মুশফিকের পর নিজের ক্যারিয়ারের ৮ম অর্ধশতক তুলে নেন লিটন দাস। তবে এরপরে আর বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে ৬৭ বলে ৫০ রানে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন লিটন।
এরপর দ্রুতই দুটি উইকেট হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। মেহেদি মিরাজ (৩) ও তাইজুল ইসলাম (২) যথাক্রমে দলীয় ৫১৫ ও ৫২৪ রানে ফেরেন। শেষ পর্যন্ত তাসকিনকে (৬) সঙ্গে নিয়ে মুশফিকুর রহিম (৬৮) অপরাজিত থাকেন। আর টাইগার অধিনায়ক ঘোষণা করেন ৫৪১ রানে ইনিংস।
সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড:
প্রথম ইনিংস:
বাংলাদেশ: ৫৪১/৭ (ডিক্লেয়ার); (তামিম ৯০, সাইফ ০, শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, মুশফিক ৬৮*, লিটন ৫০, মিরাজ ৩, তাইজুল ২ এবং তাসকিন ৬*); (লাকমাল ৩৬-১৪-৮১-১, ফার্নান্দো ৩৫-৯-৯৬-৪, লাহিরু ২৮-৪-৮৮-১, ধনঞ্জয় ৩০-১-১৩০-১)।
সারাবাংলা/এসএস
টপ নিউজ তৃতীয় দিন প্রথম টেট মুশফিকুর রহিম-লিটন দাস শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ