বিসিবি’র সতর্কতা উপেক্ষা করলেন মুশফিক!
৭ জুলাই ২০২০ ১৫:৩২ | আপডেট: ৭ জুলাই ২০২০ ১৫:৫৪
করোনাকালে ক্রিকেটারদের ঘরে থাকার কড়া নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড-বিসিবি। মহামারির সময়ে পইপই করে বলা হয়েছে তারা যেন ঘরের বাইরে না যান। এবং তারা যেন শারিরীক ও মানসিকভাবে ফিট থাকেন সেই লক্ষ্যে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ থেকে ফিটনেসের হরেক রকমের মডিউলও সরবরাহ করা হচ্ছে। এমনকি জিমনেশিয়ামের সরঞ্জামাদিও বিনামূল্যে বাসায় নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া আছে। বিসিবির উর্ধতন মহল থেকে একথাও বলা হয়েছে দেশের করোনার সংক্রমন কমে এলেই স্বাস্থবিধি মেনে অনুশীলন ফেরানো হবে। কিন্তু দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকাটা বোধ হয় মুশফিকুর রহিমের আর ভাল ঠেকছিল না। তাই গতকাল রাজধানীর বেরাইদে ফোর্টিস গ্রুপের মাঠে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন।
বিষয়টি অনেকটা বিসিবির সতর্কতা উপেক্ষা করার মতই। যেহেতু তারা স্পষ্টত বলে দিয়েছেন এই সময়টিতে বাসায় থাকতে হবে। আর যদি কেউ অনুশীলন করতে চায় সেটা স্বাস্থবিধি মেনে হোম অব ক্রিকেটের ভেন্যুতেই করতে হবে। কিন্তু মুশফিক তো তা শুনলেন না!
এদিকে অনুশীলনের খবর শুনে বিসিবি সাফ জানিয়ে দিয়েছে জাতীয় দলের কোন ক্রিকেটার যদি ব্যক্তিগত কোন প্রতিষ্ঠানের মাঠে অনুশীলন করেন এতে তাদের কিছু বলার নেই বা করার নেই। কিন্তু কিছু হযে গেলে এর দায়দায়িত্ব বিসিবি নিবে না। পুরোটাই তাদের নিতে হবে।
জুনের শুরুতে মুশফিকুর রহিম বিসিবি বরারবর আবেদন করেছিলেন যে তিনি মিরপুর হোম অব ক্রিকেটের ভেন্যুতে অনুশীলন করতে চান। কিন্তু দেশের করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে তাকে অনুশীলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি খালি চোখে দেখলে হয়ত মনে হবে তার প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আসলে তা নয়। মহামারিকালে মুশফিকুর রহিমের মত দেশ সেরা ব্যাটসম্যানের স্বাস্থগত বিষয়টি নিশ্চিত করতেই বিসিবি এই সিদ্ধান্ত শুনিয়েছিল। আখেরে তিনি তো এদেশের অমূল্য সম্পদ।
শুধু মুশফিকই কেন? আরো বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার তখন অনুশীলনের আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। কিন্তু বিসিবি তাতে সাড়া দেয়নি। পাছে তারা করোনাক্রান্ত হন। উল্টো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তাদের আরো সতর্ক এবং নিরাপদে থাকার পরামর্শ দিচ্ছিল কেননা গেল মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই দেশের করোনা পরিস্থিতি বিরুপ আকার ধারণ করতে থাকে। মুশফিকদের অভিভাবক সংস্থা বারবারই পরামর্শ দিয়েছে ঘরে বসে ফিটনেস ট্রেনিং করতে। তারা এও বলেছে, দেশের করোনা পরিস্থিরি একটু উন্নতি হলেই অনুশীলন ফেরানো হবে। যেহেতু সামনে কোন সিরিজ নেই তাই তাড়াহুড়োর আবশ্যকতাও তারা দেখছিলেন না। অর্থাৎ জাতীয় দলের প্লেয়ারদের শতভাগ সুরক্ষার নিশ্চয়তা দিতে তারা প্রাণান্ত চেষ্টা করে আসছেন।
কিন্তু বিসিবি’র সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঠিক যেন একমত হতে পারছিলেন না মুশফিকুর রহিম। দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে হয়ত তিনি ক্লান্ত ও বিষন্ন বোধ করছিলেন। সেকারণেই গতকাল রাজধানীর বেরাইদে ফর্টিস গ্রুপের মাঠে নেমে পড়েছেন অনুশীলনে।
করোনার সময়ে স্বাস্থবিধি না মেনে মুশফিকের মত অভিজ্ঞ, সিনিয়র প্লেয়ারের এভাবে অনুশীলনে নেমে যাওয়ার খবর শুনে বিসিবি সিইও নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন অবশ্য স্তম্ভিত হয়ে যাননি। শুধু বললেন, জাতীয় দলের প্লেয়াররা অবশ্যই বিসিবির ব্যবস্থাপনায় অনুশীলন করবেন। সেজন্য সকল প্রস্তুতিই তারা নিয়েছেন। তবুও বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের আরো সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এরপরেও যখন মুশফিক অনুশীলনে নেমে গেছেন, তাদের কিছু বলার বা করার নেই।
মঙ্গলবার (৭ জুলাই) সারাবাংলাকে তিনি একথা জানান।
সুজন বললেন, ‘অনুশীলনের জন্য আমাদের সুযোগ সুবিধা সব প্রস্তুত করা আছে। আমাদের দলের এলিট প্লেয়াররা অনুশীলন করতে চাইলে তাদের বলা আছে। তারপরেও তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে যেন আরো সতর্ক থাকে। এখন এরপরেও যদি কেউ ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেটা নিজ দায়িত্বে করবে। এখানে আমাদের বলার বা করণীয় কিছু নেই। জাতীয় দলের প্লেয়াররা আমাদের অ্যারেঞ্জমেন্টে অনুশীলন করবে। কেননা আমরা তাদের সব ধরণের সুযোগ সুবিধাদি দিচ্ছি। যদি তারা বাসায় বসেও অনুশীলন করতে চায় আমাদের জিমনেশিয়ামে যেসকল অনুশীলন সরঞ্জাম আছে সেগুলো তাদের অফার করা হয়েছে। আমাদের এখানে করবে না, প্রাইভেট অরগানাইজেশনে করবে সেটা করলে ব্যক্তিগত দায়িত্বে করবে। ’