নিয়মবহির্ভূতভাবে কর্মকর্তাদের ঋণ দেওয়ার ঘটনায় ইউজিসির তদন্ত কমিটি গঠন
১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০০:১৭
ঢাকা: নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই কর্মকর্তাদের বাড়ি নির্মাণে প্রায় দেড় কোটি টাকা অতিরিক্ত ঋণ দেওয়ার ঘটনা তদন্তে ‘ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং’ কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) ইউজিসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) এ কমিটি গঠন করেছে ইউজিসি। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিশনের অর্থ, হিসাব ও বাজেট বিভাগের সদস্য প্রফেসর মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। আর কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন, কমিশনের অর্থ, হিসাব ও বাজেট বিভাগের পরিচালক মো. রেজাউল করিম হাওলাদার এবং প্রশাসন বিভাগের উপ-সচিব মো. আসাদুজ্জামান। কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ইউজিসির অডিট বিভাগের সহকারী পরিচালক শরীফুল ইসলাম।
তথ্যমতে, ইউজিসির করপোরেট সাধারণ গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালা অনুযায়ী পঞ্চম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব কর্মচারীদের জন্য ৭৫ লাখ টাকা, নবম গ্রেড হতে ষষ্ঠ গ্রেড ৬৫ লাখ, ১৩তম গ্রেড হতে ১০ম গ্রেড ৫৫ লাখ, ১৭তম গ্রেড হতে ১৪ম গ্রেড ৪০ লাখ এবং ২০তম গ্রেড হতে ১৮তম গ্রেড পর্যন্ত ৩৫ লাখ টাকা সর্বোচ্চ সিলিং নির্ধারণ করা হয়। এ পরিমাণ অর্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি জীবনের শেষ দিকে পেয়ে থাকেন।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একজন কর্মচারী ঋণ দেওয়ার সময় তার চাকরির বয়স অনুযায়ী প্রাপ্য পেনশন ও আনুতোষিকের চেয়ে বেশি ঋণ দেওয়ার সুযোগ নেই। ১২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি।
ইউজিসির যারা ঋণ নিয়েছেন— কমিশনের সাবেক সহকারী সচিব (৯ম গ্রেড) মোহা. মামুনুর রশিদ খান। গৃহ নির্মাণের জন্য সবচেয়ে বেশি অতিরিক্ত নিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের সাবেক যুগ্ম সচিব জাফর আহম্মদ জাহাঙ্গীর। বর্তমানে কমিশনের জেনারেল সার্ভিসেস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। ইউজিসির সাবেক সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আকরাম আলী খান। অফিস সহায়ক মির্জা হামিদুল ইসলাম, মো. আমিনুল ইসলাম, মো. আবুল হোসেন, মো. নুরুল ইসলাম জীবন।
১৬তম গ্রেডের কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুস সালাম, ১৮তম গ্রেডের মেশিন অপারেটর মো. শহিদুল ইসলাম, একই গ্রেডের বার্তা বাহক মাসুদ রানা, অফিস সহায়ক মো. আবুল বাশার এবং নিরাপত্তা প্রহরী মো. নুর নবী।
প্রসঙ্গত, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ নীতিমালায় ঋণের সিকিউরিটি হিসেবে জমি বা ফ্ল্যাট সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে বন্ধক হিসেবে রাখতে হয়। তবে কমিশনের ত্রুটিপূর্ণ করপোরেট সাধারণ গৃহনির্মাণ ঋণের বিপরীতে সিকিউরিটি হিসেবে শুধু কর্মচারীর পেনশন আনুতোষিক বন্দক হিসেবে রাখা হয়। উল্লেখিত সবাই তাদের গ্রেডের থেকে পাওয়া ঋণের থেকে অতিরিক্ত অনেক অর্থ ঋণ নিয়েছেন। যা আইন বহির্ভূত।
সারাবাংলা/এনএল/এইচআই