সব শঙ্কা উড়িয়ে মাঠের লড়াই
২৩ জানুয়ারি ২০২০ ২০:৩৮ | আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:৪১
বাংলাদেশের পাকিস্তান সফর নিয়ে পানি কম ঘোলা হয়নি। দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড শুরু থেকেই সফরে অনীহা দেখিয়ে আসছিল। পক্ষান্তরে নিজেদের ভাবমূর্তি ফেরাতে মরিয়া পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) যেকোনো মূল্যেই বাংলাদেশকে নিতে প্রস্তুত ছিল। অবশেষে তারা তা পেরেছে। তবে তার আগে সফরকারীদের নিশ্চিত করতে হয়েছে রাষ্ট্রপতির সমান নিরাপত্তা। তাতে আশ্বস্ত হয়েই সম্মত হয়েছে বিসিবি, এবং এতে করেই আলোর মুখ দেখে নিরাপত্তার শঙ্কায় প্রায় আঁধারে নিমজ্জিত সিরিজটি। অপেক্ষা এবার মাঠের লড়াইয়ের।
আর সেই লক্ষ্যেই গেল বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ বিমানে তিন ম্যাচ সিরিজের টি-টোয়েন্টি খেলতে লাহোরে পা রেখেছে টিম বাংলাদেশ।
তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আশ্বস্ত হলেও দেশটির নিরাপত্তার ওপর আস্থা রাখতে পারেননি লাল সবুজের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের পরিবার। সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে ছেলেকে সফরে যেতে বারণ করেছেন। পরিবারের সম্মতি পাননি বলে মুশফিকও থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে মিডল অর্ডারে এই কান্ডারিকে ছাড়ায় রণ কৌশল সাজাতে হবে টাইগারদের টিম ম্যানেজমেন্টকে।
এতে করে অবশ্যম্ভাবিভাবেই দায়িত্বটি নিতে হবে দলের অন্যান্যদের। সফরের আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ অবশ্য বলেছেন মুশির দায়িত্ব নিতে তিনি প্রস্তুত। শুধু তিনিই নন, আরেক সিনিয়র সদস্য তামিম ইকবালসহ দলের বাকি সদস্যদেরও বাড়তি দায়িত্ব নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এবং তিনি আরো বলে রেখেছেন প্রয়োজনে ব্যাটিং অর্ডারেও পরিবর্তন আনা হবে।
‘আমি এবং তামিম ব্যক্তিগত ভাবে অবশ্যই অনুভব করি আমাদের দায়িত্বটা একটু বেশিই থাকবে। বিশেষ করে টপ অর্ডারে তামিমের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি কাজে দেবে। ও খুব ছন্দে আছে অনেক রান করেছে বিপিএলে। আমি ব্যক্তিতগতভাবে অনুভব করব যে আমি যেন আমার দায়িত্বটা পালন করতে পারি।‘
মুশফিক যে ভীতি থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন একই ভীতি ভর করেছিল মাহমুদউল্লাহর পরিবারেও। কিন্তু শেষতক তিনি পরিবারকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। এই মুহুর্তে তার ভাবনায় কেবলই পাকিস্তান বধের রণকৌশল।
‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি এতটুকু বলতে পারি আমার মনে হয় দলের অন্য খেলোয়াড়রাও চিন্তিত না। কারন এটা সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে। আমরা এখন ওখানে খেলার কথায় চিন্তা করছি, কীভাবে ভালো পারফর্ম করতে পারব এবং জিততে পারব এটা নিয়েই বেশি চিন্তিত।‘
মাহমুদউল্লাহ যখন বলছেন তিনি জিততে চাইছেন তখন তাচ্ছিল্যের অট্টহাসি হাসি হাসছে আইসিসি’র টি-টোয়েন্টি র্যাংকিং ও দুই দলের মধ্যকার জয় পরাজয়ের পরিসংখ্যান। কেননা এই ফরম্যাটে চলতি বছরের ১৫ জানুায়ারি পর্যন্ত আইসিসির হিসেব অনুযায়ী ৩১ ম্যাচে ৮৩৬৬ পয়েন্ট ও ২৭০ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান এক নম্বরে। পক্ষান্তরে ২৩ ম্যাচে ৫২১২ পয়েন্ট ও ২২৭ রেটিং পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ নয় নম্বরে। আর দুই দলের ১০ বারের দ্বৈরথে ৮ বারই জিতেছে পাকিস্তান। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের জয় মাত্র ২টি ম্যাচে।
মাহমুদউল্লাহ অবশ্য এসবের ধার ধারছেন না। গেল নভেম্বরে ভারত সিরিজ ও সদ্য সমাপ্ত বিপেএলে তারা যেভাবে খেলেছেন তাতে পাকিস্তানের মাটিতেও পাকিস্তানকে হারাতে দারুণ প্রত্যয়ী তিনি। ‘র্যাংকিংটা অবশ্য ভিন্ন কথা বলে। আমরা ৯ নম্বরে ওরা ১ নম্বরে। তারা ধারাবাহিক ভাবে ফর্মে আছে এই ফরম্যাটে। আমার কাছে মনে হয় যেভাবে আমরা ক্রিকেট খেলছি বিগত সিরিজে এবং লাস্ট কয়েকটা সিরিজ, আমি খুব আশাবাদী আমরা ভালো করতে পারব। আমরা সিরিজ জেতারই চেষ্টা করব।‘
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
টপ নিউজ টি-টোয়েন্টি পাকিস্তান সফর প্রথম টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান