মাঠে ক্রিকেট ফেরাতে তাড়া নেই বিসিবির: সিইও
৩১ মে ২০২০ ১৪:০৩ | আপডেট: ৩১ মে ২০২০ ২৩:১৯
ঢাকা: দুই মাস পেরিয়ে তিন মাস হতে চলেছে, অথচ দেশে করোনা পরিস্থিতির সিকিভাগ উন্নতিও নেই। বরং দিন দিন সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলেছে। এমন গোলমেলে পরিস্থিতিতেই গেল ৩০ মে সাধারণ ছুটি উঠিয়ে নিয়েছে সরকার। আজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব প্রতিষ্ঠানই স্বল্প পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহনও চালু হয়েছে। দুরপাল্লার বাস-ট্রেন রাস্তায় নেমেছে, নদীপথেও চলতে শুরু করেছে লঞ্চ, আকাশপথে বিমানের উড্ডয়নও দেখা যাবে! অর্থাৎ কিছুটা হলেও স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ফিরে গেছে দেশ!
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠতেই পারে, অন্যান্য সেক্টরের মতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও কি তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে ক্রিকেট ফেরাতে যাচ্ছে? না, এই মুহূর্তে এমন কোনো সংবাদ দিতে পারেননি বিসিবি সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজন। বরং দেশের করোনা পরিস্থিতি আমলে নিয়ে লাল সবুজের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ এই সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী ক্রিকেট ফেরাতে কোনো রকম তাড়াহুড়ো করতে রাজি নন।
এর পেছনে কারণ জানিয়েছেন দু’টি। প্রথমত, যদি কোনো কারণে কোনো ক্রিকেটার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব পুরোটাই বোর্ডের ওপরে বর্তাবে। দ্বিতীয়ত, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সবই কমবেশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জাতীয় উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যা এই মুহুর্তে দেশের অর্থনীতির চাকা সচলে অতি জরুরি। পক্ষান্তরে ক্রিকেট কিন্তু তা নয়, স্রেফ বিনোদনেরই একটি অনুষঙ্গ মাত্র, দেশের এমন পরিস্থিতিতে যে বিনোদন হয়তো মোটেই কাম্য নয়।
তবে হ্যাঁ, যেহেতু বাংলাদেশ ক্রিকেট আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিচরণ করে থাকে, সেহেতু তারও ভবিষ্যৎ সফর পরিকল্পনাও আছে, করোনা শেষ হলেই যা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হবে। তাছাড়া ইদানীং ইংল্যান্ডের বিভিন্ন ভেন্যুতে স্টুয়ার্ট ব্রড, জেমস এন্ডারসনদের বোলিংয়ের ভিডিও প্রায়ই দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ ক্রিকেট ফিরছে— এমন একটি আবহ বিশ্বব্যাপীই বিরাজমান।
সুজনও এর সঙ্গ দ্বিমত পোষণ করেননি। এবং সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তার বোর্ডও ক্রিকেট ফেরাতে মুখিয়ে আছে। তবে এর সবই তারা করতে চাইছেন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণপূর্বক ধীর গতিতে, সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করে এবং আইসিসি’র গাইডলাইন মেনে।
সারাবাংলার সঙ্গে একান্তে আলাপকালে কথাগুলো জানালেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘সরকারের যে নির্দেশনা দিয়েছেন, সেটা স্পোর্টস ফেডারেশনের জন্য নয়। এটা হচ্ছে জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি সম্পর্কে নির্দেশনা। স্পোর্টস কিন্তু মানুষের জীবনের অনেক পরের একটি অংশ। এটা বিনোদনের একটি অংশ। এদেশের ১০ ভাগ মানুষের জন্যও স্পোর্টস এখন গুরুত্বপূর্ণ না। মানুষ এখন আউটডোর বিনোদনের কথা ভুলেও ভাবছে না। বরং কী করে সুস্থ থাকা যায়, সেটা নিয়েই বেশি উদ্বিগ্ন। তবে আমরা তো অবশ্যই ভাবছি কী করে খেলা ফেরানো যায়। কেননা আমাদের এফটিপি আছে, প্রিমিয়ার লিগ আছে। এর সবকিছু নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা আছে।’
‘আমরা আমাদের কাজ করে যাচ্ছি। প্রথমে আমরা অফিস প্রস্তুত করব, জীবাণুনাশ করতে যা যা করা প্রয়োজন, করব। প্লেয়ারদের অনুশীলন সুবিধা শতভাগ নিশ্চিত করতে যা যা করার, সেগুলো করব। এগুলো প্রস্তুত করার পরে যদি বাস্তব পরিস্থিতি বলে যে আমরা অনুশীলন শুরু করতে পারব, তাহলে আইসিসির প্রটোকল মেনে একটি গাইডলাইনও তারা দিয়েছে, সেটা অনুসরণ করে অন্যান্য দেশ কিভাবে ক্রিকেট ফেরাচ্ছে, তা দেখে তারপর কাজ শুরু করব। এখানে তাড়াহুড়ো করার কোনো সুযোগ নেই। এমন একটা অবস্থা একটা দুর্ঘটনা ঘটলে এই দায়-দায়িত্ব ক্রিকেট বোর্ডের ওপরই বর্তাবে,’— বলেন বিসিবি সিইও।
এদিকে সাধারণ ছুটি উঠে যাওয়ায় অনেকেই ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন ৩১ মে থেকে বিসিবিও বুঝি স্বল্প পরিসরে অফিস খুলে দেবে। তাদের জন্য সুজনের বক্তব্য, ‘বিসিবি কখনোই বন্ধ থাকেনি। যখন থেকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম শুরু হয়েছে, তখন থেকেই কাজ করে আসছে। কোনো অবস্থাতেই বিসিবির কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। অতএব চালু করা বা বন্ধ করার কোনো অবকাশ এখানে নেই।’
টপ নিউজ নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সিইও