অবশেষে নেপাল গেরো খুলল
১৩ নভেম্বর ২০২০ ১৯:০৮ | আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ২০:০৬
দশম মিনিটে নাবিব নেওয়াজ জীবনের গোলে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ এক গোল করলেন মাহবুবুর রহমান সুফিল। হণ্য হয়ে খুঁজে গোল পায়নি নেপাল। শেষ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে হওয়া আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচটিতে নেপালের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ ফুটবল দল।
নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অতীতটা ছিল ভুলে যাবার মতো। একটা সময় বলে-কয়ে হারানো দলটার বিপক্ষে সর্বশেষ তিন ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৩ ও ২০১৮ সালের সাফে হারার পর অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে নিয়ে হওয়া এসএ গেমসেও হিমালয়ের ধার ঘেঁষে থাকা দেশটির বিপক্ষে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। তার একটা ‘বদলা’ নেওয়ার তাড়না ছিলই। তবে করোনার কারণে দীর্ঘ দশ মাস ফুটবলের বাইরে থাকা বাংলাদেশি ফুটবলাররা ‘বদলা’ নিতে কতোটা প্রস্তুত সেটা নিয়ে শঙ্কাও ছিল।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শঙ্কা কী দারুণভাবেই না দূর করলেন জেমি ডে’র ছাত্ররা। ম্যাচের দশম মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশি কোচ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই হলেন বিলাসী। মাঝমাঠে দুর্দান্ত খেলতে থাকা অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া, মানিক মোল্লা ও স্ট্রাইকার নাবিব জীবনকে তুলে নেন জেমি। বুঝাই যাচ্ছিল, কাতার ম্যাচের আগে সেরা ফুটবলারদের চোটে পরার শঙ্কা থেকেই এই কাজ করেছেন বাংলাদেশ কোচ। তবে সেরা তিন ফুটবলারকে তুলে নিলেও নেপাল ঘাড়ে উঠে বসতে পারেনি। দারুণ এক প্রতিআক্রমণ থেকে তারপর বাংলাদেশকে গোল এনে দেন সুফিল। দীর্ঘদিন পর ফুটবলে ফিরেই পাওয়া এই জয় নিশ্চয় বাড়তি তৃপ্তি দিবে বাংলাদেশ সমর্থকদের।
ম্যাচের শুরুতেই আজ নেপালকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বনাথ ঘোষের লম্বা থ্রোয়ে তপু বর্মন মাথা ছোঁয়াতে পারলে নবম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বাংলাদেশ। পরের মিনিটে আর ভুল করেননি জীবন। সাদ উদ্দিনের ডান দিক থেকে উঠা আক্রমণে বল পেয়ে দারুণ এক শটে বল জালে জড়িয়ে দেন আবাহনীর স্ট্রাইকার।
২১ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া হয় বাংলাদেশের। জীবনের দারুণ এক ক্রসে মাপা হেড নিয়েছিলেন ইব্রাহিম। কিন্তু প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গালে লেগে তা প্রতিহত হয়। ২৫ মিনিটে মানিক মোল্লার নেওয়া দূরপাল্লার শট কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক। ৩৯ মিনিটে নেপালের অঞ্জন বিসটার দুর্বল শট সহজেই আয়ত্ব করেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক জিকো। প্রথমার্ধে নেপালের এই একটাই গোলমুখে শট।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বাংলাদেশি কোচ সেরা তিন ফুটবলারকে তুলে নিলেও খেলার গতি খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য আক্রমণের গতি বাড়িয়ে দিয়েছিল নেপাল। ৭৫ মিনিটে কিরণ কুমার লাবুর ফিস্ট অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পরের মিনিটে অনন্তা তামাংয়ের হেড কর্ণারের বিনিময়ে ঠেকান জিকো।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় গোল পেয়েছে ৮০ মিনিটে। সোহেলের বাড়ানো বল ধরে বাঁ দিক দিয়ে দ্রুত ঢুকে ঠান্ডা মাথায় বল জালে জড়িয়ে দেন সুফিল। এরপর তপু বর্মনকে উঠিয়ে আরেক ডিফেন্ডার ইয়াসিন খানকে নামান বাংলাদেশি কোচ। শেষ দিকে নেপাল গোলের জন্য তোড়জোড় করলেও সফল হতে পারেনি। যাতে শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে বাংলাদেশ।
দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী মঙ্গলবার। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সেই খেলাটিও শুরু হবে বিকেল ৫টায়।