যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে চীনের ৮৪% পালটা শুল্কারোপ
১০ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৫০ | আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২৩
চীনের ওপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শতকরা হারে শুল্কারোপের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৮৪ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্কারোপ করেছে বেইজিং। এর মাধ্যমে বিশ্বের দুই শীর্ষ অর্থনৈতিক শক্তির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ নতুন মাত্রা পেয়েছে।
বুধবার (৯ এপ্রিল) চীন জানায়, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা খাত-সম্পর্কিত ১৮টি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর আগে ট্রাম্প চীনের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন এবং হুমকি দেন যে, চীন যদি পালটা শুল্ক না তুলে নেয়, তবে আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর ফলে ২০২৫ সালে চীনা পণ্যের ওপর মার্কিন শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে।
চীনও জবাবে তাদের শুল্ক ৫০ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে, যা পূর্বে ঘোষিত ৩৪ শতাংশের সঙ্গে যোগ হয়ে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হওয়ার কথা।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির পদক্ষেপ ভুলের ওপর আরেকটি ভুল। এটি চীনের ন্যায্য অধিকার লঙ্ঘন করছে এবং বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার ভিত্তিকে দুর্বল করছে।’
ট্রাম্প প্রশাসন পারস্পরিক শুল্কের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকানো হচ্ছে বলে দাবি করলেও, চীনকেই সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে।
এদিকে, চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফররত নাগরিকদের জন্য সতর্কবার্তা জারি করেছে এবং চীনা শিক্ষার্থীদের ওহাইও রাজ্যে পড়াশোনার বিষয়ে সতর্ক করেছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন-
চীন বাদে সব দেশের ওপর পালটা শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করলেন ট্রাম্প
ট্রাম্পের শুল্ক বিরতির ঘোষণায় ঊর্ধ্বমুখী এশিয়ার শেয়ারবাজার
চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত প্রসঙ্গে প্রকাশিত এক শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা যুক্তরাষ্ট্রের কাঠামোগত সমস্যার ফল এবং আন্তর্জাতিক শ্রমবণ্টনের বাস্তবতা। মার্কিন আদমশুমারি তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের পণ্যবাণিজ্যে উদ্বৃত্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯৫ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে।
২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে করা ‘ফেজ ওয়ান’ চুক্তির মাধ্যমে চীন অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সেই লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। এরপরও চীন দাবি করেছে, তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে এবং বরং যুক্তরাষ্ট্রই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করেছে।
চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি বাণিজ্যিক চাপ আরও বাড়ায়, চীনের পক্ষেও শক্ত জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি এবং সক্ষমতা উভয়ই রয়েছে।’
সারাবাংলা/এনজে