করোনাকালে ধানমন্ডি ক্রিকেট একাডেমির অনুকরণীয় উদ্যোগ
১৪ জুলাই ২০২০ ১৩:১৮ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২০ ১৫:৩৮
করোনাকালে দেশের ক্রিকেট ক্লাবগুলো যখন কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, কর্মী ছাঁটাই করছে এবং আর্থিক সংকট ভুগছে ঠিক তখন ধানমন্ডি ক্রিকেট একাডেমি নিয়মিতই তাদের কর্মীদের বেতন দিয়ে যাচ্ছে। আর এই কাজটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে তারা নিয়েছে অনুকরণীয় এক উদ্যোগ। একাডেমির সাবেক, বর্তমান প্লেয়ার ও সদস্যদের আর্থিক অনুদানের মাধ্যমে গড়ে তুলেছে ‘কোভিড-১৯ তহবিল’। সেই তহবিল থেকে নিয়মিত একাডেমির স্টাফদের মাসিক বেতন পরিশোধ করছে। এবং কাজটি আরও সুচারুভাবে পরিচালনার জন্য একাডেমি কর্তৃপক্ষ বর্তমান ও সাবেক ছাত্রদের অভিভাবকদের প্রতি আর্থিক অনুদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিষয়টি সারাবাংলাকে অবহিত করেছেন ধানমন্ডি ক্রিকেট একাডেমির সভাপতি আবু মোহাম্মদ সবুর। আলাপকালে অভিজ্ঞ এই সঙ্গঠক জানান, ‘২০-২২ বছর যাবত আমরা একটি ভালো ক্রিকেট ক্লাব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চেষ্টা করে আসছি। একজন প্রধান কোচ, দু’জন সহকারি কোচ, একজন অফিস ম্যানেজার ও দু’জন গ্রাউন্ডসম্যান সহ মোট ছয় সদস্যের স্টাফ রয়েছে একাডেমিতে।’
শুধুই যে নামে মাত্র একটি একাডেমি তারা রাজধানীর কেন্দ্রে তারা গড়ে তুলেছেন তা কিন্তু নয়। এখান থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়রা জায়গা করে নিচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ও বিসিবি’র বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের আঙিনায়ও। কথাগুলো বেশ গর্বভরেই বললেন সবুর।
‘আমাদের ছাত্র সাইফ হাসান এখন জাতীয় দলে খেলছে। এছাড়াও বেশ কয়েকজন প্লেয়ার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বয়স ভিত্তিক দলে খেলছে। আমরা আমাদের ছাত্রদের নিয়ে গর্বিত এবং আমরা বিশ্বাস করি ভবিষ্যতেও আরো অনেকেই এভাবে সফল হবে। তবে আমরা চাইছি এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে থাকতে। আমাদের ছেলেদের দক্ষ ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে যারা এখনে সংগ্রাম করছে তাদেরকে আমরা বঞ্চিত করতে পারিনা। আমাদের উদ্দেশ্য মহৎ। আমরা কোনো লাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে চাচ্ছি না। আপনারা জানেন এটা একটা অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। করোনা পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাদের সাহায্য করে যেতে চাইছি।’ যোগ করেন সবুর।
এদিকে মহামারির সময়ে নিজ কর্মস্থলের এই মহৎ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন হেড কোচ সাদিক উজ্জামান পিন্টু।
‘ঢাকার আরো বেশ কয়েকটি ক্রিকেট একাডেমীর সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। আমি জানতে পেরেছি মহামারিতে ক্লাবগুলো এই সময়ে খুবই অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেই তুলনায় ধানমন্ডি ক্রিকেট একাডেমি নিয়মিতভাবেই আমাদের স্টাফদের বেতন পরিশোধ করছে। শুধু তাই নয় একাডেমী কর্তৃপক্ষ বলেছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত তারা আমাদেরকে এভাবেই সাহায্য করে যাবেন।’
‘আমাদের একাডেমিতে ৭০ জনেরও বেশি ক্রিকেটার আছে। তাদের সিংহভাগই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বয়স ভিত্তিক দল খেলছে এবং অনেকেই তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট খেলে থাকে। যারা বয়স ভিত্তিক ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট খেলছে তারা বিনামূল্যে একাডেমীর সুযোগ সুবিধা নিতে পারেন। আমার জানা নেই ঢাকার অন্য কোনো একাডেমিতে এমন সুযোগ সুবিধা আছে কিনা।’ যোগ করেন সাদিকউজ্জামান।
করোনায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের ক্রিকেট ক্লাবগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে ধানমন্ডি ক্রিকেট একাডেমি হতে পারে দৃষ্টান্তস্থাপনকারী ও অনুকরণীয়।
করোনাকালে অনুকরণীয় উদ্যোগ করোনাভাইরাস ধানমন্ডি ক্রিকেট একাডেমি