Saturday 04 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মশার কারণে অতিষ্ঠ বন্দর নগরী

ওমর ফারুক
২২ মার্চ ২০২৪ ১৯:৩৭

চট্টগ্রাম শহরে যারা থাকে তারা মানুষ বনের পশুপাখি না। আমরা আদিম অধিবাসীদের মতো জঙ্গলে বাস করি না। আমরা সুন্দর একটা সমাজে থাকি। পরিপূর্ণ একটা দেশে অবস্থান করি। কখন ঘুম ভাঙবে আপনাদের? কখন চোখ পড়বে বায়ুর মতো বাড়ছে মশার আনাগোনা। আপনাদের আশেপাশে কী মশা নেই? মনে হচ্ছে নগরে আমরা থাকি না, থাকে মশা। মশার কাছ থেকে সামান্য বরাদ্দ নিয়ে আমরা রয়েছি। এতো অজস্র মশা কী আঁখিতে আসে না আপনাদের? চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঘুম ভাঙা দরকার। দয়া করুন আমাদের উপর। এমন মশার আরতে আমরা বসবাস করতে পারছি না। মাত্রারিক্ত মশার কারণে আমরা কোনো কাজ করতে পারছি না।

বিজ্ঞাপন

না পারছি অফিস সামলাতে। না পারছি নামাজ পড়তে। পড়াশোনা করতে পারছে না ছাত্র-ছাত্রীরা। রাস্তার পাশে একটু বসে বা দাঁড়িয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। সীমাহীন মশা। দোকানে বসতে পারছি না। বাসায় থাকতে পারছি না। স্কুল কলেজে পড়তে পারছি না। সেহরির সময় ঠিকঠাক সেরহি খাইতে পারছি না। ইফতার করতে পারছি না। মশা গালে মুখে ঢুকে যাচ্ছে। এমন মশার সমুদ্রে বসবাস করতে হিমশিম খাচ্ছি। বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে হাজার বছরের শহর চট্টগ্রাম। এই যেন হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালা ইঁদুর ও মেয়রের গল্পের ন্যায়। এতো সুন্দর শহরে মাত্র একটা কীট মশায় আমাদের নাজেহাল অবস্থা করছে। আপনারা চোখ খুলুন।

বিজ্ঞাপন

কাজী নজরুল ইসলামের “অভিযান” জীবনানন্দ দাশের “এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে” ও জসীমউদ্দিনের “আমার বাড়ি” কবিতা গুলো ভুল প্রমাণিত হচ্ছে বাংলার। কেন এমন হচ্ছে? এতো সুন্দর বাংলার বন্দর নগরীর চট্টগ্রাম অতিষ্ঠ এখন মশার কারণে। নিদ্রা থেকে জেগে উঠুন। দয়া করে আমাদের দিকে থাকান। একেতো মানুষ বহু কষ্টে আছে বাজারের মারাত্মক অবস্থা নিয়ে। তার মধ্যে শান্তিতে ঘুমাইতে পারছে না ডালভাত খেয়ে। সারাদিন গাধার মতো পরিশ্রম করে শান্তিতে এক মুঠো খাইতে না পারলে মানুষ কী করবে? শান্তিতে সুশৃঙ্খলভাবে থাকতে না পরলে মানুষ কী গলায় ফাঁস নিবে? নাকী রশি নিয়ে ফ্যানে ঝুলবে? মশার উপদ্রুত বৃদ্ধি হয়েছে সহস্র গুণ। এমন কুয়াশার মতো মশার জঙ্গলে আমরা মরতে চাই না। আমাদের প্রতি একটু রহম করুন।

জটিল কঠিন রোগ সৃষ্টি হচ্ছে মশার কারণে। হাসপাতালে জায়গা নেই। অনবরত বাড়ছে রোগী। মানুষ রমজানে অন্তত শান্তিতে থাকতে চাই। উৎফুল্ল ও প্রফুল্ল হৃদয়ে বাস করতে চাই প্রাচীণ এই শহরে। সূর্য সেনের চট্টগ্রামকে রক্ষা করুণ। দেশের বাণিজ্যিক রাজধানীকে বাঁচান। দেশের বৃহত্তর বন্দর নগরীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করুন। মশা নিধনে কাজ করুন। ঠিক যেমনটা করেছিলেন করোনা মহামারিতে। ময়লা আবর্জনার স্থান পরিস্কার করুন। খাল ভরাট না করে খনন করুন। আশেপাশে যা দৈত্যকার দালান উঠছে সেগুলোর দিকে নজর দিন। আপনারা আমাদের অভিভাবক। আপনারা চোখ থেকে চশমা হাঁটান। হয় আমরা থাকবো নয় মশা থাকবে।

এইতো ২০২৩ এর ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী দেশে সবচেয়ে রেকর্ড পরিমাণ ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। দেশে সর্বপ্রথম ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছিল ১৯৬০ সালে। ২০০০ সালের জুন মাসে ডেঙ্গু সর্বপ্রথম মহামারী আকারে দেখা দিয়েছিল দেশে। ২০০০ সালে প্রায় ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে মৃত্যু হয় প্রায় ৯৩ জন। কিন্তু সেই সংখ্যা কখনোই ২০২৩ সালের মতো এতো হিংস্র ভয়াল হয়নি। ২০২৩ সালের আগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিলো করোনার আগের বছর ২০১৯ সালে। ঐ বছর সারাদেশে মোট ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। কিন্তু ২০২৩ সালে শেষ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৪ জন ডেঙ্গু রোগী ছিল। যার মাঝে মৃত্যু হয়েছে ৬১৮ জনের। সামান্য মশার কারণে আমরা মরতে চাই না। সুনজর দিন নগরে।

লেখক: শিক্ষার্থী

সারাবাংলা/এজেডএস

ওমর ফারুক মশার কারণে অতিষ্ঠ বন্দর নগরী

বিজ্ঞাপন

না ফেরার দেশে অঞ্জনা
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৫৪

এই তাসকিনকে সমীহ করবেন যে কেউ
৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৪৭

আরো

সম্পর্কিত খবর