আসুন আগুনে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়াই
৫ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৩৩
আমাদের কোনো অবস্থা নেই। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একটি সংবাদে এভাবেই সাক্ষাৎকার দিচ্ছেলেন রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়বাহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্থ এক ব্যবসায়ী। শুধু এবার নয়, বারং বার আগুনের কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বঙ্গবাজারের দোকান ব্যাবসায়ীরা। তবে এ বারের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ। কারণ টানা সাড়ে ৬ ঘন্টার বেশি সময় ধরে পুড়েছে বঙ্গবাজার। লেলিহান শিখায় দাউ দাউ করে জ্বলা এ আগুন মিডিয়ার কল্যাণে রাজধানীবাসীর সাথে দেখেছে সারাদেশ।
বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও এনেক্সকো টাওয়ারের পরিচালক জহিরুল ইসলাম দাবি করেছেন, ছয়টি মার্কেটের পাঁচ থেকে ছয় হাজার দোকান পুড়ে গেছে। দোকান মালিকসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিগস্ত হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে অগ্নিকাণ্ডে হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে এটির পরিমাণ আরো বেশি কবে দাবি অনেক ব্যাবসায়ীর।
একবার চিন্তা করেন তাহলে কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। কেবল এক ব্যবসায়ীই বলছেন আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ১ কোটি টাকার পাঞ্জাবী-পায়জামা বিক্রির জন্য এনেছিলেন। কিন্তু আগুনে পুড়ে কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই।
এ ব্যবসায়ীর মত এখানকার সব ব্যববসায়ীই ঈদ উপলক্ষে পোশাক জাতীয় মালামাল রির্জাভ করে রেখেছিলেন। কারণ সারাদেশে পণ্য সরবাহ করার জন্য এটিই ছিল সেরা সময়। কিন্তু ঈদের আগে এ সেরা সময়েই সবার স্বপ্ন কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব শেষ হয়ে গেলো।
ঈদ ছাড়া অন্য যে কোন কোন সময় হলে হয়তো এ ক্ষতির পরিমাণ কম হতো। ঈদের আগে ব্যাবসার লাভের মুখ দেখার জন্যই প্রত্যেক ব্যবসায়ীই তার সমস্ত পুঁজি ব্যাবসায় খাটিয়েছিলেন, কেউবা ধার করে, ব্যাংক খেকে ঋণ করে ব্যাবসায় বিনিয়োগ করেছিলেন। কি হবে এখন এ ব্যাবসায়ীদের? এ ব্যাবসায়ীদের সবাই তো পথে বসে গেলেন আগুনের লেলিহান দহনে।
ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, জেলা প্রশাসনকে তার মন্ত্রণালয় থেকে তিনি নির্দেশনা দিয়েছেন। হতাহতদের এখনই ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আহতদের চিকিৎসার জন্য বিশেষ টিম গঠন করা করা হয়েছে।
প্রাথমিক এ কাজটি যেন সুষ্ঠভাবে প্রয়োগ করা হয়, তা সকলেরই চাওয়া। কিন্তু পরবর্তীতে এ ব্যাবসায়ীদের পুর্নবাসনে যদি উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তাহলে ভিক্ষার থালা হাতে এদের ঘুরতে হবে। এমন কোন পরিস্থিতি হউক, তা হয়তো আমরা কেউই দেখতে চাই না।
এর আগে আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে করোনা পরিস্থিতিতে পাশে দাঁড়িয়েছি। সিলেটের বন্যার সময় এদেশের মানুষ পাশে দাড়িঁয়েছি। এটাই সত্য দেশের দূর্যোগ আর ক্রান্তিলগ্নে এ দেশের মানুষের, সরকারের এগিয়ে আসার রেকর্ড রয়েছে। আগ্নিকান্ডও একটি দূর্যোগ। এ দূর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে আমাদের দাঁড়াতে হবে, তাদের পরিবারকে রক্ষা করতে হবে। সাহায্যের হাত নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী, বিত্তবান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সকলে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।
লেখক: কৃষিবিদ ও পরিবেশকর্মী
সারাবাংলা/এজেডএস