রোমাঞ্চকর ম্যাচে অজিদের হারিয়ে সিরিজে ফিরল ইংল্যান্ড
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১৯
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস জিতা প্রথম ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। তার সিদ্ধান্তের প্রতিদান ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা দিতে না পারলেও বোলারদের দাপটে রোমাঞ্চকর ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ২৪ রানে জয় পায় ইংল্যান্ড। আর সেই সুবাদে প্রথম ওডিআই হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১’এ সমতায় ফিরেছে স্বাগতিকরা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ড যে ভুল করেছে তা মনে করিয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়ার পেস বোলিং বিভাগ। দলীয় সংগ্রহ ২৯ হতে না হতেই দুই ওপেনারকে হারায় স্বাগতিকরা, যার মধ্যে জনি বেয়ারেস্ট্রোকে শূন্য রানেই ফেরান মিচেল স্টার্ক আর জেসন রয় (২১) ফেরেন রান আউটে কাঁটা পড়ে। এরপর জো রুট এবং অধিনায়ক ইয়ন মরগান মিলে প্রতিরোধ গড়েন। তৃতীয় উইকেটে এই দুইজন মিলে গড়েন ৬১ রানের জুটে। এরপর দলীয় ৯০ রানে রুট ৩৯ রান করে ফিরলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ইংলিশদের ব্যাটিং লাইন আপ।
এরপর একে একে জশ বাটলার (৩), ইয়ন মরগান (৪২) করে ফিরলে বাকিরা যেন আশা যাওয়ার মিছিলে নাম লেখান। আর অজিদের হয়ে যেন অগ্নিগোলক ছুড়তে থাকেন মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজেলউডরা। অন্যদিকে অ্যাডাম জাম্পার ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে যায় স্বাগতিকরা। শেষ দিকে টম কুরান এবং আদিল রশিদের দৃঢ়তায় নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান। ইংলিশদের হয়ে শেষ দিকে কুরান ৩৭ এবং রশিদ করেন ৩৫ রান। আর অজিদের হয়ে অ্যাডাম জাম্পা ১০ ওভারে ৩৬ রানে ৩ উইকেট, স্টার্ক ১০ ওভারে ৩৮ রানে ২ উইকেট আর হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স এবং মিচেল মার্শ একটি উইকেট তুলে নেন।
সামনের জয়ের লক্ষ্য মাত্র ২৩২ রান। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অজিদের সামনে এই লক্ষ্য মামুলিই ছিল। তবে শুরুতেই মাত্র ৯ রানে ডেভিড ওয়ার্নারের (৬) উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে অজিরা। এরপর দলীয় সংগ্রহ ৩৭ হতেই ফেরেন মার্কাস স্টইনিস (৯)। এরপর অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ এবং মার্নাস লাবুশেন মিলে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১০৭ রানের দুর্দান্ত এক জুটি। আর তখন অজিদের জয় কেবল সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। কিন্তু রোমাঞ্চের যে তখনও বাকি।
অজিদের স্কোরবোর্ডে তখন রান সংখ্যা ১৪৪, এরপর দলের স্কোরবোর্ডে মাত্র তিন রান যোগ হতেই চার চারজন ব্যাটসম্যান ধরেন প্যাভিলিয়নের পথ। লাবুশেনকে (৪৮) এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে শুরুটা করেন ক্রিস ওকস। এর মাঝখানে কেবল মিচেল মার্শের (১) উইকেটটা তুলে নেন জফরা আর্চার। তারপর একাই অজিদের ব্যাটিং লাইনআপ ধসিয়ে দেন ওকস। একে একে তুলে নেন অ্যারণ ফিঞ্চ (৭৩) এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের (১) উইকেট। ১৪৪ রানে ২ উইকেট থেকে ১৪৭ রানে ৬ উইকেটের দলে পরিণত হয় অস্ট্রেলিয়া। আর তখনই জয়ের আশা ভঙ্গ হয়ে যায় অজিদের।
এরপর খুঁটি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন অ্যালেক্স ক্যারি। তবে বাকি কেউই তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে পারেনি। আশা যাওয়ার মিছিলে থাকে অজি ব্যাটসম্যানরা। প্যাট কামিন্সকে নিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেন ক্যারি। তবে তখনই ইংলিশদের ত্রাতা হয়ে আসেন টম কুরান। টানা তিন অজি ব্যাটসম্যানকে নিজের শিকার বানান তিনি। শেষ দিকে হ্যাজেলউডকে নিয়ে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টা করেন ক্যারি তবে ব্যাক্তিগত ৩৬ রানে আদিল রশিদের শিকার হলে ৮ বল বাকি থাকতেই ২০৭ রান অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। আর তাতেই ২৪ রানের জয় পায় স্বাগতিক ইংল্যান্ড। ইংলিশদের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস, জফরা আর্চার এবং টম কুরান আর বাকি একটি উইকেট তুলে নেন আদিল রশিদ।
এর আগে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে ১৯ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০’তে এগিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই সময়াত ফিরেছে ইংলিশরা। আর সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হবে দুই দল।
ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া ইংল্যান্ডের জয় ওডিআই সিরিজ টপ নিউজ দ্বিতীয় ওয়ানডে সিরিজে সমতায়