Monday 21 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজ যমুনায় বৈঠক
আলটিমেটাম নয়, সফট্ রিমাইন্ডার দেবে বিএনপি

আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:১৯ | আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:০৩

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ বা রোডম্যাপ চেয়ে কোনো ‘আলটিমেটাম’ বা ‘চরমপত্র’ দেবে না বিএনপি। তবে, ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার’ শেষে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে তিনি বদ্ধপরিকর কি না, তা জানতে চাইবেন বিএনপি নেতারা।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ এবং ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের জন্য যমুনায় যাবেন।

এছাড়া, এই মুহূর্তে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তিনিও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে যোগ দেবেন।

দলীয় সূত্রমতে, গত ১৪ মার্চ বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘‘রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরে, আর যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ নেয়, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে’’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, সেটিকেই নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ধরে নিয়ে এগোচ্ছিল বিএনপি। অধিকন্তু, ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’-এর ব্যাপারে একমত হয়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের দৃশ্যমান প্রস্তুতিতে আশাবাদী হয়ে উঠেছিল বিএনপি।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু, হঠাৎ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের দেওয়া ‘‘ড. প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা পাঁচ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই’’ বক্তব্যের পর রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে গুঞ্জন ওঠে, যেকোনো পন্থায় ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার এবং তাদের শুভাকাঙ্ক্ষীরা। এরকম পরিস্থিতিতে নড়ে-চড়ে বসে বিএনপি। গত ৭ এপ্রিল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার।

দলের পক্ষ থেকে সাক্ষাতের সুযোগ চাইলে ১৬ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করে প্রধান উপদেষ্টার দফতর থেকে বিএনপিকে জানিয়ে দেওয়া হয়। ইত্যবসরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে বলেন, “জনগণ আমাদের পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় দেখতে চায়।” এতে সন্দেহ আরও ঘণীভূত হয়।

জানা গেছে, এই সন্দেহ-সংশয় দূর করতে আজকের বৈঠকে বিএনপির তরফ থেকে প্রধান উদেষ্টার কাছে জানতে চাওয়া হবে, সংক্ষিপ্ত সংস্কার শেষে ডিসেম্বরে নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেটির ওপর তিনি অটুট আছেন কি না? যদি সেটির ওপর তিনি অটুট থাকেন তাহলে সরকারের উপদেষ্টারা যেন ‘বিভ্রান্তিকর’ বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন।

দলীয় সূত্রমতে, বিএনপি তরফ থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে আরও কিছু প্রস্তাব, প্রস্তাবনা, অভিমত ও পরামর্শ দেওয়া হবে। তবে, কোনো অবস্থাতেই নির্বাচন ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টাকে এই মুহূর্তে আলটিমেটাম বা চরমপত্র দেবে না বিএনপি। জাস্ট তিনি তার বক্তব্য বা প্রতিশ্রুতির জায়গায় ঠিক আছেন কি না, সে বিষয়টি জানতে চাইবেন বিএনপি নেতারা।

জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা শুধু জানতে চাইব- শর্ট রি-ফর্ম (সংক্ষিপ্ত সংস্কার) শেষে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই জায়গায় তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) ঠিক আছেন কি না?’

‘শেখ হাসিনা যদি স্বাভাবিকভাবে বিদায় নিতেন, তাহলে তো ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হত। এখন তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) দুই বছর লাগবে কেন? এখন যে পরিস্থিতি আছে, তাতে আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করে ফেলা সম্ভব। তারপরও আমরা কোনো আলটিমেটাম দেব না, জাস্ট জানতে চাইব, তিনি তার জায়গায় ঠিক আছেন কি না? আমরা কি এটকুও জানতে চাইতে পারি না?’— বলেন বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

আলটিমেটাম বিএনপি বৈঠক যমুনা সফট্ রিমাইন্ডার