Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিদায়ী ম্যাচে অধিনায়ককে দু’হাত ভরে দিলেন তামিম-লিটন


৬ মার্চ ২০২০ ২২:৪১

সিলেট থেকে: অধিনায়ক হিসেবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচটিই মাশরাফি বিন মুর্ত্তজার শেষ। এরপর আর কোনদিন লাল সবুজের জার্সিতে নেতৃত্ব দিতে দেখা যাবে না এদেশের ক্রিকেটের দিন বদলের এই দলপতিকে । সেটা ভেবেই বোধ হয় এভাবে গর্জে উঠলেন লিটন দাস ও তামিম ইকবাল। তাদের ব্যাটিংয়ে গর্জনে মূর্ছা গেল জিম্বাবুয়ের বোলিং স্কোয়াড্রন, তছনছ হয়ে গেল বাংলাদেশের ক্রিকেটের এ যাবৎকালের রানের রেকর্ড বইয়ের সব পাতা। এতে করে নিজেরা যেমন যেমন রেকর্ড বন্যায় ভাষলেন তেমনি ভাসলো দেশ। রেকর্ডের মালায় প্রিয় অধিনায়ককে জানালেন বিদায়ী অর্ঘ্য।

বিজ্ঞাপন

একমাত্র তামিম ইকবাল ছাড়া এদেশের আর কোন ব্যাটসম্যানেরই এরআগে দেড়শ রানের ইনিংস ছিল না। আজ সেই রেকর্ড ভেঙে লিটন দাস নিলেন প্রথমের অমৃত স্বাদ। তবে এখানেই থামেননি। ব্যাটিং রথ ছুটিয়েছিলেন ব্যক্তিগত ২শ রানের দিকে। অনন্য সেই মাইলফলকটির কাছেও চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু ২৪ রানের জন্য তা আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি। ১৪৩ বল খেলে থেমেছেন ১৭৬ রানে।

১২৩ স্ট্রাইক রেটে তোলা এই সংগ্রহে চারের মার ছিল ১৬টি ও ছয় ৮টি। এই না পারায় তিনি হয়ত সীমাহীন আফসোসে পুড়বেন। তবে আজকের পর পেছনে ফিরে তাকালে নিজেকে রাজা বৈ আর কিছুই ভাববেন না।! বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এ যাবাৎকালে তিনিই এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের গর্বিত মালিক।

তামিমকে তিনি পেছনে ফেলেছেন আরও একটি জায়গাতে। এক ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭ ছক্কার রেকর্ড এতদিন একচ্ছত্র দখলে রেখেছিলেন তামিম ইকবাল। ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশ সফরে এলে চট্টগ্রামে ৯৫ রানের ইনিংসে অতগুলো ছয় হাঁকিয়েছিলেন তামিম। আজ তা ভেঙে দিলেন লিটন।

অথচ সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পথে তিনি একটি ছয়ও মারেননি। যেই জাদুকরি তিন সংখ্যা ছুঁলেন অমনি ৮বার ওভার বাউন্ডারিতে ছাপিয়ে গেলেন তামিম ইকবালকে।

শুক্রবার (৬ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লিটনের রেকর্ড উসবের দিনে বসে থাকেননি তামিম ইকবালও। নিজেও শামিল হয়েছেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সেঞ্চুরি দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মত ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করলেন। এর আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে করেছিলেন টানা দুই সেঞ্চুরি। তিনি ছাড়া এদেশের আর কোন ব্যাটসম্যানই এতবার জোড়া শতক করতে পারেননি।

বিজ্ঞাপন

ব্যক্তিগত অর্জনের পাশাপাশিতৃপ্ত হওয়ার মত আরো অনেক ঘটনাই এই ম্যাচে ঘটেছে। যেমন; এই প্রথম দুই ওপেনারের ব্যাটে সেঞ্চুরি এল। দেশের ক্রিকেটে সর্ব কালের সেরা জুটির রেকর্টিও হল এই ম্যাচেই। ২১ বছর আগে মেহরাব হোসেন অপি ও শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের ওপেনিং জুটিতে ১৭০ রানের রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ২৯২ রানের নতুন রেকর্ড গড়লো তামিম-লিটন জুটি।

শুধু দেশেই নয়। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে রেকর্ড আছড়ে পড়ল বিশ্ব ক্রিকেটের আঙিনায়ও। ক্রিকেট বিশ্বে তারা এখন তৃতীয় সেরা ওপেনিং জুটি।

তাদের আগে তিনশ পেরোনো জুটি আছে মাত্র দুটি। গেল বছর আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে স্বাগতিক আইরিশদের বিপক্ষে উইন্ডিজ ওপেনার শেই হোপ ও জন ক্যাম্পবেল জুটি বোর্ডে তুলেছিলেন ৩৬৫ রান। যা কীনা বিশ্ব ক্রিকেটে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ।

আর দ্বিতীয় সেরা জুটি হলেন ইমাম উল হক ও ফখর জামান। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ে সফরে পাকিস্তানের এই দুই ওপেনার তুলেছিলেন ৩০৪ রান।

লিটন-তামিমের ২৯২ রানের মহাকাব্যিক জুটিই অধিনায়ক মাশরাফির বিদায়ী ম্যাচে বাংলাদেশকে ৪৩ রানে এনে দিল ৩/৩২২ রান। ৩২৪ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্য তাড়ায় নেমে জিম্বাবুয়ে গুটিয়ে গেল ১২৩ রানে। অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি তার শেষ ম্যাচের যবনিকা টানলেন … রানের জয়ে। যে জয় জিম্বাবুয়েকে করল হোয়াইটওয়াশ। আর অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি দেখা পেলেন ৫০তম জয়ের।

কী অদ্ভুত মিল! ২০১৪ সালের শেষে দ্বিতীয় দফায় অধিনায়কত্ব নেওয়ার পর এই জিম্বাবুয়েকেই ৫-০ তে হোয়াইটওয়াশ করেছিল মাশরাফির বাংলাদেশ।তার শেষটাও হল জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের মধ্য দিয়ে।

বিদায় হে অধিনায়ক! আপনার জন্য অফুরান শুভ কামনা।

টপ নিউজ তৃতীয় ওয়ানডে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে মাশরাফি বিন মুর্ত্তজা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর