চৈত্রসংক্রান্তিতে রমনায় ছায়ানটের বর্ষবরণের মহড়া
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:০৫ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:১৩
ঢাকা: আজ চৈত্র সংক্রান্তি, রাত পেরোলেই বাংলা নতুন বছর ১৪৩২ শুরু। নতুন বাংলাবর্ষকে বরণ করে নিতে প্রতিবারের মতো এবারও রমনার বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনে থাকছে বর্ষবরণ। তারই চূড়ান্ত মহড়া হয়েছে রোববার (১৩ এপ্রিল) চৈত্রসংক্রান্তিতে।
সরেজমিন দেখা যায়, নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানাতে রমনার ঐতিহাসিক বটমূলে প্রস্তুত করা হয়েছে মূলমঞ্চ। নতুন বছরের শুরুতে ছায়ানটের শিল্পীরা বর্ষবরণের প্রভাতি অনুষ্ঠানে গাইবেন। সোমবার (১৪ এপ্রিল) ভোরে রমনার বটমূলে বরাবরের মতো ছায়ানটের আয়োজনে বৈশাখকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। বিকেল ৩টা থেকে তারই প্রস্তুতি শুরু হয়।
প্রায় দেড়শতাধিক শিল্পী মঞ্চে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মহড়া করেছেন। মূলত শব্দ ব্যবস্থাপনা, কারিগরি ব্যবস্থা এবং মঞ্চের সঙ্গে শিল্পীদের অভ্যস্ত করাই ছিল আজকের এই মহড়ার মূল উদ্দেশ্য। তৈরি করা হয়েছে একসঙ্গে সব শিল্পীর বসার মতো করে মঞ্চ। বসানো হয়েছে পাটাতন। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নির্দিষ্ট সীমানা।
ছায়ানটের এবারের বার্তা, ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়।’
ছায়ানট জানিয়েছে, ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে এবারের অনুষ্ঠান শুরু হবে সুপ্রিয়া দাসের ভৈরবী রাগালাপ দিয়ে। এছাড়া পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন আলো, প্রকৃতি এবং মানুষকে ভালোবাসবার গান, দেশপ্রেম-মানবপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। সব মিলিয়ে বাঙালি সমাজকে নিয়ে আলোর পথে মুক্তির পথযাত্রী হওয়ার আহ্বান। আর এবারের অনুষ্ঠানসজ্জায় ৯টি সম্মেলক ও ১২টি একক গান এবং ৩টি পাঠ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ সবমিলিয়ে দেড়শতাধিক শিল্পী এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন।
এবার পুরুষ শিল্পীদের পোশাক হবে মেরুন রঙের পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা। নারীদের মেরুন পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়ি। এই মেরুন রঙের সঙ্গেই মানানসই রং করা হবে মঞ্চের। প্রতিবছর মঞ্চের আকৃতি একই রকম থাকে, শুধু শিল্পীদের পোশাকের রঙের সঙ্গে মানিয়ে মঞ্চে রঙের পরিবর্তন করা হয়। গতবারের রং ছিল হালকা সবুজ।
অন্যদিকে বর্ষবরণের আয়োজন ঘিরে পুরো রমনা পার্ক এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বসানো হয়েছে ডিএমপি, র্যাবের কন্ট্রোল রুম।
উল্লেখ্য, ষাটের দশকে রমনার বটমূলে যে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিল ছায়ানট, এখন তা বাঙালির নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ।
১৯৬৭ সালে শুরুর পর, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বছর ছাড়া প্রতিটি পহেলা বৈশাখেই অনুষ্ঠান হয়েছে; নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়েছে সুরের মূর্ছনা আর কথামালায়। এবারই প্রথম সনজীদা খাতুনকে ছাড়া বর্ষবরণ করছে ছায়ানট।
সারাবাংলা/এনএল/এনজে