Wednesday 08 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভোক্তা অধিকার ও প্রতিকার লাভের উপায়

ইমরান ইমন
১৫ মার্চ ২০২৪ ১৮:০৪

অর্থের বিনিময়ে মানসম্পন্ন, নিরাপদ ও ভেজালমুক্ত পণ্য ও সেবা পাওয়া প্রত্যেক ভোক্তার অধিকার। ভোক্তা অধিকার বর্তমান সময়ের আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভোক্তা হলো কোনো ব্যক্তি যিনি তার ব্যক্তিগত পছন্দ বা প্রয়োজনে পণ্যসামগ্রী বা সেবা ক্রয় করেন এবং তা নিঃশেষ করেন। অর্থাৎ, যে সকল ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টি কোনও বিক্রেতা থেকে পণ্য বা সেবা ক্রয় করেন এবং সেই পণ্য বা সেবার উপযোগ নিঃশেষ করেন তাকে ভোক্তা বলা হয়।

বিজ্ঞাপন

একটি দেশে নাগরিকদের সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য রাষ্ট্র নাগরিকদের কিছু অধিকার নিশ্চিত করে থাকে- যেগুলোকে বলা হয় নাগরিক অধিকার। আর এ নাগরিক অধিকারসমূহের মধ্যে ভোক্তা অধিকার অন্যতম‌। ১৫ মার্চ বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস। ১৯৮৩ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে এ দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। আমাদের দেশে এবছর এ দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- ‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ি, ভোক্তার স্বার্থে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করি।’

বিজ্ঞাপন

জীবনের নিরাপত্তার জন্য একজন ভোক্তার অধিকার রয়েছে তার প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবাটি যথাযথ, সঠিকভাবে, সঠিক মাপে এবং সঠিক মানে পাওয়ার। পণ্য বা সেবার নির্ধারিত মূল্যের বিনিময়ে সে পণ্য বা সেবা পাওয়া ভোক্তার অধিকার। তাই পণ্যের উপাদান, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, বিক্রয়মূল্য, পণ্যের মান, পণ্যের কার্যকারিতা এসব সম্পর্কে জানার অধিকার একজন ভোক্তার রয়েছে। আর স্বাভাবিকভাবে এসব প্রশ্নের জবাব দিতে একজন বিক্রেতা বাধ্য। জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত ভোক্তা অধিকার ৮টি। এগুলো হলো- এক. মৌলিক চাহিদা পূরণের অধিকার, দুই. তথ্য পাওয়ার অধিকার, তিন. নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার অধিকার, চার. পছন্দের অধিকার, পাঁচ. জানার অধিকার, ছয়. অভিযোগ করা ও প্রতিকার পাওয়ার অধিকার, সাত. ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে শিক্ষা লাভের অধিকার, আট. সুস্থ পরিবেশের অধিকার।

তাছাড়া কোনো পণ্য বা সেবা ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ পাওয়াটাও ভোক্তার অধিকার। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ জীবনের জন্য কী পরিমাণ ক্ষতিকর তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বলতে পারেন। এসব মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বা ওষুধ গ্রহণের ফলে অনেককেই অকাল মৃত্যুবরণ করতে হয়। ওজনে কারচুপি, ওজনযন্ত্রে কারচুপি, পরিমাপে বা পরিমাপক যন্ত্রে কারচুপির দৃশ্য আমরা প্রায়ই হাট-বাজারে দেখে থাকি। পণ্যের গায়ে পণ্যের উপাদান, বিক্রয়মূল্য, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ, পণ্যের কার্যকারিতা ইত্যাদি না লিখে পণ্য উৎপাদকরা ভোক্তাকে ঠকাচ্ছে প্রতিনিয়ত যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশে পাঁচ কোটির অধিক লোক খাদ্য বিষক্রিয়ায় ভুগছে। রাজধানী ঢাকার ৬০ শতাংশ সবজিতেই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিশানো থাকে। যা আমাদের জীবনের জন্য হুমকিস্বরূপ।

পণ্য বা সেবা ক্রয় করে প্রতারিত হওয়ার হাত থেকে ভোক্তাদের সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে প্রণয়ন করে বহুল প্রতীক্ষিত ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯’। এ আইন প্রণয়নের ফলে কোনো ভোক্তা পণ্য বা সেবা ক্রয়ে পণ্যের ওজন, পরিমাণ, বিক্রয়মূল্য, উপাদান, পণ্যের মান, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, পণ্যের কার্যকারিতাসহ কোনো বিষয়ে প্রতারিত হলে তার প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটা সত্য যে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষই ভোক্তা অধিকার সম্পর্কিত যে ভোক্তাবান্দব গুরুত্বপূর্ণ একটি আইন দেশে রয়েছে সে সম্পর্কে জানেন না। ফলে ভোক্তারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে‌ন।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অনলাইন কেনাকাটা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন আর লোভনীয় অফার দেখে ভোক্তারা পণ্য কিনে নানাভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন-বিশেষ করে চাহিদা অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত পণ্য সরবরাহ না করা এবং করলেও নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করার ঘটনা এখন প্রতিনিয়তই ঘটে চলছে।

সালমান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র। ফেসবুকের নিউজফিড স্ক্রলিং করতে করতে তার চোখের সামনে হঠাৎ ভেসে উঠল একটি ই-কমার্স সাইটের শার্টের বিজ্ঞাপন। সাইটির নাম ‘ইউআর ফ্যাশন’। সেখানে বেশ পছন্দসই শার্টের ছড়াছড়ি। সে ওই সাইটে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করল এবং কালো স্টেপের একটি শার্ট অর্ডার করল। শার্টটির মূল্য ১১০০ টাকা। তাদের শর্তমতে টাকাও বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করল। তিনদিন পর তার কুরিয়ার ঠিকানায় ওই পণ্যটি আসল। মনে বেশ উল্লাস নিয়ে করোনা ঝুঁকি মাথায় নিয়ে সালমান তার পছন্দের পণ্যটি আনতে গেল ফেনীর কুরিয়ার সার্ভিস এসএ পরিবহনে।

অর্ডারকৃত শার্টটি হাতে পেয়ে সে বেশ আনন্দিত। কিন্তু প্যাকেট খুলেই মাথায় হাত! যে রঙের শার্টটি সে অর্ডার করেছিল সেটি নেই। তা ছাড়া অত্যন্ত নিম্নমানের কাপড়। ব্যাপারটি কুরিয়ার সার্ভিসে কর্মরত ব্যক্তিকে বলা হলে তিনি জানালেন- তাদের কাজ পণ্য পৌঁছে দেয়া। পণ্য আসল না নকল সেটার দায়ভার তাদের না। এরপর সালমান যে প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্যটি কিনেছিল সেই প্রতিষ্ঠানের মুঠোফোনে কল দিল। প্রথমে তার নম্বর থেকে কল রিসিভ করেনি। পরে অন্য একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে তাদের বিষয়টা বলা হলে তারা বলে- পণ্য পরিবর্তনও করে দেবে না, টাকাও ফেরত দেবে না। দীর্ঘক্ষণ কথা বলেও বিষয়টির কোনো সমাধান হয়নি। উল্টো কথার মাঝে ‘ইউআর ফ্যাশনের’ লোকজন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে কল কেটে দেয়।

একদিনে একই সময়ে এমন আরেক ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম। তিনিও ফেসবুকের একটা পেইজে বিজ্ঞাপন দেখে একটি ই-কমার্স সাইট থেকে অর্ডার করেছিলেন ‘আইফোন-এক্স’। দুই দিনের মধ্যে পণ্য হাতে পাওয়ার কথা থাকলেও বারবার ফোন করে অবশেষে সাত দিনের মাথায় পণ্য হাতে পেলেন সাইফুল ইসলাম। টাকা আগেই বিকাশের মাধ্যমে পরিশোধ করে দিয়েছেন। কুরিয়ারে এসে প্যাকেট খুলে জনাব সাইফুল সেখানেই অজ্ঞান হয়ে গেলেন। প্যাকেট খুলে দেখলেন আইফোন-এক্সের পরিবর্তে নোকিয়া-১১০০ মডেলের সেকেন্ড হ্যান্ডসেট। কোথায় আইফোন-এক্স আর কোথায় নোকিয়া-১১০০! অজ্ঞান হওয়ারই কথা। কিছুক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরে এলে যে সাইট থেকে আইফোন অর্ডার করেছিল তাদের নম্বরে কল দিলে দেখা যায় তাদের সে নম্বর বন্ধ।

পণ্য কিনে প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ অনুসারে অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ২০০৯ সালে প্রণীত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের মোট ৮২টি ধারা রয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি ধারার উপধারাও রয়েছে। এখানে আমি ভোক্তা অধিকার আইনের উল্লেখযোগ্য কিছু ধারা তুলে ধরছি। ২৮ ধারা অনুযায়ী, প্রতারিত ভোক্তা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সহায়তা গ্রহণ করতে পারবেন। ২৯ ধারা অনুযায়ী, কোনো পণ্য মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হলে, মহাপরিচালকের পরামর্শক্রমে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, সমগ্র দেশে বা কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় এইরূপ পণ্যের উৎ‍পাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, বিতরণ, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার বা প্রজ্ঞাপনে নির্ধারিত শর্তাধীন ঐ সকল কার্যক্রম পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নির্দেশ জারী করতে পারবে। ৩৭ ধারা অনুযায়ী, পণ্যের মোড়ক না থাকলে বা মোড়কে পণ্যের তথ্য না থাকলে বিক্রেতা অনধিক ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

৩৮ ধারা অনুযায়ী, পণ্যের দাম সহজে দৃশ্যমান কোনো স্থানে না রাখলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। ৪০ ধারা অনুযায়ী, ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, সেবা বা ওষুধ বিক্রি করলে বিক্রেতা অনধিক ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

৪১ ধারা অনুযায়ী, ভেজাল পণ্য বা ওষুধ বিক্রি করলে বিক্রেতা অনধিক ৩ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ৪২ ধারা অনুযায়ী, খাদ্যপণ্যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো নিষিদ্ধ দ্রব্য মিশিয়ে বিক্রি করলে বিক্রেতা অনধিক ৩ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

৪৩ ধারায় উল্লেখ আছে, জীবন বা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন পণ্য অবৈধ উপায়ে বিক্রি করলে বিক্রেতা অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ৪৪ ধারা অনুযায়ী, পণ্যের মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করলে অনধিক ১ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আলোচিত প্রত্যেকটি অপরাধের জন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে এবং জেল-জরিমানা করাও হচ্ছে। কিন্তু অপরাধের তুলনায় যে জেল-জরিমানা করা হয় তা অতি নগণ্য। আবার এটাও বাস্তব যে, অনেক খুচরা ব্যবসায়ী জানেও না যে, পণ্যের গায়ে পণ্যের উপাদান, বিক্রয় মূল্য, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ, পণ্যের কার্যকারিতা, পণ্যের মান ইত্যাদি লেখা না থাকা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

পণ্য বা সেবা কিনে প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে অভিযোগ দায়ের করা অত্যন্ত সহজ। গুগোল প্লে-স্টোরে সংরক্ষিত ‘ভোক্তা অধিকার ও অভিযোগ কেন্দ্র’ অ্যাপসের মাধ্যমে খুব সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে অভিযোগ দায়ের করা যায়। তাছাড়া ০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮ ও ০৩১-৭৪১২১২ নম্বরে‌ ফোন‌ দিয়েও অভিযোগ দায়ের করা যাবে। এরপর তদন্ত শেষে অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হলে যে পরিমাণ আর্থিক জরিমানা করা হবে তার ২৫ শতাংশ অভিযোগকারী ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দেওয়া হবে। তবে শর্ত হচ্ছে অভিযোগটি পণ্য বা সেবা ক্রয়ের ৩০ দিনের মধ্যে দায়ের করতে হবে।

পণ্য কিনে প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু পরম দুঃখের বিষয় হলো- দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন বলে যে একটা গুরুত্বপূর্ণ আইন রয়েছে সেটার কথা দেশের অধিকাংশ মানুষই জানেন না। কিন্তু এর পেছনে কারণ কী? প্রধান কারণ হলো- এ আইনের প্রচার-প্রচারণার অভাব। তাই দেশের জনসংখ্যার বৃহৎ একটা অংশ এ আইন সম্পর্কে জানেন না।

তাই জনস্বার্থে এ আইনের প্রচার-প্রচারণা বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। জনগণকে এ আইন সম্পর্কে অবহিত করতে হবে, পণ্য কেনাকাটায় সচেতন করতে হবে। সর্বোপরি, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভেজালমুক্ত পণ্যের বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

সারাবাংলা/এজেডএস

ইমরান ইমন ভোক্তা অধিকার ও প্রতিকার লাভের উপায়

বিজ্ঞাপন

৭ বছর পর মা-ছেলের সাক্ষাৎ
৮ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৮

আরো

সম্পর্কিত খবর