ইউক্রেনে রুশ হামলায় নিহত ৩১, আহত ৮৪
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৫০ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ২০:১২
ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুমি শহরে রাশিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ৮৪ জন আহত হয়েছে বলে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রোববার (১৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শহরের কেন্দ্রে রাশিয়ার দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। সেখানে খ্রিস্টান পবিত্র সপ্তাহের প্রথম দিন ‘পাম সানডে’ উদযাপন উপলক্ষে মানুষ জড়ো হয়েছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, নিহতদের মধ্যে দুইজন শিশু রয়েছে। তিনি এই হামলাকে ভয়াবহ বলে আখ্যা দেন এবং বলেন, অন্তত ৮৪ জন আহত হয়েছেন।
জেলেনস্কি আরও বলেন, ‘বিশ্বের উচিত নয় নীরব বা উদাসীন থাকা। রাশিয়ার এই হামলা শুধু নিন্দাই নয়, চরম চাপের দাবি রাখে যাতে যুদ্ধ বন্ধ হয় এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’
রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
সরকারি চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, সুমি শহরের কেন্দ্রে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে মৃতদেহ, উঠছে ধোঁয়া।
সুমি শহরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আর্তেম কোবজার বলেন, ‘এই পবিত্র পাম সানডের দিনে আমাদের সম্প্রদায় এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ তীব্র হওয়ার পর এই হামলা হয়েছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ সেন্ট পিটার্সবার্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠক করেন। পরে ট্রাম্প বলেন, আলোচনার অগ্রগতি সম্ভবত ভালো হচ্ছে, তবে একটা পর্যায়ে এসে হয় পদক্ষেপ নিতে হয়, নয়তো চুপ থাকতে হয়।
রোববারের হামলার পর জেলেনস্কি বলেন, ‘আলোচনা কখনোই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমা থামাতে পারেনি। রাশিয়ার প্রতি যে মনোভাব থাকা উচিত, তা হচ্ছে—একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে।’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আজ পরিষ্কার যে, রাশিয়া একাই এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চায়। মানবজীবন, আন্তর্জাতিক আইন এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রতি তাদের যে অবজ্ঞা, তা আবারও প্রমাণিত হলো।’
এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউক্রেন গত ২৪ ঘণ্টায় রাশিয়ার জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর দুটি হামলা চালিয়েছে। তারা দাবি করেছে, ডোনেৎস্ক অঞ্চলের ইয়েলিজাভেটিভকা গ্রামটি দখলে নিয়েছে রুশ বাহিনী।
ইউক্রেনীয় সরকার এখনো এই দাবির বিষয়ে মন্তব্য করেনি, তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রাশিয়া ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়েছে।
ইউক্রেন সতর্ক করেছে, রাশিয়া একটি নতুন বসন্তকালীন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যাতে করে তারা আলোচনায় নিজেদের অবস্থান মজবুত করতে পারে। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে।
সারাবাংলা/এনজে