উকুন ভাইরাস ও বেল রাজার গল্প
২ মে ২০২০ ১৪:৫৫ | আপডেট: ২ মে ২০২০ ১৪:৫৮
ইদানীং পরিচিত, আধা পরিচিত, কাছের বন্ধু, দূরের বন্ধুসহ অনেককেই দেখছি মাথা ন্যাড়া করে ফেসবুকে ছবি দিতে। এদের মধ্যে একজনকে দেখলাম ছবির শিরোনামে লিখেছে –‘বউয়ের হাতে বানানো বেল’। আরেকজন জুমসভা থেকে স্ক্রিনশট নিয়ে তার উপরে লিখেছে- ‘বেলদের ডিজিটাল আড্ডা’ অর্থাৎ ঐ ছবিতে থাকা পাঁচ বন্ধুর সবাই ছিল ন্যাড়ামাথা।
এই করোনাকালে এত এত বেল দেখে এক বেল রাজা ও তার রাজ্যে মহামারি হয়ে আসা উকুন ভাইরাসের গল্প মনে পড়ল। গল্পটা এইরকম- চৈতন্যপুর রাজ্যের রাজা হর্ষগুপ্ত তাঁর রাজসভার পণ্ডিত যদুলাল চন্দ্রকে খুব পছন্দ করতেন। পণ্ডিত যদুলালের ছেলে প্রিয়লাল জ্ঞানবিজ্ঞানের চর্চায় পিতা যদুলালকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল। সেই সুবাদে রাজা হর্ষগুপ্ত পন্ডিতপুত্র প্রিয়লাল চন্দ্রকে রাজবাড়ির শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলেন। রাজবাড়ির অন্য ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি রাজকন্যা ইন্দুবালা দেবীকে পড়ানোর দায়িত্ব পড়ে প্রিয়লাল চন্দ্রের উপর। কিন্তু রাজকন্যা অন্যদের সাথে পড়তেন না; তাকে পড়ানোর জন্য আলাদা কক্ষে, আলাদা নিয়মে, আলাদা করে সময় দিতে হতো প্রিয়লালকে।
প্রিয়লালের পাণ্ডিত্য, দেহের সুদর্শন কাঠামো, সর্বোপরি রাজকন্যার প্রতি তার সমীহ দেখে স্বভাবতই ষোড়শী কন্যার মনে প্রেমাবেগ জেগে উঠে।
এভাবে পড়ালেখার চতুর্থ বছরে পা রাখতেই হঠাৎ রাজা হর্ষগুপ্ত রাজকন্যার বিবাহের আয়োজন করতে উঠে পড়ে লাগলেন। শ্যামদেশের রাজা অচিনগুপ্তের পুত্র সুরেশ গুপ্তের সাথে ইন্দুবালার বিবাহ হবে তেমনই কথা চলছিল। অবশেষে একদিন এই আলোচনা রাজসভায় উঠল। সেনাপতি মানিকচন্দ্র ছাড়া রাজসভার সবাই সেই বিয়েতে সমর্থন দিলেন।
সেনাপতি মানিকচন্দ্রের অনীহার কারণ হলো, তিনি চান তার কুপুত্র সুবল চন্দ্র ইন্দুবালাকে বিয়ে করে রাজ্যের পরবর্তী রাজা হিসেবে আসীন হোক। ঐদিকে ঠিক সেই সময়েই ইন্দুবালা ও প্রিয়লালের প্রেমের সম্পর্ক চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে উঠে। একজন আরেকজনকে চোখের আড়াল করতে পারে না, এমন অবস্থা তাদের।
বিয়ে নিয়ে আলোচনার গুঞ্জন ইন্দুবালার কানেও যায়। আবেগী ইন্দুবালা রানীকে সব কথা জানিয়ে দেয়। বেশ ইতিবাচকভাবেই রানী রাজার কানে খবরটা পৌঁছে দেয়। শুভচিন্তা মাথায় এনে রাজা দেখলেন আপন মেয়ের সুখের জন্য এ প্রস্তাবের চেয়ে ভালো প্রস্তাব আর হতে পারেনা। ওইদিকে শ্যামদেশের রাজাকেও তার দরকার, তিনি দুবার সৈন্য দিয়ে তাকে যুদ্ধে সহায়তা করেছেন। এহেন আকর্ষণ-আকর্ষণ দ্বন্দ্ব কাটাবার জন্য রাজা সেনাপতি মানিক চন্দ্রের সাথে বিষয়টি আলাপ করেন।
সেনাপতি শ্যামদেশের রাজপুত্রের ব্যাপারে তো আগেই না বলেছিলেন, এবার পন্ডিতপুত্রের কথা শুনেই হিংসায় জ্বলে উঠলেন এবং প্রিয়লাল সম্পর্কে বিভিন্ন মিথ্যা কুৎসার কথা বলে এ বিয়ে হতে পারে না বলে রাজার মনকে বিষিয়ে দিলেন। শুধু তাই নয়, তার দলের অন্যান্য রাজকর্মচারীদের সাথে মিলে ফন্দি করে প্রিয়লালকে রাজবাড়ির চোর বানিয়ে ন্যাড়ামাথা করে মাথায় চুনকালি মেখে রাজ্য ছাড়া করালেন। ইন্দুবালাতো নয়ই; এমন সজ্জন ও সচ্চরিত্রবান ছেলের উপর এই নির্মম অবিচার রাজ্যের কেউ মেনে নিতে পারলো না।
এরপর সেনাপতি তার কুপুত্র সুবল চন্দ্রের সাথে রাজকন্যার বিয়ে পাকাপাকি করার জন্য ষড়যন্ত্রের নীলনকশা এঁকে ফেলেন। বিয়ের প্রস্তাব রাজার কাছে তোলার জন্য রাজ্যের প্রধান হেকিম নারায়ণ চন্দ্রকে দায়িত্ব দেয়া হয়। হেকিম তার সাথে আরও তিনজন রাজকর্মচারীকে নিয়ে বেশ চাটুকারিতার সহিত রাজার কাছে সুবল চন্দ্রের স্বাস্থ্য, শৌর্য, সততা প্রভৃতি গুনের বানানো বর্ণনা দিয়ে বিয়ের তারিখ ঠিক করে সেনাপতির কাছে এলেন।
পরদিন সকাল বেলা সেনাপতি তার সিন্ডিকেটের দলবল নিয়ে বিশাল মিষ্টির হাঁড়ি সাজিয়ে রাজপ্রাসাদে গেলেন। এরপর রাজা তার আসনে বসার পর সেনাপতি রাজার উদ্দেশ্যে বললেন, মহারাজ কিছুদিন আগে শ্যামদেশের রাজপুত্রের সাথে কুস্তিতে আমার পুত্রধন জয়ী হয়ে এসেছে। সেই সুবাদে আজকের রাজসভায় আমি সবার মিষ্টিমুখ করাতে চাই। রাজা বিশ্বাসপ্রবণ, তাই বিশ্বাস করলেন ও হাসলেন। এরপর একটু অবাক হয়ে আবেশ নিয়ে বললেন- ও আচ্ছা তাই নাকি! ছেলের তো তবে বহু গুন।
সেনাপতির কুপুত্রের সাথে রাজকন্যা ইন্দুবালার বিয়ের খবর পুরো রাজ্যে চলে যায়। জেলেপাড়া, কাঁসারীপাড়া ও শাঁখারীপাড়ার কুমারী মেয়েরা যাদের কোলে সেনাপতির কুপুত্রের ঔরসজাত সন্তান; যারা ঐ পিতৃহীন সন্তানদের কারণে সমাজচ্যুত; তারা এ খবর শুনে ঐ চরিত্রহীন সুবলকে অভিশাপ দিতে থাকে। দরিদ্র কৃষক প্রজা যারা সেনাপতির অত্যাচারে জর্জরিত তারা রাজা ও সেনাপতি উভয়কে অভিশাপ দেয়।
বেচারা প্রিয়লাল কোথায় আছে তা কেউ জানেনা। ইন্দুবালা ও প্রিয়লালের অন্তর্জ্বালায় রাজ্যের আকাশ বাতাস গম্ভীর ও ভারাক্রান্ত হয়ে উঠে। রাজ্যের রাস্তাঘাট, ফুলবাগিচা, দীঘি-নালা, পশুপাখি, যারা প্রিয়লাল ও ইন্দুবালার নিষ্পাপ ও পবিত্র প্রেমের সাক্ষী তারা ওই রাজ্যের সব মানুষকে অভিশাপ দিতে থাকে। পাখি, হরিণসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী যাদের বুকে তীর ছোঁড়ার জন্য সেনাপতি নিয়মিত সৈন্য পাঠাত তারা এবার অভিশাপের তীর ছুঁড়তে থাকে। এ বিয়ে রাজপরিবারেও শুধু রাজা ছাড়া কেউ মেনে নিতে পারছে না। রাজ্যজুড়ে সবার মন-মেজাজের এমন নেতিবাচক পরিবেশে বিয়ের তারিখের ঠিক এক মাস আগে একদিন হঠাৎ করে রাজসভার প্রধান হেকিম যিনি ইন্দুবালা ও প্রিয়লালের বিয়ের ভাঙ্গনে ইন্ধন যুগিয়েছিলেন, তিনি কালাজ্বরে আক্রান্ত হলেন। সহকারী হেকিমগন কোনভাবেই কিছু করতে পারলেন না, তিনদিনের মাথায় হেকিম মারা গেলেন। এরপর হেকিমের ছোট দুই পুত্র আক্রান্ত হলো, তারাও তিনদিনের মাথায় মারা গেল।
সেই রাতেই খবর এলো সহকারী হেকিমদের একজন কালাজ্বরে আক্রান্ত। রাজা চিন্তায় পড়ে গেলেন। ঠিক পরেরদিনই খবর এলো হেকিমপাড়ার প্রতি ঘরের সব পুরুষ এবং স্বয়ং সেনাপতি মানিক চন্দ্রও কালাজ্বরে আক্রান্ত। এভাবে দশদিনের মাথায় হেকিমপাড়ার সব পুরুষ, সেনাপতি মানিকচন্দ্র, তার পুত্র সুবল চন্দ্র ও পনেরজন সৈন্যসহ পঞ্চাশজন রাজকর্মচারী মৃত্যুবরণ করলেন।
মহামারির আশঙ্কায় রাজা অতিসত্বর পার্শ্ববর্তী রাজ্য শান্তিপুরের রাজার কাছে সহযোগিতা চেয়ে দূত পাঠালেন। শান্তিপুরের রাজা তার সহকারী দুই হেকিমকে রাজ্যের কাজে রেখে প্রধান হেকিমকে তিনজন অনুচরসহ রাজা হর্ষগুপ্তের কাছে পাঠালেন। শান্তিপুরের হেকিম এসে দেখলেন গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে গেছে কালাজ্বর। তিনি কয়েকজন রোগী দেখলেন। সব রোগীর মাথা এবং কপালে লালচে দাগ, কিছুটা ফুলে আছে। হেকিম বুঝে গেলেন ঘটনা। তিনি হাতের মধ্যে কাপড় বেঁধে এক রোগীর মাথা থেকে একটা উকুন নিয়ে সেই উকুনটা রাজবাড়ির বাগান থেকে একটা বানর এনে ওটার মাথায় রাখলেন। এরপর বানরটা বেঁধে রেখে একদিন পর ওটার কাছে গেলেন। দেখা গেল বানরটাও কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়েছে এবং পরদিন বানরটা মারা গেল।
হেকিম সাহেব সিদ্ধান্ত দিলেন অতিসত্বর রাজ্যের সব পুরুষের মাথা ন্যাড়া করে ফেলতে হবে। রাজা বললেন, কি বলছেন হেকিম সাহেব! আমার মাথায় তো উকুন নেই? হেকিম সাহেব তখন সমীহের সুরে বললেন- রাজা মহাশয়, এ উকুনের বিষ কোন কারণে নারীদের শরীরে কার্যকর নয়, যত পুরুষ মারা গেছে তাদের সবার মাথায় কোন না কোন নারীর মাথা থেকে উকুন গিয়েছিল, আপনার মাথায়ও রানীমার মাথা থেকে যে কোনো দিন চলে যাবে।
রাজা চিন্তিত হয়ে ভাবলেন- তাইতো, রানী গত কয়দিন পুরাণ প্রাসাদে আছে বলেই হয়তো আমি বেঁচে গেছি। এরপর রাজা হেকিমকে বললেন, ঠিক আছে হেকিম সাহেব, আপনি যা বলবেন তা-ই হবে। কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজ নাপিতকে ডাকা হলো। রাজ নাপিত এসে বেশ আয়োজন করে রাজার মাথা ন্যাড়া করে দিল।
বিকেলে রাজা শান্তিপুরের হেকিমের সাথে রাজবাড়ির বাইরের পুকুরঘাটে বসলেন। হেকিমের কাছে রাজা এমন মহামারির কারণ জানতে চাইলেন। হেকিম বললেন, শাস্ত্রমতে কোন রাজ্যে পাপাচার বেড়ে গেলে উপরওয়ালা মানুষকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এমনটা করেন। হেকিমের কথায় রাজার টনক নড়ল। তিনি বুঝলেন, চালবাজ সেনাপতিকে আমি বহু প্রশ্রয় দিয়েছিলাম, বেচারা প্রিয়লালকে অপমানিত করে মাথা ন্যাড়া করে সে রাজ্যছাড়া করেছিল। আর তাই বুঝি বিধাতার এই বিচার।
রাজা জরুরী ভিত্তিতে প্রিয়লালকে খুঁজে বের করার জন্য বিভিন্ন রাজ্যে লোক পাঠালেন। দুইদিন পর তাদের একটা দল প্রিয়লালকে নিয়ে রাজপ্রাসাদে পৌঁছল। এরপর রাজমহল থেকে হুকুম জারি হলো যে, আগামী একদিনের মধ্যে রাজ্যের সব পুরুষের মাথা ন্যাড়া করে ফেলতে হবে। যেই কথা সেই কাজ।
ঘোষণার পরদিন রাজা সব অঞ্চলে সব পুরুষের মাথা ন্যাড়া করা হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য হাতির পিঠে উঠে রাজ্য ঘুরে ঘুরে দেখতে মুকুটবিহীন রাজা বের হলেন। রাজা দেখলেন রাস্তায় শত শত মানুষ এসেছে রাজার ন্যাড়া মাথা দেখতে যাদের সবার মাথাও ন্যাড়া। রাজাকে দেখে ছোট ছোট ছেলের দল বিভিন্ন রাস্তার গাছপালার আড়াল থেকে বেল রাজা, বেল রাজা শ্লোগান দিতে লাগল।
রাজা রাগ না হয়ে অনুচরদের পাঠালেন ঐসব শিশুদেরকে হাওয়াই মিঠাই কিনে দেয়ার জন্য। এরপর রাজা হাতির পীঠ থেকে নেমে উপস্থিত সব পুরুষদের বললেন, দেখুন আমি আজ মুকুট ছাড়া, আপনাদের মাথা দেখতে যেমন, আমারটাও তেমন, আমাদের মধ্যে এখন থেকে আর কোন পার্থক্য নাই। এই বলে রাজা হাঁটতে থাকলেন, রাজার পিছনে রাজ্যের সব বেল মাথা হাটতে লাগল। এরপর থেকে বেল রাজ্যের রাজা হর্ষ গুপ্তের নাম হয়ে গেল বেল রাজা।
এরপর নির্দিষ্ট দিনে বেশ ঘটা করে প্রিয়লাল ও রাজকন্যার বিয়ে হলো। রাজ্যের সকল প্রজাদেরকে বিয়েতে দাওয়াত দেওয়া হলো। ইন্দুবালা ও প্রিয়লালের মনের শান্তির প্রভাব পুরো রাজ্যে গিয়ে পড়ল। রাজ্যের সকল ক্ষেত খামারে ফসলের বাম্পার ফলন হলো। শাঁখারীপাড়া, কাঁসারীপাড়া, ঘোষপাড়াসহ রাজ্যের সব অঞ্চলের নারী পুরুষের মুখে হাসি ফুটল। পুরাতন সেনাপতি, তার পুত্রসহ সকল অত্যাচারী রাজকর্মচারীরা মারা যাওয়ায় রাজা প্রজাদের মধ্যে ভেদাভেদ দূর হলো।
একদিন রাজা তার কন্যা ইন্দুবালা ও নতুন সেনাপতি ও জামাতা প্রিয়লালকে প্রাসাদে ডাকলেন। রাজা সমীহের সুরে প্রিয়লালকে জিজ্ঞেস করলেন, প্রিয়লাল, আমি সত্যিই অবাক হই, তুমি এত ভালো কি করে হও! প্রিয়লাল মাথা নিচু করে রইল। ইন্দুবালা জবাব দিল, ‘বাবা, এর কারণ হলো তার অর্জিত শিক্ষা। শিক্ষাই তাকে এমন নিরহংকারী, উদার, ধৈর্যশীল ও সৎ করে তুলেছে।’
এরপর রাজা বললেন, আমি চাই, আমার রাজ্যের প্রত্যেকটা মানুষ প্রিয়লালের মতো হোক। রাজকন্যা জবাব দিল, তা করার একটা উপায় আছে; আমি আমার স্বামীর কাছ থেকে যে শিক্ষা পেয়েছি তা রাজ্যের সব মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই। আগ্রহী হয়ে রাজা বললেন, তবে তা-ই হোক; তোমাদের একাজে যত খরচ হবে আমি তার সব ব্যবস্থা করব।
রাজকন্যা ইন্দুবালা ঘোড়ায় চড়ে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে ঘুরে আবালবৃদ্ধবনিতা সব মানুষের জন্য বিদ্যালয়ের জায়গা ঠিক করলেন। তাকে এ কাজে সহায়তা করার জন্য ২০ জন রাজকর্মচারীকে রাজা রাজকার্য থেকে অব্যাহতি দিলেন।
সপ্তাহে একদিন করে ঐসব বিদ্যালয়ে শেখানো হয়। শিক্ষক হলেন ইন্দুবালাসহ রাজপরিবারের দশজন যাদের সবাই প্রিয়লালের শিষ্য। রাজ্যজুড়ে সবাই ভালো মানুষ হওয়ার প্রতিযোগিতায় উঠে পড়ে লাগল। রাজ্যের আকাশ-বাতাস, নদীনালা, বনবনানী সর্বত্র শান্তির মহড়া চলতে শুরু করল। পাখিরা গাইতে শুরু করল নতুন সুরে, ফুলেরা গন্ধ বিলাতে লাগল সবার তরে। মহামারির কলঙ্ক মুছে ফেলার জন্য রাজা রাজ্যের নাম রাখলেন চৈতন্যপুরের বদলে নিশ্চিন্তপুর।
বর্তমানে আমাদের পৃথিবী নামক রাজ্যে চলতে থাকা করোনাভাইরাস মহামারী যদি আমাদের সবার চৈতন্যে এমন দাগ কাটতে পারত তবে হয়তো আমরাও পেতাম তেমন একটা ভয়হীন, ভেদাভেদহীন, নিশ্চিন্ত পৃথিবী।
লেখক: প্রধান নির্বাহী, ফুল-পাখি-চাঁদ-নদী রিসার্চ এন্ড এডভোকেসি ফোরাম।