অবশেষে বাংলাদেশ পাচ্ছে জিপিএস প্রযুক্তি
৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:১২ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:১৫
।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: বিশ্ব ফুটবল যেখানে প্রযুক্তির ছোঁয়ার অবিরাম গতিতে ছুটে চলছে, সেই গতিতে অবশ্য খেই হারিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবল। প্রতিবেশি দেশগুলোও ফুটবলে যেখানে এগিয়ে গেছে এক ধাপ সেখানে এক পা পিছিয়েই লড়াই করে যাচ্ছে বাংলাদেশ। মুমূর্ষু ফুটবলকে কফিন থেকে বের করে অক্সিজেন দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টায় ব্রত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। বেশ কালক্ষেপণ হলেও বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে প্রযুক্তি ব্যবহারের তাগিদটা টের পেয়েছে দেশের সর্বোচ্চ অভিভাবক। তাই আধুনিক প্রযুক্তি জিপিএস দেশের ফুটবলারদের জন্য নিয়ে এসেছে বাফুফে।
দেশের ফুটবলারদের উন্নতির স্বার্থেই অন্তত জাতীয় ফুটবলারদের আধুনিক সেবা নিশ্চিতে জিপিএস প্রযুক্তি কিনেছে ফেডারেশন। ২০১৯ সালের শুরুর দিকেই এই প্রযুক্তি খেলোয়াড়দের জন্য ব্যবহার করা হবে বলে জানা যায়।
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ সারাবাংলাকে জিপিএস কেনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা দেশের ফুটবলারদের স্বার্থেই জিপিএস কিনেছি। ২০১৯ সালের শুরুতে যদি সম্ভব হয় তাহলে জাতীয় দলের ফুটবলাররা এটা ব্যবহার করতে পারবেন।’
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এএফসির দুই প্রতিনিধি বাফুফেতে এসে ক্লাব লাইসেন্সসহ বাফুফের আর্থিক ও প্রশাসনিক বিষয় নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি জিপিএস প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এএফসির এজেন্টের কাছ থেকে মূলত ৪৫টি জিপিএস ডিভাইস কিনেছে বাফুফে এমনটাই জানালেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক।
ভারত-মালদ্বীপ-নেপালেও যেখানে অনেকদিন আগে থেকে এ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার চলছে সেখানে বাংলাদেশ একটু পিছিয়েই বলতে হবে। একটু দেরি হলেও এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছে ফেডারেশন। কাস্টমস থেকে ডিসেম্বরের শেষ দিকে ডিভাইসগুলো বাফুফেতে পৌঁছাবে আশ্বাস সোহাগের।
আর সেটা যদি হয় তাহলে বাংলাদেশের ফুটবলে আধুনিকতা ছোঁয়া লাগবে। যদিও সবশেষ স্বাধীনতা কাপের চ্যাম্পিয়ন আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ অনুশীলনে ফুটবলারদের এ প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে আর সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবও এ প্রযুক্তি চলমান স্বাধীনতা কাপে ব্যবহার করছে। তবে জাতীয় ফুটবলারদের জন্য এটি এখনও একটি স্বপ্নের নাম জিপিএস। স্বপ্ন বাস্তব হতে চলেছে ক‘দিন পরেই।
কী সুবিধা এই প্রযুক্তিতে:
বিশ্বের বেশিরভাগ পেশাদার ক্লাবেরই এই জিপিএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। ফুটবলার গায়ে (ঘাড়ে) এক ধরনের কাপড় (ডিভাইস) পড়ানো হয়। যার মাধ্যমে অনুশীলনে ফুটবলারদের গতি-ফিটনেস লেভেল পরিমাপ করা যায়। এছাড়াও শারীরিকভাবে কতটা শক্তিশালী তা জানা যাবে।
স্বাধীনতা কাপে আরামবাগের ডাগ আউটে কোচের দায়িত্বে থাকা মারুফুল হক জানান, ‘এটা খেলোয়াড়দের জন্য অনেক জরুরি। ফুটবলারদের ফিটনেসের লেভেল, গতি, আন্তর্জাতিক মান থেকে কত পিছিয়ে সেটা দেখা যাবে এই পদ্ধতিতে। কত দ্রুত দৌড়ায়, কত জায়গায় কাভার করে, শারীরিকভাবে কত শক্তিশালী। এছাড়াও খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল মুভমেন্টগুলোও কেমন সেটা জানা যায়। মাথা-হাত-পায়ের মুভমেন্ট নির্ণয় করা যায়।’
ভারতে প্রায় তিন বছর আগে থেকে এই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়েছে। দেশের ফুটবলাররাও এ প্রযুক্তির ছোঁয়া পেয়ে ফুটবলারদের উন্নতি হোক। এগিয়ে যাক ফুটবল। আর এভাবে ক্লাব-বাফুফে মিলে আরও বেশি উদ্যোগী হয়ে উঠলে দেশের ফুটবলে সুদিন ফিরতে বেশি সময় লাগবে না বলে আশ্বাস ফুটবল সমর্থকদের।
সারাবাংলা/জেএইচ
নিচের লিংকে আরও পড়ুন
দেশের ফুটবলে জিপিএস প্রযুক্তি!