আক্ষেপের আরেক নাম দৈন্য বোলিং
৯ জুন ২০১৯ ০০:৫৯
ইশ! যদি বাংলাদেশের বোলিংটা ভালো হতো… এই একটি কমতিই সম্ভবত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটিতে বাংলাদেশের আক্ষেপের মূল প্রতিশব্দ হয়ে থাকল। যদি মাশরাফি, সাকিবরা তাদের বোলিং প্রতিভার কিছুটা ঝলকও দেখাতে পারতেন তাহলে নিশ্চয়ই ম্যাচের গল্পটি ভিন্ন হতে পারত। কিন্তু হয়নি। আর হয়নি বলেই বিশ্বকাপে টানা দুই হারের গ্লানিতে পুড়তে হলো স্টিভ রোডস শিষ্যদের।
ইংলিশদের দেওয়া ৩৮৭ রানের পাহাড়সমান লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ২৮০ রানেই থেমে যেতে হয়েছে! বিনিময়ে ১০৬ রানের বড় হার।
এতে করে ২২ গজের বিশ্ববযুদ্ধে অবর্ণনীয় এক চাপে পড়ে গেল মাশরাফি ও তার দল। গানিতিক হিসেবে তাদের শেষ চারের পথও হয়ে উঠল দূরের বাতিঘর। সেমিতে যেতে এখন বাকি ছয় ম্যাচের নুন্যতম চারটিতে তাদের জিততেই হবে।
কিন্তু তারে আগে বিবেচ্য বিষয় হলো ম্যাচগুলো মাঠে গড়াবে কী না। কেননা ইংল্যান্ডের বৃষ্টি এতটাই ছিঁচকাদুনে, আকাশে কোনরকম মেঘের সমাগম হলেই কান্না শুরু করে দেয়। ফলে একটি ম্যাচ পণ্ড হলেই আসবে পয়েন্ট ভাগাভাগির হিসেব নিকেশ। সেই মারপ্যাচে কী হয় সৃষ্টিকর্তাই ভালো বলতে পারবেন।
বলার অপেক্ষাই রাখছে না বাংলাদেশের দৈন্য বোলিংয়ের সুযোগে ইনিংসের শুরুতেই শতভাগ ফায়দা আদায় করে নিয়েছেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টো। দুজনই দলীয় ১২৭ রান পর্যন্ত থেকেছেন অপরাজিত। বেয়ারস্টো ৫০ বলে ৫১ রানে ফিরলেও জেসন ১২১ বলে ১৫৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে দিয়ে গেছেন শক্ত এক ভীত। যার ওপর দাঁড়িয়ে জস বাটলার (৪৪ বলে ৬৪), ইয়ন মর্গান (৩৩ বলে ৩৫) ও লিয়াম প্লাংকেট (৯ বরে ২৭) ইংলিশদের এনে দিয়েছেন ৬ উইকেটে ৩৮৬ রানের সংগ্রহ।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটিই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ। যার মূল জ্বালানি যুগিয়েছে টাইগারদের ভোঁতা বোলিং।
আক্ষেপ থাকল মাশরাফিদের ফিল্ডিং নিয়েও। তাদের ঢিলেঢালা ফিল্ডিংয়ের সুযোগে মর্গানরা মোট সংগ্রহের সঙ্গে কমপক্ষে ৫০টি রান যোগ করেছেন, একথা যে কেউ চোখ বন্ধ করে বলে দেবে।
দৈন্য বোলিং ও ঢিলেঢালা ফিল্ডিংয়ের ম্যাচে আক্ষেপের কারণ হয়ে থাকলেন বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিও। নিঃসন্দেহে ৩৮৭ রান যে কোনো দলের জন্যই চাপের কারণ। বৈশ্বিক আসরে এত রান তাড়া করে জেতার অতীত দৃষ্টান্তও নেই। তাই বলে তারা তো যা খুশি তাই করতে পারেন না। এই দুজন দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দিতে পারলে ক্রিকেটে নতুন ইতিহাসও রচনা হতে পারত। ওয়ানডেতে ৪৩৫ রান তারা করে জেতার রেকর্ডও কিন্তু আছে।
না, তারা ইতহাস রচনার পথে হাঁটতে পারেননি। সৌম্য সরকার বিদায় নেন মাত্র ২ রানে। আরেক ওপেনার তামিম ইকবালের ব্যাট যথারীতি নিস্প্রভ। বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে ১৬ ও ২৪ করা দেশসেরা এই ব্যাটসম্যান এই ম্যাচে নিজের ইনিংসের ফুলস্টপ টেনে দেন মাত্র ১৯ রানে!
তৃতীয় উইকেটে সাকিব, মুশফিক জুটি ইনিংস মেরামত করে দলের হাল ধরেছিলেন সত্যি, কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ওভার প্রতি রান রেট বেড়ে যাচ্ছে সেই চাপ সামাল দিতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৪৪ রানে লিয়াম প্লাংকেটের বলে জেসন রয়ের নিরাপদ তালুতে জমে যান মুশি।
তবে দলের হয়ে একাই লড়েছেন সাকিব। শেষ দুই ম্যাচে ফিফটি করা এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ইংলিশ বোলারদের লাইন লেংথ তছনছ করে তুলে নিয়েছেন বিশ্বকাপে প্রথম এবং ক্যারিয়ারের ৮ম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। বেন স্টোকসের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে ১১৯ বলে নামের পাশে যোগ করেছেন ১২১ রান।
এই শেষ। এরপর বাদবাকিরা শুধু গেলেন আর এলেন। তাতে ৪৮.৫ ওভারে সংগ্রহ ২৮০ রানে অলআউট মাশরাফিদের ইনিংস।
বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সব ম্যাচ অনলাইনে কোনো ধরনের সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com-এ। এছাড়া র্যাবিটহোলের অ্যাপেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিংকে ক্লিক করে।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি