আপনারা মাশরাফিকে বেশি খোঁচান: বিসিবি সভাপতি
১ মার্চ ২০২০ ১৭:৪৫ | আপডেট: ১ মার্চ ২০২০ ১৯:১৫
সিলেট থেকে: সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ চলাকালীন এসেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। উদ্দেশ্য ছিল মাশরাফি-তামিমদের ম্যাচ দেখে স্টেডিয়াম সংলগ্ন নব নির্মিত আউটার স্টেডিয়াম পরিদর্শন। এর দুটোই করলেন বিসিবি সভাপতি। তারপরে মুখোমুখি হলেন সংবাদ মাধ্যমের। সেখানেই তাকে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ওয়ানডে দলপতি মাশরাফির প্রতিক্রিয়া বিক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হলো। জবাবে পাপন বললেন- ‘আমার মনে হয় আপনারা ওকে বেশিই খোঁচান’। এবং তিনি এও বলেছেন যে অধিনায়ক কে হবে এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত।
রোববার (১ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে একথা বলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন।
মাশরাফিকে আগলে রেখে বোর্ড সভাপতি বললেন, ‘আমি আপনাদেরকে সব সময় দুইটা প্লেয়ারের কথা বলি। প্লেয়ার হিসেবে সাকিবের বিকল্প আমাদের কাছে নাই। আর অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির বিকল্প নাই। মাশরাফির অবদান কোনো ভাবেই খাটো করার সুযোগ আমাদের কাছে নেই। এবং আপনারা হয়তো একটা জিনিস খেয়াল করেছেন, মাশরাফিকে আমরা চেষ্টা করেছি বেশি সুযোগ দেওয়ার। মুশফিককে যখন বাদ দিয়ে মাশরাফিকে অধিনায়ক দিলাম তখন কাউকে কিন্তু জিজ্ঞেসও করিনি।
‘পুরা প্রেস কনফারেন্সটা দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে আপনারা ওকে বেশি খোঁচান। আমার মনে হয় এরকম একটা সময় আপনাদেরই ওর পাশে থাকা উচিৎ। সে জায়গায় ওকে কষ্টটা একটু বেশি দিয়ে দিচ্ছেন। আমার মনে হয় ওকে এসব আর না বলা উচিৎ। ও বলে দিয়েছে সে কি চায়। ক্যাপ্টেন কে হবে এটা বোর্ডের সিদ্ধান্ত। ও কবে রিটায়ার করবে সেটা ওর ব্যাপার।’
এবার আসুন দেখে আসি গতকাল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফিকে কি প্রশ্ন করা হয়েছিল এবং তার জবাবে তিনি বলেছিলেন।
প্রশ্নটি ছিল-: যে প্রশ্নটা আপনার কাছে আসে তা অনেকটা আত্মসম্মানের। যে জায়গাটায় এখন দাড়িয়ে আছেন, বিশেষ করে ৮ ম্যাচে উইকেট নেই। ২০০১ সালে যখন শুরু করলেন নভেম্বরে টেস্ট ম্যাচ দিয়ে, ওয়ানডে খেললেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুরু হয়েছিল, ফ্লাওয়ার ব্রাদার্সের উইকেট নিলেন। ২০০৭-২০০৮ সালে তিন চারটা ম্যাচে আপনি উইকেট পাননি, কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আপনাকে পড়তে হয়নি। প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে বলেই কি একটা বাড়তি মোটিভেশন কাজ করছে, আপনার যদিও মোটিভেশনের দরকার পড়ে না।
জবাবে মাশরাফি বলেছিলেন- প্রথমত হচ্ছে যে, আত্মসম্মান বা লজ্জা- আমি কি চুরি করি মাঠে? আমি কি চোর? খেলার সাথে লজ্জা, আত্মসম্মান আমি মিলাতে পারি না। এত জায়গায় এত চুরি হচ্ছে, চামারি হচ্ছে তাদের লজ্জা নাই? আমি মাঠে এসে উইকেট না পেলে আমার লজ্জা লাগবে। আমি কি চোর? উইকেট আমি নাই পেতে পারি, আমার সমালোচনা আপনারা করবেন, সাপোর্টাররা করবে, লজ্জা পেতে হবে কেন? আমি কি বাংলাদেশের হয়ে খেলছি নাকি অন্য দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলছি, যে আমার লজ্জা পেতে হবে। আমি পারিনি আমাকে বাদ দিয়ে দেবে। জিনিসটা সাধারণ। এখন কথা হচ্ছে, আমার লজ্জা, আত্মসম্মানবোধ কার সঙ্গে দেখাতে যাব? আমি তো বাংলাদেশের হয়ে খেলতে নামছি। আমি কি বাংলাদেশের মানুষের বিপক্ষের মানুষ। যে কেউ পারফর্ম নাই করতে পারে। সেটা তো তার ডেডিকেশন না থাকে, কোনো জয়গায় ঘাটতি থাকে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন আসতেই পারে। আরেকটা সমালোচনা হতে পারে স্বাভাবিক- যেটা সারা পৃথিবীতেই হতে পারে, যে আমি উইকেট পাই না আমার সমালোচনা হবে। কিন্তু কথা যখন আসে লজ্জা, আত্মসম্মানবোধ তখন আমার প্রশ্ন থাকে। আমার সমালোচনা করুক, কিন্তু আমার আত্মসম্মানবোধ! আমি ক্রিকেট খেলতে এসে কি আমার আত্মসম্মানবোধ বিসর্জন দিতে আসছি নাকি। আমি কি অন্য দেশের হয়ে খেলছি,নাকি চুরি করছি, চামারি করছি। তা তো না। সুতরাং এই জিনিসটার সঙ্গে আমি মোটেও একমত না।
ক্রিকেটার মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা টপ নিউজ প্রথম ওয়ানডে বাংলাদেশ বনাম জিম্বাবুয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সিলেট