Monday 21 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মার্চ ফর গাজা
অন্যায়ের বিরুদ্ধে বাঙালি ‘এক’ ও ‘অভিন্ন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১২ এপ্রিল ২০২৫ ২১:৫৪ | আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০৯

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লোকে লোকারণ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মঞ্চ। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক চালানো গণহত্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার বাংলাদেশের আপামর মানুষ। এরই ধারবাহিকতায় রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শনিবার (১২ এপ্রিল) পালন করা হয় ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি।

এদিন ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশেপাশের এলাকায় লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতে যেন জনসমুদ্রে রুপ নেয়। আর এরই মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের ন্যায় আবারো প্রমাণ হলো অন্যায়ের বিরুদ্ধে ভেদাভেদ ভুলে বাঙালি ‘এক’ ও ‘অভিন্ন’।

বিজ্ঞাপন

দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তেনের গাজায় গণহত্যা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। এ হত্যাযজ্ঞে বাংলাদেশের মানুষ সব সময় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। কিন্তু এবার যুদ্ধ বিরতি চুক্তি শেষেই বর্বর নারকীয় গণহত্যা চালায় ইসরায়েল। এ থেকে বাদ যায়নি শিশুরাও। তবে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অত্যাধুনিক গ্রেনেড পুতে রাখে। সেটির বিস্ফোরণ এতোটাই ভয়ানক ছিল যে বেশকিছু ফিলিস্তিনি প্রায় কয়েকশত ফুট ওপরে উঠে যায়। আর এই ভিডিও ভাইরাল হলে ক্ষোভে ফেটে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব।

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লোকে লোকারণ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ছবি: সারাবাংলা

ইসরায়েলের বর্বর হত্যাযজ্ঞে দেশটির সকল পণ্য বয়কট ঘোষণা করে বাংলাদেশের মানুষ। এর ধারবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি করার অভিযোগে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানে ভাঙচুর চালায় সাধারণ মানুষ। অন্যায়ভাবে ফিলিস্তিনের মানুষের ওপর ইসরায়েল হত্যাযজ্ঞে এরপর ঘোষণা আসে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি পালনের। আর এই কর্মসূচিতে সারা ফেলে বাংলাদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে নারী, শিশুসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। আজ বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই লোকজনে ভরে যেতে থাকে পুরো এলাকা। যা দুপুরে রূপ নেয় জনসমুদ্রে। এ সময় মানুষ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নানান স্লোগান দিতে থাকে। এ ছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ছবিতে জুতো নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। সেইসঙ্গে কাফনের কাপরে রঙ ছিটিয়ে প্রতীকী মরদেহ নিয়ে সড়ক প্রদক্ষিণ করা হয়েছে। পুরো এলাকা ছেয়ে গেছে ফিলিস্তিনের পতাকায়। প্রায় কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতি এতোটাই ব্যাপক ছিল যেন ঢাকার বুকে এক খণ্ড ফিলিস্তিন।

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে লোকে লোকারণ্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। ছবি: সারাবাংলা

‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির শুরুতে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জনপ্রিয় ইসলামিক বক্তা ও গবেষক মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন, ‘আজকের এই জনসমুদ্র প্রমাণ করে আমাদের একেকজনের হৃদয়ে বাস করে একেকটা ফিলিস্তিন। আজ বুঝেছি বাংলাদেশের মানুষ ফিলিস্তিন ও আল আকসার পক্ষে।’ এ সময় তিনি ‘আমার ভাই শহিদ কেন? জাতিসংঘ, জবাব চাই’, ‘ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন-জিন্দাবাদ, জিন্দাবাদ’, ‘আল কুদুস-জিন্দাবাদ’- স্লোগান দেন।

এদিকে, ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি শেষে মানুষ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে বিশাল মিছিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে ফার্মগেট ও বিজয় সরণি পর্যন্ত মিছিল উল্লেখযোগ্য। ফিলিস্তিনে চালানো গণহত্যার প্রতিবাদে বিশাল মিছিল এবং শিশু ও নারী-পুরুষের ঘর থেকে বের হয়ে আসাকে যেন স্বরণ করিয়ে দিল ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকে। এটিই আবারো মনে করিয়ে দিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকল ভেদাভেদ ভুলে প্রতিবাদ জানাতে বাঙালি ‘এক’ ও ‘অভিন্ন’। সেই সময় ভেদাভেদ ভুলে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে এসে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানালে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনের। এমনকি, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা পালিয়ে যান। সেই চিত্রই যেন ফিরে এসেছে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে।

সারাবাংলা/এমএইচ/এইচআই

ইসরায়েলি বাহিনী গণহত্যা গাজায় গণহত্যা বাঙালি ‘এক’ ও ‘অভিন্ন’ মার্চ ফর গাজা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর