১৫ জুলাই ২০২০ ০৯:১০ | আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২০ ১২:৫৩
লটকনের আবাদের কারণে নরসিংদীর নামই হয়ে গেছে ‘লটকনের দেশ’। দেশের বাজারের লটকনের সবচেয়ে বড় অংশটিরই জোগান এই জেলা থেকে যায়
প্রায় ৩০ বছর আগের কথা। নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার লাখপুর গ্রামে প্রথম শুরু হয় অপ্রচলিত ফল লটকনের আবাদ। তবে সে ফল আর বেশি দিন অপ্রচলিত থাকেনি। বেলাবো ও শিবপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের লাল মাটির এলাকায় লটকন চাষের প্রসার ঘটতে থাকে। লটকন আবাদে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় আগ্রহ বাড়তে থাকে কৃষকদের। বর্তমানে নরসিংদীর অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে একসময়কার অপ্রচলিত অম্ল-মধুর ফল লটকন।
মৌসুমী এ ফলের বেচাকেনাকে ঘিরে জেলার মরজাল ও শিবপুর বাজারে গড়ে উঠেছে লটকনের বিশাল বাজার। প্রতিদিন ভোরে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ক্রেতারা এসে এসব বাজার থেকে কিনে নিয়ে যান লটকন। পর্যায়ক্রমে হাত বদল হয়ে রাজধানী ঢাকা থেকে এসব লটকন চলে যাচ্ছে বিদেশের বাজারেও। অনেকে সরাসরি জমি থেকে লটকন কিনে সরবরাহ করছেন দেশ-বিদেশের বাজারে।
নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার লাখপুর গ্রাম ও রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজার থেকে ছবিগুলো তুলেছেন সারাবাংলার সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট মো. হাবিবুর রহমান
-
-
লটকনের আবাদের কারণে নরসিংদীর নামই হয়ে গেছে ‘লটকনের দেশ’। দেশের বাজারের লটকনের সবচেয়ে বড় অংশটিরই জোগান এই জেলা থেকে যায়
-
-
কৃষি বিভাগের তথ্য— শিবপুর, বেলাবো ও রায়পুরা উপজেলার লাল রঙের মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও খনিজ থাকায় এসব এলাকায় লটকনের ফলন ভালো
-
-
চলতি মৌসুমে ১৬১০ হেক্টর জমিতে লটনকন বাগান করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৫ টন হারে ২৪ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন লটকনের ফলন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী কৃষি বিভাগ
-
-
লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী উৎপাদন পেলে পাইকারি ৭০ টাকা কেজি দরে লটকন থেকে এ বছর নরসিংদী জেলার আয় হবে ১৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকা
-
-
কৃষকরা জানালেন, রোপণের তিন বছরের মধ্যে ফলন আসে লটকন গাছে। ফল দেয় টানা ২০ থেকে ৩০ বছর। রোগবালাইও কম
-
-
ফল সংগ্রহের ৬০ দিন আগে গাছ প্রতি ৫০ গ্রাম পটাশ পানির সঙ্গে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় দিলে ফলের মিষ্টতা ও আকার বাড়ে
-
-
এই ফল বিক্রি নিয়ে লটকন বাগান মালিকদের দুশ্চিন্তা নেই বললেই চলে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা লটকন কাঁচা থাকতেই বাগান থেকে কিনে নেন
-
-
বাগান কেনার পদ্ধতিও বেশ আলাদা। প্রথমে বাগানের মালিকের কাছ থেকে একদল পাইকার দাম-দর করে বাগান কেনেন। এরপর মৌসুমি ব্যবসায়ীরা পাকা লটকন বাগান থেকে সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করেন
-
-
পাইকারি বাজারে প্রকারভেদে মণ প্রতি দাম ওঠে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৮০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়
-
-
মরজাল বাজারের এই লটকন শেষ পর্যন্ত গিয়ে দেশের কোন অঞ্চলের খুচরা গ্রাহকের হাতে পৌঁছাবে— কে বলতে পারে!
নরসিংদী
লটকন
লটকন আবাদ