বাংলাদেশ ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট
১৭ অক্টোবর ২০১৯ ২১:২২ | আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৮:৪০
ঢাকা: একদিনের সৌজন্য সফরে বাংলাদেশে এসে যেন একটু অবাকই হলেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। এই বদ্বীপ নিয়ে অল্প বিস্তর যা জানা শোনা ছিলো সেই অভিজ্ঞতা থেকে বাংলাদেশ তাকে যে নতুন অভিজ্ঞতাই দিলো সেটা অকপটে স্বীকারও করে নিলেন ফিফার ৯ম প্রেসিডেন্ট। দেশের ফুটবল জাগরণ দেখে নিজের সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হলো তাকে। বলতো হলো, ‘এখানে আমি যে উন্মাদনা দেখলাম, তাতে আমি মনে করি ফুটবলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’
দেশের ফুটবলের ভবিষ্যত দেখছেন ইনফান্তিনো। দেখছেন অপার সম্ভাবনা। সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ম্যাচটাও খানিকটা দেখেছেন বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দীন। ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি কীভাবে ভবিষ্যত বদলাতে হবে সেটাও জানিয়ে দিলেন। হাত দিতে হবে দেশের ফুটবলের তৃণমূল পর্যায়ে। কাজ করতে হবে বয়সভিত্তিক ফুটবলে।
সকালে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে বাফুফে ভবন পরিদর্শনে যান ইনফান্তিনো। বিকেলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে। এই সফরে ইতিবাচক মনোভাব নিয়েই দেশত্যাগ করবেন বলে জানালেন ফিফা প্রেসিডেন্ট, ‘দেশটা ফুটবল সম্পর্কে অল্পবিস্তর জানে, কিন্তু এটা নিয়ে তেমন উচ্ছ্বাস নেই এখানে, এখানে আসার আগে এমন একটা ধারণাই ছিলো। কিন্তু এসে পুরোপুরি ভিন্ন এক পরিস্থিতিই দেখলাম। এখন যাবার মূহুর্তে দেশটা সম্পর্কে ইতিবাচক এক মনোভাব নিয়েই যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি হওয়ার সঙ্গে আশাবাদও ব্যক্ত করতে ভুললেন না ফিফা প্রেসিডেন্ট, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দলটার পারফর্মেন্স দারুণ। এইতো দু’দিন আগেও ভারতের বিপক্ষে শেষ সময়ের গোলে ১-১ ড্র নিয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ। একটু এদিক ওদিক হলে জয়ও নিয়ে ফিরতে পারতো তারা। এটা দেখায় খেলাটার প্রতি খেলোয়াড়দের, মানুষের আবেগ-ভালোবাসা অসাধারণ। ফুটবলে যে কোনো কিছু হতে পারে এরও দারুণ এক বিজ্ঞাপন ম্যাচটা।’
দেশের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে সাম্প্রতিক সফলতা সম্পর্কে আগেই খোঁজ পেয়েছেন ফিফার কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণের কাছে। বয়সভিত্তিক ও মেয়েদের ফুটবলে উন্নয়নে জোর দেয়ার কথাও মনে করিয়ে দিলেন, ‘মেয়েদের ফুটবলে বিনিয়োগ করতে আমি উৎসাহিত করি। কেননা, মেয়েদের ফুটবলে প্রতিদ্বন্দ্বিতাটা এখনও অতটা কঠিন নয়। ইউরোপে ছেলেদের ফুটবল যতটা কাঠামোবদ্ধ, মেয়েদের ফুটবল ততটা নয়। তাই মেয়েদের ফুটবলে তুলনামূলক দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছানোর সুযোগ আছে। আর আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ তা পারবে।‘
বিশ্বকাপে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ভবিষ্যত, এই অঞ্চলের দেশগুলোতে ফুটবল উন্নয়ন নিয়েও নিজের ভাবনাটা জানালেন তিনি, ‘আমি আসার পর বিশ্বকাপে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা বাড়িয়েছি। তবে এ অঞ্চলের ফুটবলকে আরও এগিয়ে নিতে অর্থ ঢালতে হবে। তার আগে অবশ্য দলগুলোর মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে। এ অঞ্চলে প্রতিযোগিতার সংখ্যা বাড়ালে দলগুলোর মধ্যে সে উৎসাহটা আসবে। কেননা তখন দলগুলোর সাফল্য পাবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।’
ফিফা-প্রধান এর আগে আজ ভোর পাঁচটায় বাংলাদেশে এসে পৌঁছান। মূলত আরও ঘণ্টা চারেক আগে আসার কথা থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কিছুটা বিলম্বে বাংলাদেশে আসেন তিনি। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় বাফুফেতে পৌঁছান ইনফান্তিনো। সেখানে বাফুফে কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন তিনি। ফিফা সভাপতি এরপর সংবাদ সম্মেলন শেষে আজই লাওসের উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত বিমানে দেশ ছাড়েন।