পাকিস্তান শীর্ষে থাকলেও ফেভারিট বাংলাদেশ
২৪ জানুয়ারি ২০২০ ১১:৪২ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ১২:৩৭
সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই সিরিজ দিয়ে ঘরের মাঠে টানা হারের পর পাকিস্তান নিঃসন্দেহেই চাইবে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে। পক্ষান্তরে সাম্প্রতিক সময়ে বেশ ভালো ফর্মে থাকা বাংলাদেশ চাইবে পাকিস্তান জয় করে দেশে ফিরতে।
সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে ফেভারিট হিসেবে বাংলাদেশকেই সবাই এগিয়ে রাখবেন। কেননা সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ৯টি টি-২০ ম্যাচ খেলে জয়ের দেখা পেয়েছে মাত্র একটিতে। সেই সাথে তাদের চোখ রাঙাচ্ছে শ্রীলংকা এবং অস্ট্রেলিয়া সিরিজে পরাজয়ের স্মৃতি।
অপরদিকে বাংলাদেশ খেলেছে গত বছরে ৭টি টি-২০। এর ভেতর ৪টিতেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে লাল সবুজ জার্সিধারিরা। সেই সাথে টাইগারদের রয়েছে ভারতের মাটিতে ভারত বধের সুখস্মৃতি।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশ সিরিজ নিয়ে বেশ চাপে রয়েছে স্বাগতিক পাকিস্তান তা বুঝতে হলে রকেট সায়েন্স পড়ার বোধহয় প্রয়োজন হবে না।
সাকিব-মুশফিক বিহীন বাংলাদেশকে নিয়ে তাদের চাপটা এমনই যে সিরিজের জন্য তাদের ঘোষিত ১৫ জনের স্কোয়াডের ৭ জনই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় নতুন মুখ। তাঁর ভেতর ৪ জন আবার রয়েছেন অভিষেকের অপেক্ষায়।
পরিসংখ্যানের আলোকে হিসেব করলে ফেভারিট হিসেবে অগ্রাধিকার পাবে বাংলাদেশ। কেননা-
গেল বছর অক্টোবর পর্যন্ত টি-২০তে স্বর্ণযুগ বিরাজ করছিল পাকিস্তানে। কিন্তু লঙ্কানদের আগ্রাসী তান্ডবে তাদের সুখের সাম্রাজ্য ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। দ্বিতীয় সারির শ্রীলংকা দলের কাছে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ হারে র্যাংকিংয়ের একে থাকা দলটি।
এই হারের পর সব কিছু ওলট পালট হয়ে যায় পাকিস্তানের। পরিবর্তন আসে অধিনায়কত্বে। সরফরাজ আহমেদের থেকে অধিনায়কত্ব ছিনিয়ে নিয়ে দলের দায়িত্ব দেয়া হয় বাবর আজমের ওপর।
কিন্তু পাকিস্তানের ভাগ্য হারের কোঠাতেই যেন আটকে গিয়েছে। যার প্রতিফলন দেখা যায় অস্ট্রেলিয়া সিরিজে। অজিদের বিপক্ষে সিরিজ হার বরণ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাবর আজমদের। গেলো বছর খেলা ৯ ম্যাচের ৮ টিতেই হার বরণ করছে হয়েছে পাক ক্রিকেটারদের।
এবার আসা যাক বাংলাদেশের দিকে। বাংলাদেশ গত বছরে খেলা ৭ টি ম্যাচের ৪ টিতেই জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর ভেতর রয়েছে ভারতের মাটিতে ভারতকেই হারানোর সুখস্মৃতি।
এবার আসা যাক র্যাংকিংয়ে কি কি পরিবর্তন আসতে পারে এই সিরিজে-
প্রথমত, পাকিস্তান এই সিরিজটি ৩-০ তে জিততে পারলেই তাদের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হবে। আর সেই সাথে ৩-০ তে হারলে বাংলাদেশের আসবে না র্যাংকিংয়ে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশ এই সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিলে র্যাংকিংয়ে আটে থাকা শ্রীলংকার সাথে কমে আসবে পয়েন্ট ব্যবধান। কিন্তু সর্বনাশ যা হবার হবে পাকিস্তানের। শীর্ষস্থান খোয়াবে দলটি।
তৃতীয়ত, পাকিস্তান এই সিরিজটি যদি ২-১ এ জিতে তাতেও ক্ষতি বাবর আজমদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে এক ম্যাচ হারলেও তাদের নেমে যেতে হবে র্যাংকিংয়ের দুই নম্বরে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থাকবে তাদের আগের অবস্থান নয় নম্বরেই। শুধু হারাবে বাংলাদেশ দুই পয়েন্ট।
সর্বশেষ, মাহমুদউল্লাহরা যদি পাকিস্তানকে ধবল ধোলাই করতে পারে তবে বড় পুরস্কার পাবে নিঃসন্দেহেই। শ্রীলংকা আফগানিস্তানকে টপকে উঠে আসবে র্যাংকিংয়ের ৭ নম্বরে। সেই সাথে পাকিস্তানকে ঠেলে নামিয়ে দিবে দুই নম্বরে।
পাকিস্তান চাপে থাকলেও খুব একটা চাপে নেই বাংলাদেশ। সেটি প্রকাশ পায় মাহমুদউল্লাহর দৃপ্ত কণ্ঠে, ‘যদি আপনি র্যাঙ্কিং, রেটিং নিয়ে ভাবেন সেটা আপনার খেলায় প্রভাবিত করতে পারে। আমরা এটা নিয়ে ভাবছি না। আপনি যদি আমাদের টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সের গ্রাফ দেখেন, তাহলে দেখবেন এটা ঊর্ধ্বমুখী। সাম্প্রতিক সিরিজে আমরা যেমন ভালো করেছি, সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই।’
আর সেই সাথে বাংলাদেশের রয়েছে ভারতের মতো দেশকে তাদের মাটিতে হারানোর সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা। সব মিলিয়ে বেশ চাপমুক্তই রয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।