Thursday 09 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বোর্ড সভাপতির ফোন পেয়েছিলেন তামিম


৪ মার্চ ২০২০ ২১:১১

সিলেট থেকে: সময়টা তামিমের হয়ে কথা বলছিল না। ব্যাট হাতে দিনের পর দিন বিবর্ণ ছিলেন বিধায় তার সামর্থ্য নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন। প্রশ্ন উঠেছিল তার ব্যাটিং ধরন নিয়েও। অনেকে আবার এখানেই তার ক্যারিয়ারের শেষ দেখে ফেলেছিলেন!

কিন্তু তামিম যে ফুরিয়ে যাওয়ার নয়, তা বোঝালেন ব্যাটে রানের ফাগুনধারা ফিরিয়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার ব্যাট অট্টহাস্যে হেসেছে। ১৩৮ বলে দেশ সেরা এই ওপেনার খেলেছেন ১৫২ রানের দাপুটে এক ইনিংস। তাতে তিনি যেমন ছন্দে ফিরেছেন তেমনি দলও ভেসেছে সিরিজ জয়ের উদ্ভাসিত আনন্দে।

বিজ্ঞাপন

তার এই ফেরায় অনেকেরই অবদান আছে। টিম ম্যানেজমেন্ট, নির্বাচকমণ্ডলী থেকে শুরু করে সতীর্থরাও বাজে সময়ে পাশে ছিলেন। আস্থা হারাননি বিসিবি সভাপতি নাজমুলও। ভরসা রেখেছিলেন অগাধ। তাই ম্যাচের আগের রাতে ফোন দিয়ে যুগিয়েছেন ঝলমলে ইনিংস খেলার প্রেরণা।

বুধবার (৪ মার্চ) সিলেট টিম হোটেলে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথন সে কথাই জানালেন দেশসেরা এই ওপেনার। ব্যাট হাতে টানা ব্যর্থতায় কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন তাও স্বীকার করলেন অকপটে।

‘হ্যাঁ। খানিক চাপে তো ছিলামই। এটা অস্বীকার করলে মিথ্যা বলা হবে। তবে আমার কাছে মনে হয় যে, একটা ইতিবাচক জিনিস ছিল যে, আমি ব্যাটিং খুব ভালো করছিলাম। হয়তো বড় রান আসছিল না। কিন্তু টেস্টে যেটায় ৪১ করলাম অথবা পাকিস্তানে ৩৪-৩৫ করেছিলাম- সেগুলোতে আমি সত্যিই খুব ভালো ব্যাটিং করছিলাম। এমনকি অনুশীলনেও ব্যাটিংটা খুব ভাল হচ্ছিল। তাই বিশ্বাসটা সবসময়ই ছিলো যে, এটা শুধু সময়ের ব্যাপার। যেকোনো সময় হয়ে যাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত অনেকদিন ধরেই হচ্ছিল না।’

বিজ্ঞাপন

‘অনেককেই এটার পেছনে ক্রেডিট দেওয়া উচিৎ। টিম ম্যানেজম্যান্ট বলেন অথবা আমার টিমমেটদের কথাই বলেন, তারা সবসময় আমার ওপর ভরসাটা রেখেছে। কখনও তারা এক মিনিটের জন্যও বিশ্বাস হারায়নি। দেখা গেছে আমিও হয়তো মাঝেমাঝে হতাশ হয়ে পড়েছি কিন্তু তারা নিশ্চিত করেছে যেন এটা আমাকে গ্রাস না করে। সাধারণত দেখা যায় যে, খারাপ সময়ে পাশে কেউ নেই। কিন্তু আমার কাছে যারা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, টিমমেট ও ম্যানেজম্যান্ট- তারা সবসময় আমাকে সাপোর্ট করেছে।’

‘এমনকি বোর্ড থেকেও আমাকে সাহায্য করেছে, যেটা না বললেই। শেষ ম্যাচের আগের দিন বোর্ড প্রেসিডেন্ট আমাকে ফোন করেছিলেন, অনেক ভালো ভালো কথা বলেছিলেন যেগুলো আসলে ভালো লাগার মতো। তো এটাই আর কি। সুন্দর একটা শুরু হয়েছে। এবার এটাই চেষ্টা করব, সবসময়ই চেষ্টা করি যে ভালো কিছু করার। যদিও সবসময় সম্ভব হয় না। এভাবেই চেষ্টা করে যাব, দেখা যাক কী হয়।’ যোগ করেন তামিম।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৫৮ রানের এই ইনিংসে তামিম পেছনে ফেলেছেন নিজেকে। এর আগে ১৫৪ রান করে তিনিই ছিলেন ওয়ানডেতে এক ইনিংসে দেশের সেরা রান সংগ্রাহক। অর্থাৎ নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন। দু’দুটি সেরা ইনিংস। কোনটাকে এগিয়ে রাখনে তামিম? বললেন, ২০০৯ সালের সেই অনবদ্য ১৫৪ রানের ইনিংসটির কথা। বুলাওয়েতে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই যা তাকে পাইয়েছিল ‘প্রথম’র স্বাদ।

‘অবশ্যই ২০০৯ সালের সেই সেঞ্চুরিকেই এগিয়ে রাখব। সেই ম্যাচে সম্ভবত আমরা প্রথমবার তিনশোর বেশি রান তাড়া করেছিলাম। এখন মানুষ তিনশ রানকে যত সহজভাবে দেখে, তখন কিন্তু এত সহজ ছিলো না। তখনের ৩শ রান, বর্তমানের ৪শ’র মতো। ওই সময় যে তিনশর বেশি তাড়া করতে পারব, সেই বিশ্বাসটাই হয়তো অনেকের ছিল না, আমার নিজের কাছেই তো ছিলো না। তবু যেভাবে আমরা জিতেছিলাম, তাই সে ইনিংসটিকেই এগিয়ে রাখব।’

কিন্তু ১৫৮ রানের এই ইনিংসটি খেলার আগে তার দিনলিপি কেমন ছিল? কতটা বিষাদ ভর করেছিল ক্রমাগত ব্যর্থ তামিমের ক্রিকেটীয় চিত্তে? তামিমের ভাষ্যমতে, দুর্দিনে টিম ম্যানেজমেন্ট ছায়ার মত ছিল, তাই হতাশা তাকে গ্রাস করতে পারেনি। মনের জোরও হারাননি। যা তাকে এমন বিক্রমে ফেরার রসদ জুগিয়েছে।

‘কিছু কিছু জিনিস বদলেছি যে কীভাবে নিজেকে আরও ভালো করা যায়। তবে এটা সত্যি কথা যে, যখন আপনি উপভোগ করেন না, তখন আপনি আশপাশে অনেককেই দেখবেন যারা হতাশ হয়ে পড়ে। কারণ তারাও চায় আপনি ভালো করেন। আর এ কারণেই আমি টিম ম্যানেজম্যান্টের কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ তারা সবসময় আমার ওপর ভরসা রেখেছে। এই ইনিংসের পুরো কৃতিত্বটা তাদেরই যায়।’

ক্রিকেট টপ নিউজ তামিম ইকবাল নাজমুল হাসান পাপন বিসিবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর